ইরানের ধ্রুপদী সাহিত্যে কিংবা রূপকথায় এই সী-মোরগ বিভিন্ন রূপে ও প্রতীকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে।

হ্যাঁ ভাইয়েরা ঠিকই বালতি উপরে তোলার জন্য সূতা ধরে টানতে লাগলো। কূপের প্রায় অর্ধেকটায় আসার পর তারা দড়িটা কেটে দিল এবং মালেক মুহাম্মাদ নীচে পড়ে গেল। ভাইয়েরা এবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল এবং নিজ নিজ স্ত্রীকে নিয়ে তারা নিজেদের শহরের দিকে রওনা হলো। স্ত্রীদের হুমকি দিয়ে বলল: কেউ যদি এই ঘটনা কোনোক্রমে অন্য কারো কাছে ফাঁস করে তাহলে তাকে মেরে ফেলা হবে। মহিলারা ভয়ে নিজেদের মুখে কুলুপ আঁটলো। সবাই সবাইকে সতর্ক করে দিল: খবরদার একদম চুপ, টু শব্দটিও করবে না।

পরী মালেককে সেইসব বলে ঘুরে ঘুরে পায়চারী করতে লাগল এবং হঠাৎ করেই সে একটা বড় মুরগিতে পরিবর্তিত হয়ে গেল। মুরগি তার পাখা বিস্তার করে দিল এবং মালেক মুহাম্মাদ ওই বিস্তারিত পাখার ওপর চড়ে বসলো। মুরগি উড়াল দিল। ২৪০ কিলোমিটার আকাশপথ মানে চিতাবাঘ আর সিংহদের এলাকা পেরিয়ে গেল।

মালেক মুহাম্মাদের হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেল ছোট পরীর কথা। আনমনে তাই পেছনে তাকালো। তাকাতেই তার চোখ তো ছানাবড়া। পরীদের সাত বোন তাদের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে একেবারে। মালেক ছয় সহোদর ভাইকে নদীর দিকে পাঠিয়ে নিজে তাদের পেছনে রয়ে গেল। ওই ছয় ভাই বলছিল: তুমি কেন পেছনে থাকছো? ওরা তো এসে গেল বলে...!

মালেক মুহাম্মাদ যেতে যেতে গিয়ে পৌঁছলো একটি শহরের কাছে। ওই শহরের বাদশাহ কী কাজে যেন প্রাসাদের ছাদের ওপরে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাদশা দেখতে পাচ্ছিল দূর থেকে সাতজন ঘোড় সওয়ার শহরের দিকে আসছে।

জামাই শহর দেখতে যাবে তাই বাদশাহ আদেশ দিলো সংশ্লিষ্ট শহরকে যেন সাজানো হয়। তারপর মালেক মুহাম্মাদ দরবারের কতিপয় অভিজাত ব্যক্তিকে নিয়ে মন্ত্রীর শহরের দিকে রওনা দেয়। মালেক মুহাম্মাদের ছয় ভাইয়ের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের।

মালেক মুহাম্মাদ যখন বললো ‘হে রাজকন্যা! আমি এসেছি তোমাকে দৈত্যের হাত থেকে বাঁচাতে’। অমনি রাজকন্যা কাঁদতে কাঁদতে মালেককে বললো: ‘হে যুবক! তুমি তোমার নিজের জীবনের জন্য একটু ভাবো। এই দৈত্য ভয়ংকর। তোমাকে দেখামাত্রই তোমার ওপর হামলা করবে এবং তোমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। তোমার মাথা শরীর থেকে আলাদা করে ফেলবে। তুমি তোমার ওই যৌবনের প্রতি সদয় হও, নিজের প্রাণ রক্ষা করো!’

মালেক মুহাম্মাদ যখন বললো ‘হে রাজকন্যা! আমি এসেছি তোমাকে দৈত্যের হাত থেকে বাঁচাতে’। অমনি রাজকন্যা কাঁদতে কাঁদতে মালেককে বললো: ‘হে যুবক! তুমি তোমার নিজের জীবনের জন্য একটু ভাবো। এই দৈত্য ভয়ংকর। তোমাকে দেখামাত্রই তোমার ওপর হামলা করবে এবং তোমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। তোমার মাথা শরীর থেকে আলাদা করে ফেলবে।তুমি তোমার ওই যৌবনের প্রতি সদয় হও,নিজের প্রাণ রক্ষা করো!’

হযরত আলি (আ) স্বপ্নের ভেতর মালেক মুহাম্মদকে বলেছিল: এর পর থেকে যখনই কোনো সমস্যায় পড়বে তখনই বলবে: ‘ইয়া আলি’! তোমার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এ বলেই আলি (আ) অদৃশ্য হয়ে গেল। মালিক মুহাম্মদের ঘুম ভেঙে গেল। সে দেখলো তার শরীরে কোনোরকম ব্যথা-বেদনা নেই। পুরোপুরি সুস্থ সে।

এক বাদশার সাত ছেলে ছিল। অনেক আগের কথা। ছয় ছেলে ছিল এক মায়ের সন্তান। বাকি এক সন্তান ছিল অন্য মায়ের। বাদশা ওই ছেলের নাম রাখলো মালেক মুহাম্মাদ। এক রাতে বাদশা তাঁর প্রাসাদে আরামে ঘুমাচ্ছিলেন। ঘুমের ভেতর চমৎকার এক স্বপ্ন দেখেন তিনি।