ট্রাম্পের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে তেহরান আর আগ্রহী হবে না: বিশ্লেষক
(last modified Sat, 14 Jun 2025 11:27:16 GMT )
জুন ১৪, ২০২৫ ১৭:২৭ Asia/Dhaka
  • • পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক ইগর মাতভিয়েভ
    • পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক ইগর মাতভিয়েভ

পার্সটুডে - আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক ইগর মাতভিয়েভ বলেছেন: যেহেতু ইরান অনাকাঙ্ক্ষিত ইসরাইলি সামরিক আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, তাই জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের অধীনে আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার তাদের রয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে ভিয়েতনাম এবং আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয়ের যে অভিজ্ঞতা রয়েছে সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর জন্য ইরান তার ক্ষমতা ব্যবহার করতে সক্ষম।

পার্সটুডে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক ইগর মাতভিয়েভ শুক্রবার IRNA-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন: আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আক্রমণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

তিনি আরও বলেন: রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, ইরানের উপর ইসরাইলের আক্রমণ অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজ যা পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে বিপন্ন করবে এবং একটি বড় যুদ্ধের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করতে পারে।

তিনি বলেন: "আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে তেল আবিবের এই পদক্ষেপের পর, তেহরান আর ট্রাম্পের সাথে নিষ্ফল কূটনৈতিক সংলাপ চালিয়ে যেতে আগ্রহী হবে না।"

ইগর মাতভিয়েভ উল্লেখ করেছেন: এই পরিস্থিতি বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের জন্য আরেকটি ধাক্কা এবং তথাকথিত সাউথ ওয়ার্ল্ডে  ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।  

তিনি আরও বলেন: খুব স্বল্পমেয়াদে, এটা মনে করা যেতে পারে যে ইসরাইল একটি সফল আক্রমণ চালিয়েছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তেল আবিব বরং ইরান এবং অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে পাল্টা ব্যবস্থার মুখোমুখি হবে যা কিনা ভিয়েতনাম এবং আফগানিস্তানে আমেরিকার পরাজয়ের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করবে।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন: ইরানের উপর ইসরাইলের আক্রমণ এবং বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা কেবল আন্তর্জাতিক আইনই নয়, নৈতিক নীতিও লঙ্ঘন করে।

তিনি আরও বলেন: এই আক্রমণে, ইরানি বিজ্ঞানীদের একটি দলসহ বেসামরিক নাগরিকরা নিহত হয়েছেন যা ওই দৃষ্টিকোণ থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক ইগর মাতভিয়েভ জোর দিয়ে বলেন: নিঃসন্দেহে, নিরীহ বেসামরিক নাগরিক, নারী ও শিশুদের ওপর ইসরাইলি হত্যাকাণ্ড একটি যুদ্ধাপরাধ।

বিশ্লেষক বলেন: “বিশ্বের বেশিরভাগ অংশের মতো দক্ষিণের অনেক দেশই ইসরাইলি হামলার নিন্দা করবে এবং এরই মধ্যে বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ এবং স্পেনের মতো কিছু ইউরোপীয় দেশ সম্ভবত এই হামলার নিন্দাকারীদের কাতারে যোগ দেবে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুক্রবারের ভাষণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন: “এই দেশগুলোর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা ইসরাইলের সবচেয়ে শক্তিশালী সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”

ইগর মাতভিয়েভ বলেন: “এর অর্থ হল আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এক কণ্ঠে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করতে ব্যর্থ হতে পারে। তবে, ইরানের উপর ইসরাইলি হামলার ঘটনায় আসন্ন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের ফলাফলের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।”

তিনি বলেন: “ব্যক্তিগতভাবে, আমি বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা ইসরাইল ইস্যুতে নীরব থাকার চেষ্টা করবে এবং পশ্চিমা শক্তির প্রভাবে থাকবে।”#

পার্সটুডে/এমআরএইচ/১৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।