বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের বার্ষিকী পালন: তদন্ত না হওয়ায় জনগণের ক্ষোভ প্রকাশ
(last modified Thu, 05 Aug 2021 12:00:27 GMT )
আগস্ট ০৫, ২০২১ ১৮:০০ Asia/Dhaka
  • বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের বার্ষিকী পালন: তদন্ত না হওয়ায় জনগণের ক্ষোভ প্রকাশ

লেবাননের বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের প্রথম বার্ষিকী পালিত হল। গতকাল ৪ আগস্ট ছিল এ বার্ষিকী। ঘটনার পর গত এক বছরে লেবাননে ক্ষমতা লাভের জন্য বিভিন্ন দল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব, নিজেদের ইচ্ছা মতো সরকার গঠনের জন্য দেশটির রাজনীতি ও সরকার গঠনে বিদেশীদের হস্তক্ষেপ প্রভৃতি সংকট চলে আসছে। জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক দুর্দশার দিকে কারো কোনো নজর নেই।

লেবানন দেশটি এতোই সুন্দর যে এ দেশটিকে বলা হয় মধ্যপ্রাচ্যের বধু। এ  নামকরণ থেকেই বোঝা যায় দেশটি খুবই সমৃদ্ধ ও সৌন্দর্যে ভরপুর। গত বছর বিস্ফোরণের আগেও দেশটি ছিল সৌন্দর্যের আধার। কিন্তু বিস্ফোরণের পর সেই সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি ইতিহাসের পাতা থেকে যেন মুছে গেছে। পরিকল্পিতভাবে আগে থেকেই বন্দর এলাকায় খাদ্য গুদামের পাশেই বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক মজুদ রাখা হয়েছিল। ষড়যন্ত্রকারীরা উপযুক্ত সময়ে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এতে ২০০ ব্যক্তি নিহত ও প্রায় ছয় হাজার মানুষ আহত হয়।

বিস্ফোরণের কিছুদিন পর প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন এবং আজো ওই ঘটনার তদন্তের কোনো কূলকিনারা হয়নি। এ কারণে জনমনে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা দিয়াবের পদত্যাগের ঘটনা থেকে বোঝা যায়, একদিকে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো ও নেতারা অন্যদিকে লেবাননের প্রতিরোধকামী সংগঠনের বিরোধী বিদেশী হস্তক্ষেপকারীরা বিরাজমান পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করেছে। গত এক বছরে সরকার গঠিত না হওয়া থেকেই এটা আরো বেশি প্রমাণিত হয়েছে।

ধ্বংসপ্রাপ্ত বৈরুত বন্দর

প্রধানমন্ত্রী দিয়াব পদত্যাগ করার পর সিদ্ধান্ত হয় নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।

কিন্তু এক  মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি মন্ত্রিসভা গঠনে ব্যর্থ হন এবং এ ব্যর্থতার কারণে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। শেষ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। এর পর লেবাননের মুক্তিদাতা দাবিদার সাদ হারিরি গত বছর অক্টোবরে চতুর্থবারের মতো মন্ত্রিসভা গঠনের দায়িত্ব নেন। কিন্তু ৯মে তিনি দাবি করেন প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সঙ্গে তার মতবিরোধ এবং মন্ত্রিসভা গঠনে প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপের কারণে তিনি নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে ব্যর্থ হয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনিও পদত্যাগ করেন।

এরপর গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে নাজিব মিকাতি গত ১৬ বছরে দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রিসভা গঠনের দায়িত্ব পেলেন। বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও মন্ত্রিসভা গঠনের কোনো আলামত এখনো পাওয়া যায়নি। বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের পর গত এক বছর ধরে দেশটির জনগণ কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত না করা এবং অর্থনৈতিক সংকটের অবসান না ঘটায় ক্ষিপ্ত জনগণ রাস্তায় বিক্ষোভে নেমে পড়েছে। পুলিশের সাথেও ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

সবশেষে বলা যায়, খুবই দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে গতকাল বৈরুত বন্দরে  বিস্ফোরণের প্রথম বার্ষিকী পালিত হলেও সরকারের কোনো কর্মকর্তা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৫

ট্যাগ