তুরস্ককে ন্যাটো থেকে বহিষ্কারের মার্কিন হুমকির রহস্য!
তুর্কি-মার্কিন উত্তেজনা আবারও তীব্র হয়েছে। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর থেকে তুর্কি-মার্কিন সম্পর্কে প্রায়ই উত্তেজনা দেখা গেছে।
তবে ট্রাম্পের মার্কিন সরকারের সঙ্গে এরদোগান সরকারের বিরোধ বাড়তে বাড়তে এখন তা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাশিয়া থেকে বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 'এস-ফোর হান্ড্রেড' কেনার জন্য আঙ্কারার অনমনীয় অবস্থানই এই নজিরবিহীন উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু।
ন্যাটো জোটের সদস্য তুরস্ক রাশিয়ার ওই ক্ষেপণাস্ত্র কিনলে 'এফ-থার্টিফাইভ'সহ ন্যাটো জোটের জঙ্গি-বিমানগুলোর দুর্বলতা রাশিয়ার কাছে স্পষ্ট হয়ে পড়তে পারে বলে ওয়াশিংটন দাবি করছে। এ ছাড়াও রুশ অস্ত্র কেনা শুরু করে তুরস্ক রাশিয়ার অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠবে বলে ট্রাম্প-সরকারের আশঙ্কা!
রাশিয়ার এস-ফোর হান্ড্রেড মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থা প্যাট্রিয়টের দুর্বলতাগুলোও স্পষ্ট করতে পারে বলে মার্কিন সরকার ভয় পাচ্ছে।
তুরস্ক S-400 কিনতে অবিচল হওয়ায় ভীষণ ক্ষিপ্ত মার্কিন কংগ্রেস ও পেন্টাগন। তুর্কি সরকারকে এ বিষয়ে নতজানু করতে মার্কিন সরকার এরিমধ্যে তুরস্কে মার্কিন এফ-৩৫ জঙ্গি বিমান ও এর জন্য জরুরি যন্ত্রাংশ সরবরাহ স্থগিত করেছে।
কিন্তু তুরস্ক ওই কৌশলগত রুশ অস্ত্র কিনতে এখনও দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ। এ অবস্থায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, S-400 কিনলে তুরস্ককে ন্যাটো জোট থেকে বের করে দেয়া হবে। ন্যাটোর শত্রুর কাছ থেকে অস্ত্র কেনা মার্কিন সরকারের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ! এই অপরাধের দায়ে তুরস্কের কাছে প্যাট্রিয়ট ও এফ-৩৫ বিমান দেয়া হবে না বলেও বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
তুরস্কের নেতৃবৃন্দ বলছেন, S-400 নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে দ্বিমুখী আচরণ করছে ওয়াশিংটন। কারণ ন্যাটো জোটের সদস্য বুলগেরিয়া, গ্রিস ও স্লোভেনিয়াসহ এ জোটের আরও কয়েকটি দেশ রাশিয়ার S-300 ব্যবহার করছে! কই তাদের ওপর তো কোনো চাপ বা শাস্তির হুমকি দেয়নি মার্কিন সরকার! তাই তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তুরস্ক S-400 তো কিনবেই এবং এমনকি ভবিষ্যতে রাশিয়ার আরও উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা S-500ও কিনতে পারে।
এ নিয়ে তুর্কি-মার্কিন উত্তেজনা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকছে তা-ই এখন দেখার বিষয়। #
পার্সটুডে/এম এ এইচ/৪