ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী: শূন্য সমৃদ্ধকরণের ওপর জোর দেওয়ার অর্থ 'চুক্তিতে আমেরিকার অসম্মতি'
-
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে ১২ দিনের যুদ্ধের সময় যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি আলোচনার মাঝখানে কেন আমেরিকা আমাদের উপর আক্রমণ করল সেই প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, 'আমেরিকাকে অবশ্যই গ্যারান্টি দিতে হবে যে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না।' ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যের একটি অংশে বলেছেন, 'তিনি এবং মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ যুদ্ধের সময় এবং পরে বার্তা বিনিময় করেছিলেন এবং আমি তাদের বলেছিলাম যে ইরানের পারমাণবিক সংকট সমাধানের জন্য একটি "উপযুক্ত" সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।'
আরাকচি জোর দিয়ে বলেন: "যতক্ষণ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণ বন্ধের দাবি করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো চুক্তি করা সম্ভব হবে না। তবে ওয়াশিংটন আলোচনার মাধ্যমে তাদের উদ্বেগ উত্থাপন করতে পারে। আমরা আলোচনা করতে পারি, তারা তাদের যুক্তি উপস্থাপন করতে পারে এবং আমরা আমাদের যুক্তি উপস্থাপন করব।" আলোচনার পথ সংকীর্ণ কিন্তু অসম্ভব নয় বলে জোর দিয়ে তিনি আরো বলেন, 'উইটকফ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে এটি সম্ভব এবং তিনি আলোচনা পুনরায় শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে আমাদের তাদের কাছ থেকে প্রকৃত আস্থা তৈরির ব্যবস্থা প্রয়োজন, যার মধ্যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং পুনরায় আলোচনার সময় ইরানের উপর আক্রমণ করা হবে না এমন গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত।"
আরাকচি উল্লেখ করেছেন যে তার বার্তা জটিল ছিল না। তিনি আরো বলেন, "সাম্প্রতিক হামলাটি দেখিয়েছে যে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কোনো সামরিক সমাধান নেই, তবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান পাওয়া যেতে পারে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র তার শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তার পরমাণু নীতিতে কোনো পরিবর্তন করবে না এবং ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ীর ২০ বছরের পুরনো ফতোয়াকে সম্মান করে যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, এর উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ সবকিছুকেই নিষিদ্ধ করে।"
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে যুদ্ধ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি অবিশ্বাসকে আরও গভীর করেছে। তিনি আরো বলেন, "তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ২০১৫ সালে বারাক ওবামা প্রশাসন এবং অন্যান্য বিশ্বশক্তির সাথে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করেছিলেন। তেহরানের এখনও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে। ভবনগুলো পুনর্নির্মাণ করা যেতে পারে। প্রযুক্তি বিদ্যমান থাকায় মেশিনগুলো প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। আমাদের প্রচুর সংখ্যক বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ আছেন যারা আমাদের স্থাপনাগুলোতে কাজ করতেন। তবে কখন এবং কীভাবে আমরা সমৃদ্ধকরণ পুনরায় শুরু করব তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।"
পার্সটুডে/এমবিএ/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।