মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গ্রাম ধ্বংস করে গড়ে তোলা হয়েছে সরকারি স্থাপনা
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রামগুলো গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে পুলিশ ব্যারাক ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। মিয়ানমার সরকারের ব্যবস্থাপনায় কয়েক দিন আগে বিদেশি সাংবাদিকদের একটি দলকে উত্তর রাখাইনের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রতিবেদক জোনাথন হেড।
তিনি সেখানে অন্তত চারটি জায়গায় নতুন গড়ে তোলা নিরাপত্তা স্থাপনা দেখেছেন, যেসব জায়গায় এক সময় রোহিঙ্গাদের গ্রাম থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় স্যাটেলাইট ইমেজে।
সাংবাদিকদের ইন দিন গ্রামেও নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার সেই আলোচিত ঘটনাটি এখানেই ঘটেছিল। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী যে অল্প কিছু নৃশংসতার কথা স্বীকার করেছে, তার মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড রয়েছে। ইন দিনের তিন-চতুর্থাংশ ছিল মুসলিম। বাকিরা রাখাইন বৌদ্ধ। আজ সেখানে মুসলমানের চিহ্নও নেই। যেখানে রোহিঙ্গাদের বাস ছিল, সেখানে এখন কোনো গাছও নেই। সে জায়গায় স্থান করে নিয়েছে কাঁটাতারের বেড়া ও বর্ডার গার্ড পুলিশের নতুন ব্যারাক। সেখানের বৌদ্ধ বাসিন্দারা জানিয়েছে, তাদের পাশে আর কোনোভাবেই তারা মুসলিম চায় না।
তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা গ্রামের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে জোনাথন হেড।
২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনের ওই এলাকায় সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর থেকে সোয়া সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে জাতিসংঘ বর্ণনা করে আসছে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে। সেখানে গণহারে হত্যা-ধর্ষণ-জ্বালাওপোড়াওয়ের অভিযোগও মিয়ানমার অস্বীকার করে আসছে।
এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া রাখাইনের ওই অঞ্চলের ছবি বিশ্লেষণ করে বলছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের যে গ্রামগুলো সেনাবাহিনীর দমনপীড়নে ক্ষতিগ্রস্ত ও জনশূন্য হয়ে পড়েছিল, তার ৪০ শতাংশই মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের জন্য যেসব শরণার্থী শিবির নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলোও বসবাসের প্রায় অযোগ্য বলে সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রাম ধ্বংস করে সেখানে কয়েকটি শরণার্থী শিবিরও গড়ে তোলা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে।#
পার্সটুডে/এসএ/১০
খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন