ইসলামবিদ্বেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর একটি বড় সমস্যা
ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামবিদ্বেষ জোরদার
পার্সটুডে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার যে দাবি করা হয় তা চরমভাবে লঙ্ঘন করে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চলমান এ প্রক্রিয়ার কারণে মার্কিন সরকারের প্রতি দেশটির তরুণ সমাজ আস্থা হারিয়েছে।
ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি গুলি করে। অঙ্গরাজ্যের বার্লিংটন শহরের কাছে ওই তিন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী গুলিবর্ষণের শিকার হন। হামলার শিকার ২০ বছর বয়সি ওই শিক্ষার্থীরা হলেন হিশাম আওয়ারতানি, কিন্নান আব্দাল হামিদ ও তাহসিন আলী আহমাদ। এরমধ্যে গুলিবর্ষণের ফলে হিশামের কোমর থেকে নীচের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়।
ওই তিন শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনিদের পরিচয় প্রকাশকারী কিফায়া পরিধান করেছিলেন এবং তারা আরবি ভাষাভাষি ছিলেন বলে তারা ইসলামবিদ্বেষী হামলার শিকার হয়েছেন বলে জল্পনা জোরদার হয়।
ভারমন্টের মিডলবেরি কলেজ এই গুলিবর্ষণের ঘটনাকে ‘মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামবিদ্বেষী তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ’ বলে মন্তব্য করে।
হিশাম আওয়ারতানির মা এলিজাবেথ প্রাইস এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি অধিকৃত জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে নিজের তিন সন্তানকে বড় করেছেন। পশ্চিম তীর হচ্ছে এমন একটি স্থান যেখানে ফিলিস্তিনিরা প্রতিনিয়ত ইসরাইলি সেনাদের পাশাপাশি ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারীদের সহিংস হামলার শিকার হন। কিন্তু হিশাম তার শৈশব ও কৈশোরে পশ্চিম তীরে থাকা অবস্থায় ইহুদিবাদীদের হামলার শিকার হয়নি। এলিজাবেথ প্রাইস বলেন, এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে তার ছেলে হামলার শিকার হবে তা তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
তিনি আরো সুস্পষ্ট করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও যে ফিলিস্তিনি হওয়াটা অপরাধ ও তাদের নিরাপত্তার কোনো গ্যারান্টি নেই একথা তিনি ভাবতেই পারেননি।
নিঃসন্দেহে ইসলামবিদ্বেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুসলমানদের জীবনকে মূল্যহীন বলে ভাবা হচ্ছে, আর সেই মুসলমান যদি ফিলিস্তিনি হয় তাহলে তাদের মূল্য তো একেবারেই তুচ্ছ। পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে আমেরিকার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে বলে গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি পাশবিকতায় নিহত ৩৬ হাজার ফিলিস্তিনির কোনো মূল্য মার্কিন সরকারের কাছে নেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানমাত্রই সহিংস হামলার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি। আগেই আমরা বলেছি যে, সেই মুসলমান যদি আরব বা ফিলিস্তিনি হয় তাহলে তাদের ঝুঁকির মাত্রা থাকে অনেক বেশি।
পক্ষান্তরে কিছু মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইসলামের প্রতি সহমর্মিতাকে ইহুদিবিদ্বেষ বলে প্রচার করে আসছে।
বর্তমানে আমেরিকার তরুণ সমাজের মধ্যে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে গাজাবাসীর সমর্থনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিক্ষোভকে ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই বলে দেখা হচ্ছে যার ফলে ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায় করা সম্ভব হবে বলে অনেক মনে করছেন। এই যুবকরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইসলামবিদ্বেষ থেকে মুক্ত করতে হলে ফিলিস্তিনি জনগণকে জুলুম ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।#
পার্সটুডে/এমএমআই/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।