আফগানিস্তানে ফের সন্ত্রাসী হামলা: দায়েশ জঙ্গিরা আসলে কি চায়?
আফগানিস্তানে তৎপর উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস জঙ্গিরা গত শুক্রবার রাজধানী কাবুলে বোমা বিস্ফোরণের দায়িত্ব স্বীকার করেছে। ওই বিস্ফোরণে আট ব্যক্তি নিহত এবং ১৮ আজ আহত হয়েছে।
প্রায় এক বছর হলো তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে দায়েশ বা আইএস জঙ্গিরা কুন্দুয ও বালখসহ দেশটির বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত বহু লোককে হত্যা করেছে। যদিও তালেবান দাবি করেছে তারা দায়েশ সন্ত্রাসীদেরকে ধ্বংস অথবা দুর্বল করে দিতে সক্ষম হয়েছে।
কাবুলে সংঘটিত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাকে দু'দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, আফগানিস্তানে দায়েশ সন্ত্রাসীরা তালেবান সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার এবং নিজেদের শক্তিমত্বা তুলে ধরার জন্য এ ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেছে নিয়েছে যাতে তালেবানকে দুর্বল প্রমাণ করা যায়। আর দ্বিতীয়ত, মহররমের শোকানুষ্ঠান পালন উপলক্ষে তালেবান সরকার ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ অবস্থা কাবুলে সন্ত্রাসী হামলার উদ্দেশ্য হতে পারে শোকানুষ্ঠান পালনে জনগণকে নিরুৎসাহিত করা।
এ ব্যাপারে ইরানের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশ্লেষক আলী ওয়াহিদি বলেছেন, আফগান জনগণ, আফগান তালেবানের বিশ্বাস ও বাইরে থেকে আমদানি করা তালেবানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আফগানিস্তানে উগ্রপন্থীদের যে চিন্তা চেতনা তা পাকিস্তানের আরেক উগ্র হক্কানি গ্রুপের দ্বারা প্রভাবিত যাদের সাথে দায়েশ বা আইএস জঙ্গিদের সম্পর্ক বা সহযোগিতা রয়েছে। যেমনটি আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও পাকিস্তানের হক্কানি গ্রুপ থেকে আফগানিস্তানে উগ্রপন্থা বিস্তারের কথা উল্লেখ করেছেন।
তালেবান ভালো করেই জানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি পেতে চাইলে তাদেরকে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যদিও তালেবান এখনো মেয়েদের স্কুল বন্ধ রেখেছে এবং সরকারি ছুটির তালিকা থেকে ফার্সি নববর্ষ ও আশুরার দিনটিকে বাদ দিয়েছে। আগেও তালেবানরা আশুরার শোকানুষ্ঠান পালনসহ অন্যান্য জাতীয় উৎসব পালনের বিরোধিতা করতো যা কিনা উগ্র হক্কানি গ্রুপ দ্বারা প্রভাবিত। পাকিস্তান ভিত্তিক ওই গ্রুপটি বর্তমানে ভিন্ন কৌশলে ও ভিন্ন নাম ধারণ করে আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসীদের লালনভূমিতে পরিণত করার চেষ্টা করছে।
যাইহোক, কাবুলে বোমা বিস্ফোরণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এমনভাবে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা যাতে তালেবানের সরকার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা করা যায় এবং মহররমও যাতে কেউ পালন করতে না পারে।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।