ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩ ১৮:২৪ Asia/Dhaka

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনা ক্ষমতাসীন দলের পররাষ্ট্র বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান ওয়াং ইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে এবং নতুন মাইলফলক স্পর্ষ করেছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে মস্কো ও বেইজিংয়ের মধ্যে সহযোগিতা এখন বেশি প্রয়োজন বলে তিনি জোর দেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২৪ সালের আগে ২০০ বিলিয়ন ডলারে উপণিত হতে পারে। পুতিন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌথ সহযোগিতার জন্য বেইজিংকে ধন্যবাদ জানান।"

দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক শক্তি হিসাবে রাশিয়া এবং চীন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সহযোগিতা প্রসারিত করতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাবাদী নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়ার পাশাাপাশি তারা নতুন আন্তর্জাতিক ভিত্তি হিসাবে একটি বহুপাক্ষিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে চায়।

মস্কো এবং বেইজিং বিশ্বাস করে যে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এবং বিশ্বব্যবস্থার বাস্তবতা একটি বহুমুখী ব্যবস্থার পক্ষে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে এক কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য জোর দিয়ে আসছে । আমেরিকা বিশ্ব পুলিশি একতরফাবাদের মাধ্যমে তার লক্ষ্য ও  উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। 

এ বিষয়ে জোর দিতে গিয়ে বেইজিং এবং মস্কোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যতটা সম্ভব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান এবং উদীয়মান বিশ্বশক্তিগুলো যেমন রাশিয়া, চীন, ভারত, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ব্রিক্সের মাধ্যমে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়াতে চান। রাশিয়া ও চীন এখন অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামরিক ও নিরাপত্তা, অস্ত্র, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং একই সাথে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে দুই দেশের অংশগ্রহণের ফলে পশ্চিমের আধিপত্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। 

আটলান্টিক কাউন্সিলের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সদস্যম্যাথিউ ক্রোয়েনিগ, বলেছেন, মস্কো এবং বেইজিং কৌশলগত বিষয়ে তাদের অবস্থান জোরদার করছে। এর প্রমাণ হল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই দুই দেশের প্রেসিডেন্টের বৈঠক এবং মস্কো ও বেইজিংয়ের যৌথ অবস্থান ব্যাখ্যা করে একটি নজিরবিহীন বিবৃতি জারি করা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন যে এই দুই দেশের বন্ধুত্বের "কোনো সীমানা নেই।" ওই বিবৃতিতে এটি জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে বিশ্ব এখন ব্যাপক পরিবর্তনগুলো প্রত্যক্ষ করছে এবং মানবতা দ্রুত বিকাশ এবং ব্যাপক পরিবর্তনের একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছে যার মধ্যে রয়েছে বহু মেরুকরণ, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির বিশ্বায়ন। 

রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ব্লক সর্বদাই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আসছে। চীন ও রাশিয়ার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তি এবং প্রভাবের ক্রমাগত বৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এতই উদ্বিগ্ন যে বিশ্বব্যাপী চীন ও রাশিয়ার ভীতি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ওয়াশিংটন সব ধরনের প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।#

পার্সটুডে/এমবিএ/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

   

ট্যাগ