মার্চ ১৩, ২০২২ ১৭:১৯ Asia/Dhaka

শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! থাইরয়েড হরমোন নিয়ে এর আগে তিনপর্বে আপনারা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুনেছেন। আজ চতুর্থ ও শেষ পর্বের আলোচনায় আপনাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। থাইরয়েড হরমোন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যায় মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শেষ পর্বের আলোচনা শোনা যাক। তেহরানে গবেষণারত বাংলাদেশি চিকিৎসক.. পুষ্টিবিদ ও ন্যাচারাল মেডিসিন কনসালটেন্ট, তেহরান ইউনিভার্সিটি অব মেডিক্যাল সাইন্সেস এ পিএইচডি গবেষক ডা. হেদায়েতুল্লাহ সাজু।

জনাব ডা. ডা. হেদায়েতুল্লাহ্ সাজু রেডিও তেহরানে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।

রেডিও তেহরান: থাইরয়েড নিয়ে আপনি গত তিনটি পর্বে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন আপনি। আমাদের শ্রোতাবন্ধুরা! ঐসব আলোচনায় খুবই উপকৃত হয়েছেন। তাঁরা চিঠি লিখে আপনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনও করেছেন এবং প্রশংসা করেছেন। তো থাইরয়েড নিয়ে আলোচনার শেষ পর্বে এসে আপনার কাছে প্রথমে যে বিষয়টি জানতে চাইছি সেটি হচ্ছে, দেখা যায় অনেকে থাইরয়েডে ভুগছেন অথচ চিকিৎসকের কাছে যান না। শুধু থাইরয়েড কেন বলছি সাধারণ মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্তের মানুষরা অনেক রোগেই ভোগেন অথচ ডাক্তারের কাছে যান না। আর এই না যাওয়ার পেছনে অর্থনৈতিক সংকট ও ভীতসহ নানারকমের অসুবিধা আছে।

রেডিও তেহরান: তো ডা. হেদায়েতুল্লাহ্ সাজু যদি কেউ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে থাইরয়েড পরীক্ষা করতে চায় অর্থাৎ থাইরয়েড হয়েছে সেটি কি ঘরে বসে পরীক্ষা করা সম্ভব কিংবা জানা সম্ভব?

ডা. হেদায়েতুল্লাহ্ সাজু: খুব সুন্দর একটা বিষয় জানতে চেয়েছেন। আমি চেষ্টা করব বিষয়টি স্পষ্ট করার।

প্রথম তিনটি বিষয় দিয়ে ঘরে বসে থাইরয়েড হয়েছে কি না সেটি নির্ণয় করা সম্ভব।

প্রথমত: লক্ষণগুলো কি সেটি খেয়াল করতে হবে। অর্থাৎ কি কি লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে থাইরয়েড হয়েছে?

দ্বিতীয়ত:  আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একগ্লাস পানি খেলে বোঝা যাবে।

তৃতীয়ত: শরীরের তাপমাত্রা মাপার মাধ্যমে।

এই তিনটি বিষয়ের মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার থাইরয়েডের কোনো সমস্যা আছে কি না? আর যখন আপনি ঘরে বসে বুঝতে পারলেন যে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা আছে তখন আপনি  বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে পারবেন।

রেডিও তেহরান: ডা. সাজু ঘরে বসে থাইরয়েড নির্ণয়ের বিষয়টি আপনি সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন। একটা পরিসংখ্যানগত বিষয়ে এবার জানতে চাইব। বাংলাদেশ ভারত কিংবা ঐ অঞ্চলে কি পরিমাণ  থাইরয়েডে ভুগছেন সে সম্পর্কে কি কোনো তথ্য আপনার জানা আছে? থাকলে সে সম্পর্কে কিছু বলুন।

ডা. হেদায়েতুল্লাহ্ সাজু: থাইরয়েড নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। তবে সর্ব সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানটা দেখার সুযোগ আমার হয় নি। তবে পুরনো কিছু পরিসংখ্যান আপনাকে দিতে পারি।

২০০৬ সালে বাংলাদেশের একটি পরিসংখ্যানে বলা হয় দেশের সকল জনসংখ্যার শতকরা ১৫ ভাগ থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছেন। অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন। তাছাড়া শতকরা ৩৯ ভাগের বেশি মানুষ আয়োডিনজনিত সমস্যায় ভুগছেন। আর দশ দশমিক পাঁচ মানুষ গয়টারে ভুগছেন। অন্য একটি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, স্কুল গোয়িং শিশুদের প্রায় ২৬ ভাগ আয়োডিনজনিত সমস্যায় ভুগছে। বাংলাদেশে ৪০ থেকে ৫০ লাখ শিশু থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা নিয়ে পৃথিবীর মুখ দেখছে। সারা বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটির বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এরমধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি সেকথা আগেই বলেছি।

আরেকটি বিষয় একটু যোগ করতে চাই। যত ক্যান্সার রোগী দেখা যায় তারমধ্যে হরমোনজনিত ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা শতকরা দুই ভাগ। এ কারণে মৃত্যুও হচ্ছে। যদি প্রাথমিক অবস্থায় এটি নির্ণয় করা সম্ভব হয় তাহলে চিকিসার মাধ্যমে সুস্থ করা সম্ভব।

তো ডা. হেদায়েতুল্লাহ্ সাজু থাইরয়েড নিয়ে রেডিও তেহরানকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ। শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনুন। #

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩ 

 

ট্যাগ