ভারতের নাম মুসলিম বিদ্বেষীদের সাথে যুক্ত করতে কে চায়?
(last modified Thu, 04 Jul 2024 09:58:24 GMT )
জুলাই ০৪, ২০২৪ ১৫:৫৮ Asia/Dhaka
  • ভারতের নাম মুসলিম বিদ্বেষীদের সাথে যুক্ত করতে কে চায়?

পার্সটুডে-ভারতের সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে সেদেশের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে নি। বিজেপি'র পরাজয়ের ফলে বিরোধী দলগুলো কিছুটা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম প্রতিনিধিরা বেশ কিছু আসনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি সরকারের ওই দুর্বলতার কারণে তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্বের তৃতীয় মেয়াদ শুরু হবার অল্প সময়ের মধ্যে ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদের আওয়াজ আগের চেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে।

পার্সটুডে-ভারতের সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে সেদেশের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে নি। বিজেপি'র পরাজয়ের ফলে বিরোধী দলগুলো কিছুটা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম প্রতিনিধিরা বেশ কিছু আসনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি সরকারের ওই দুর্বলতার কারণে তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্বের তৃতীয় মেয়াদ শুরু হবার অল্প সময়ের মধ্যে ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদের আওয়াজ আগের চেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি'র তৃতীয় মেয়াদের সরকার এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় এসেছে। বিরোধী দলগুলোও দীর্ঘদিন পর মোটামুটি ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হয়েছে। তারা এখন ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং নিম্নকক্ষ লোকসভায় ভিন্ন সুরে কথা বলতে শুরু করেছে। ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের সমস্যাগুলোর সমাধানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে তারা এখন তাদের হারানো অধিকার কীভাবে আদায় করতে পারে তার উপায় খুঁজে বের করতে চাচ্ছে।

ভারতের মসনদে নরেন্দ্রমোদী আসীন হবার পর থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলমানদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে তাদের অধিকার ভীষণভাবে লঙ্ঘিত হয়েছিল। তার সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বারবার মুসলমানদের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন থেকে শুরু করে ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের জন্য বিবাহ আইন পরিবর্তন ইত্যাদি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে। বলাবাহুল্য, এসব প্রকৃতপক্ষে কোনো অভিযোগ নয় বরং বাস্তবতা।

ভারতে জনসংখ্যার বিচারে মুসলিম জনগোষ্ঠি একেবারে ছোট নয়। ২০ কোটির চেয়েও বেশি মুসলমান ভারতে বসবাস করছে। সেদেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী মুসলমানরা। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘৃণামূলক বক্তব্য ও আচরণ বেড়ে গিয়েছিল।

ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধী দলগুলো কট্টর হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছে:

ভারতের হাউস অফ কমন্সে হায়দ্রাবাদের প্রতিনিধি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ভারতীয় জনতা পার্টি এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেছেন। গতকাল (বুধবার,৩ জুলাই) সকালে বিজেপি'র বিরুদ্ধে ওয়াইসি বলেছেন: মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলমান জুলুম নির্যাতনের ঘটনা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। মুসলিম সমাজের ওপর হিন্দু উগ্রবাদীদের সহিংস আচরণের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন: মোদি এই অবস্থানে আসতে পেরেছেন শুধুমাত্র তার মুসলমান বিদ্বেষের রাজনীতির কারণে।  চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের খুশি করতে তিনি মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন। বিনিময়ে চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদীরা তাকে সমর্থন দিয়েছে এবং তার মদদে মুসলমানদের ওপর নির্বিচার আক্রমণ চালিয়েছে।

এর আগে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে।

কেবল মুসলমানদের ওপরই হামলা চালানো হয় নি বরং তাদের ধর্মীয় স্থাপনা মসজিদও ধ্বংস করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মসজিদ ভবন। কেবল তাই নয়, মুসলমানদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। মুসলিম অভিবাসীদের বসবাসের অনুমতি প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কাশ্মীর অঞ্চলের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন বাতিল করা হয়েছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে চরমপন্থী হিন্দুদের সহিংস আক্রমণের মুখে নীরব থেকে চরমপন্থি ওই গোষ্ঠিকে অত্যাচার চালিয়ে যেতে উৎসাহ জোগানো হয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করে করে মুসলমানদের ওপর অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেসব অন্যায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সবই সুপরিকল্পিত ছিল।

মুসলমানদের ওপর এইসব জুলুম নির্যাতনের কারণে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সমাজ এবং বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভেতর ভারতের বিরুদ্ধে একটা লুকানো বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে। মুসলিম সমাজে ভারতের মোদী সরকারের ওই নেতিবাচক আচরণের বিরুদ্ধে সৃষ্ট সেই ক্ষোভ ও ঘৃণা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।#

পার্সটুডে/এনএম /৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ