মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেন ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন?
-
ডোনাল্ড ট্রাম্প
পার্সটুডে- আমেরিকার মিডিয়া দাবি করেছে যে, ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সামরিক অভিযানের ওপর ফক্স নিউজের প্রশংসাসূচক প্রতিবেদন দেখার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন!
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ (পেন্টাগন) এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে আক্রমণের সিদ্ধান্ত ফক্স নিউজে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রচারণার কারণেই এসেছে!
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক হেলেন কুপার MSNBC-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্প পূর্বে নিজেকে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন যিনি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নন এবং ১৩ জুন ইহুদিবাদী ইসরাইলের আক্রমণের পরেও তিনি হস্তক্ষেপ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন, কিন্তু একদিন পরে তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেন।
একজন মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে কুপার আরও বলেন, “পরের দিন সকালে ট্রাম্প ঘুম থেকে উঠে ফক্স নিউজ দেখেন এবং দেখেন যে এই হামলার জন্য ইসরাইলের কত প্রশংসা করা হচ্ছে। ফক্স নিউজ ইরানি স্থাপনাগুলিতে ইসরাইলি হামলা, সামরিক কমান্ডার এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যাকে একটি মহান বিজয় হিসেবে চিত্রিত করে এবং ট্রাম্প এই ইতিহাসের অংশ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।”
কুপারের মতে, ট্রাম্প এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযানের কিছু অংশ নিজের নামে দাবি করতে শুরু করেন, যার মধ্যে ১৭ জুনের একটি পোস্টও রয়েছে যেখানে দাবি করা হয়েছে: “আমরা ইরানের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি।”
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প পূর্বে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ইরানের সাথে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তি পর্যালোচনা না হওয়া পর্যন্ত সামরিক হামলা স্থগিত রাখার জন্য সতর্ক করেছিলেন; কিন্তু ১৩ জুনের হামলায় বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন ইরানি কর্মকর্তার হত্যার পর তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেন।
১৩ জুন শুক্রবার সকালে, আন্তর্জাতিক আইন এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন করে ইহুদিবাদী সরকার তেহরানের বিভিন্ন এলাকা এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ আরও কিছু শহর লক্ষ্য করে সামরিক আক্রমণ চালায়।
এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী, সৈন্য এবং বেসামরিক নাগরিক শহীদ হন।
এই আগ্রাসনের পর, রবিবার (২২ জুন) সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে আক্রমণ করে, যা কার্যকরভাবে ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী সরকারের যুদ্ধে যোগ দেয়।
এই কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায়, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে জোর দিয়ে বলেন যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান তার জাতীয় স্বার্থ এবং তার জনগণের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সমস্ত বিকল্প সংরক্ষণ করে।
এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার (২৪ জুন) দাবি করেছেন যে, ইরান এবং ইহুদিবাদী সরকারের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে।
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান, যুদ্ধ শুরু করেনি বলে উল্লেখ করে স্পষ্টভাবে বলেছে যে, যদি ইহুদিবাদী সরকার তাদের অবৈধ আক্রমণ বন্ধ করে, তাহলে পাল্টা জবাব দেওয়ার কোনও ইচ্ছা ইরানের নেই।#
পার্সটুডে/এনএম/এমএআর/২৫