ইউরোপের অপপ্রচার প্রত্যাখান: ইরান রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র দেয় নি বলে স্বীকারোক্তি
(last modified Sat, 09 Nov 2024 08:26:17 GMT )
নভেম্বর ০৯, ২০২৪ ১৪:২৬ Asia/Dhaka
  • জেলেনস্কি
    জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট রাশিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ইরান-বিরোধী অভিযোগকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই মিথ্যা দাবির ভিত্তিতে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

পার্সটুডে জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "ইরান ও রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র স্থানান্তরের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছে, কিন্তু আমাদের তথ্য অনুযায়ী, ইরান রাশিয়াকে এখনো কোনো ক্ষেপণাস্ত্র দেয়নি।"

তিনটি ইউরোপীয় দেশ ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স এর আগে ইরান থেকে রাশিয়ার কাছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ এবং ইউক্রেন যুদ্ধে সেগুলো ব্যবহার হয়েছে বলে দাবি করেছিল। এই মিথ্যা দাবি অনুযায়ী এই তিনটি ইউরোপীয় দেশ ইরানের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রচার চালিয়েছে। এরপর গত ১৪ অক্টোবর লুক্সেমবার্গে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুমোদন দিয়েছেন।

ইইউ বলেছে, তারা ইরানের সাতজন ব্যক্তি এবং সাতটি প্রতিষ্ঠানকে নতুন নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করেছে। ইরান এয়ার, মাহান এয়ার, সাহা এয়ারলাইন এবং দু'টি লজিস্টিক কোম্পানিকে নতুন নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ইরান-রাশিয়া সামরিক সহযোগিতার অজুহাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের বিরুদ্ধে বৈরী নীতি গ্রহণ করেছে। যদিও ইরান-রাশিয়া সামরিক সম্পর্ক কয়েক দশক আগে থেকেই শুরু হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলো ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইহুদিবাদীদের অপরাধের অংশীদার। তারা ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ন্যায়সঙ্গত অবস্থানের কারণে তেহরানের ওপর চাপ দেওয়ার জন্য তেহরান-মস্কো সামরিক সহযোগিতাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে। 

রাশিয়া একটি প্রভাবশালী বড় দেশ।  ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিশ্বের অনেক দেশের সাথে এর বিস্তৃত সম্পর্ক ছিল। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে রাশিয়ার সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যিক লেনদেন ৩৭০ বিলিয়ন ইউরোর বেশি ছিল। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক মিত্র রাশিয়ার সাথে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে এবং প্রসারিত করেছে। এ ক্ষেত্রে তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এমনকি ভারতের নামও উল্লেখ করা যেতে পারে। কিন্তু এসব দেশের কোনোটির বিরুদ্ধেই ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। এ কারণে এটা স্পষ্ট, ইউরোপীয় সরকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানকে চাপ দেওয়ার জন্য অজুহাত দাঁড় করানোর নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ইরান-রাশিয়া সহযোগিতার বিষয়টি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি অজুহাত মাত্র।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি রাশিয়ায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর অভিযোগ এবং এ বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেছেন, ইউরোপীয়দের এই বিষয়ে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।  তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে এই প্রহসন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পার্সটুডে/এসএ/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।