প্রতিশ্রুত শেষ ত্রাণকর্তা ও বিশ্ব-সংস্কারকের অস্তিত্বের অপরিহার্যতা ও যৌক্তিকতা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি গত কয়েক পর্বে। বেশিরভাগ ধর্ম ও মতাদর্শেই যে শেষ ত্রাণকর্তা সম্পর্কে ধারণা রয়েছে তা আমরা তুলে ধরেছি বিগত পর্বগুলোর আলোচনায়।

গত পর্বের আলোচনায় আমরা শুনেছি বৌদ্ধ ধর্মেও শেষ ত্রাণকর্তার ধারণা রয়েছে। এ ধর্মের অনুসারীদের মতে এমন একজন বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তি আসবেন যিনি বৌদ্ধের শিক্ষাগুলোর প্রচলন ঘটাবেন।

মানবজাতিকে সব দুঃখ-কষ্ট ও বৈষম্য, দারিদ্র আর অন্যায়-অবিচার এবং অনাচার থেকে মুক্ত করতে শেষ ত্রাণকর্তার ধারণা বিভিন্ন মতবাদ বা মতাদর্শ ছাড়াও সব ধর্মেও দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে আমরা গত কয়েক পর্বে খ্রিস্ট ও ইহুদি ধর্মে শেষ-ত্রাণকর্তা সম্পর্কিত কয়েকটি ধারণা তুলে ধরেছি।

খ্রিস্ট ধর্মেও শেষ ত্রাণকর্তার ধারণা যে খুব গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে আমরা আলোচনা শুনেছি গত দুই পর্বে। বিকৃত হয়ে যাওয়া খ্রিস্ট ধর্মে শেষ ত্রাণকর্তা সংক্রান্ত কিছু কিছু ধারণা ইসলাম ধর্মে উল্লেখিত বর্ণনার সঙ্গে মিল রাখে।

গত পর্বের আলোচনায় আমরা শুনেছি শেষ ত্রাণকর্তার ধারণা খ্রিস্ট ধর্মের বেশ গভীরে স্থান করে নিয়েছে। অবশ্য খ্রিস্ট ধর্মের বর্ণনাগুলোতে নানা ধরনের পার্থক্য ও অস্পষ্টতা দেখা যায়। এর কারণ নানা ধরনের বাইবেল লেখা হয়েছে হযরত ঈসার জন্মের ও অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার অনেক বছর পরে।

গত কয়েক পর্বের আলোচনায় আমরা জেনেছি মানুষ পূর্ণতার সন্ধানী হওয়ায়, ন্যায়বিচারকামী হওয়ায় বা জুলুম, বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরোধী হওয়ায় এমন একজন সংস্কারক বা ত্রাণকর্তার আগমনের প্রত্যাশী যিনি সারা বিশ্বে শান্তি, ন্যায়বিচার বা সাম্য প্রতিষ্ঠা করবেন এবং দুর করবেন সব জুলুম, নির্যাতন আর দারিদ্র।

গত দুই পর্বের আলোচনায় আমরা বলেছি মানুষের সহজাত প্রকৃতিই ন্যায়বিচারকামী এবং তারা ব্যক্তি ও সমাজ-জীবনে পূর্ণতাকামী হওয়ায় বিশ্বব্যাপী প্রকৃত স্বাধীনতা, শান্তি ও সাম্য-ভিত্তিক সমাজ দেখতে চায়।

আসছেন ত্রাণকর্তা/ মন বলল সে আনন্দের বার্তা। পাচ্ছি সুবাস পবিত্র দেহের  /শোনো স্নিগ্ধ মিষ্টি হাসির ধ্বনি তাঁদের, ঈসা ও মাহদীর আগমনী বার্তা।/বিরহ-বেদনায় কেঁদোনা আর, করোনা হাহাকার ‘ফাল’ খুলে দেখো আসছেন মুক্তির কর্ণধার / মজলুম আর বঞ্চিতের ত্রাণকর্তা।

শ্রোতা ভাইবোনেরা, সালাম ও শুভেচ্ছা নিন। শেষ ত্রাণকর্তা শীর্ষক নতুন ধারাবাহিক আলোচনার প্রথম পর্বে সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।