বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে কিছু কথা
(last modified Sun, 13 Feb 2022 03:39:05 GMT )
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২ ০৯:৩৯ Asia/Dhaka
  • বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে কিছু কথা

বিশ্ব বেতার দিবস একটি আন্তর্জাতিক দিবস যা প্রতিবছর ১৩ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। এই দিবসের লক্ষ্য জনসাধারণের মাঝে ও সংবাদমাধ্যমে বেতারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, বেতারের মাধ্যমে তথ্য সুলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং বেতার সম্প্রচারকদের মধ্যবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পারস্পরিক মতামত ও তথ্য বিনিময় জোরদার করা।

২০১১ সালে স্পেনের আকাদেমিয়া এস্পানিওলা দে রাদিও'র একটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদ সাধারণ সম্মেলনে বিশ্ব বেতার দিবস ঘোষণার ব্যাপারে সুপারিশ করেন। ২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে গৃহীত।

বেতার এমন একটি গণমাধ্যম পৃথিবীতে যার ব্যাপ্তি অন্য সব গণমাধ্যম অপেক্ষা বেশি। এটি একাধারে যোগাযোগের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার এবং সাশ্রয়ী মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত। দূরবর্তী জনসম্প্রদায় ও ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের কাছে পৌঁছতে বেতারের কোনো বিকল্প নেই। একই সাথে এটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্তর নির্বিশেষে  জনবিতর্কে মানুষের অংশগ্রহণে একটি মঞ্চ। অধিকন্তু জরুরি অবস্থাকালীন যোগাযোগ ও বিপর্যয়কালীন ত্রাণ কর্মের একটি শক্তিশালী ও নির্দিষ্ট ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সহধর্মিতা হবার প্রবণতা বেড়ে গেছে, তাই বেতার সেবাগুলোও প্রযুক্তির নতুন নতুন রূপের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মুঠোফোন ও ট্যাবলেটে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে।

২০২২-এর বিশ্ব বেতার দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘সবাই মিলে বেতার শুনি, বেতারেই আস্থা রাখি।’

জনসাধারণকে সত্য ও মঙ্গলের পথে পরিচালিত করাই সাংবাদিকদের কর্তব্য। ক্ষুদ্র স্বার্থের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত মানুষকে যে সাংবাদিক বিভ্রান্ত করেন, তিনি সমাজের শত্রু। বেতার সাংবাদিককে যথার্থ জনসেবক, সত্যনিষ্ঠ, নির্ভীক, নিরপেক্ষ এবং দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে।

বেতারকে জনসেবার ব্রতে ব্রতী হতে হবে। সর্ববিধ দলীয় স্বার্থ ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে বৃহত্তর সমাজকল্যাণের আদর্শকে তুলে ধরতে হবে। জাতিকে ন্যায় ও সত্যের পথে পরিচালিত করতে হবে। জনসাধারণের মধ্যে নানা বিষয়ে শিক্ষার আলোক বিকীর্ণ করে আদর্শ নাগরিক গড়ে তুলতে হবে। সর্বোপরি সর্ববিধ শুভকর্মের হোমাগ্নি শিখা প্রজ্বলিত করে জাগ্রত জনমত গঠন করে রাষ্ট্রকে জনকল্যাণমূলক কর্মে প্রণোদিত করতে হবে।

বেতার অভিজ্ঞ হিতৈষী ব্যক্তির মতো আমাদের পথ নির্দেশ করতে পারে। আমাদের সুখে-দুঃখে হতাশায় একমাত্র বেতারই সান্ত্বনার প্রলেপ দিতে পারে। বেতার সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে অভিজ্ঞতাজাত ফসল থেকে আমরা অনেক হিত কথা জানতে পারি। সুখে-দুঃখে, মিলনে-বিরহে, আনন্দে-নিরানন্দে বেতার আমাদের সাথী, আমাদের বন্ধু।

রেডিও তেহরান, আকাশবাণী এবং বাংলাদেশ বেতারের জনসংখ্যা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেল প্রচারিত অনুষ্ঠানমালা বিশ্লেষণ করলে সভ্যতার ধারাবাহিকতায়, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সংরক্ষণে, সমাজ ও ব্যক্তির মুক্তি মাধ্যমে, সত্য অনুসন্ধানে, জগৎ ও জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে বেতার হিতৈষী ব্যক্তির মতো, বন্ধুর মতো আমাদের চিরকালের সাথী।

 

ধন্যবাদান্তে

বিধান চন্দ্র সান্যাল

ঢাকা কলোনী, বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর

পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৩