জুন ১৪, ২০২২ ১৯:০০ Asia/Dhaka

শ্রোতাবন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চিঠিপত্রের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান 'প্রিয়জন'। আজকের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় রয়েছি আমরা তিনজন। আমি নাসির মাহমুদ, আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।

আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। ইমাম আলী (আ.) বলেছেন, 'মানুষের সুখ তখনই আসে যখন সে নিজেকে বিদ্বেষ ও প্রতিশোধপরায়ণতা থেকে মুক্ত রাখে।'

আকতার জাহান: আমরা যেন বিদ্বেষ ও প্রতিশোধপরায়ণতা থেকে মুক্ত থাকতে পারি- এ কামনা করে নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।

আজকের আসরের প্রথম ইমেইলটি পাঠিয়েছেন কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাদত হোসেন।

তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ প্রতিদিন বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠান প্রচার করে। কিছু শ্রোতা-পাঠক হয়ত শুধু খবরের জন্যই রেডিও তেহরান শোনেন, কিন্তু কিছু শ্রোতা-পাঠক আরো বাড়তি কিছু চান। তারা ইরান সম্পর্কে জানতে চান, ইসলামি বিশ্ব সম্পর্কে জানতে চান, ইসলাম সম্পর্কে জানতে চান। আর তাদের সে জানতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুরণ করে যাচ্ছে রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ। ইরান ও ইসলামি বিশ্ব সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয়া এমনই একটি অনুষ্ঠান হল ‘ইরান-ইরাক যুদ্ধের ইতিহাস’। আমি মনে করি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মুসলিম দুনিয়া সম্পর্কে যারা চিন্তাভাবনা করেন, গবেষণা করেন, কথা বলেন, লেখালেখি করেন- তাদের প্রত্যেকেরই ‘ইরান-ইরাক যুদ্ধের ইতিহাস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি শোনা উচিত অথবা ওয়েবসাইট থেকে পড়ে নেয়া উচিত।"

নাসির মাহমুদ: 'ইরান-ইরাক যুদ্ধের ইতিহাস’ অনুষ্ঠানটির গুরুত্ব তুলে ধরে ইমেইল করায় শাহাদত ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর সদর থানার আলমবারী রেডিও ক্লাবের সভাপতি কবির আল চপল পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।  

নিজেকে রেডিও তেহরানের নিয়মিত শ্রোতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, "আজ থেকে বার বছর আগের ঘটনা। তখন আমি দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। একদিন শুক্রবার সকালে আমার রেডিওটার নব ঘুরাতে ঘুরাতে হঠাৎ করে শুনতে পাই রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান। রংধনু আসর হচ্ছিল। কাজী নজরুলের একটা ইসলামি গান ও ইরানের এক বাদশার গল্প শুনে আমি মুগ্ধ হই। সেদিন থেকে রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান শুনতে শুরু করি। বর্তমানে আমি অনলাইনে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান নিয়মিত শুনছি। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত এবং বাংলা তরজমা শুনে মনে প্রশান্তি লাভ করি।"

আশরাফুর রহমান: ১২ বছর ধরে রেডিও তেহরান শুনে যাচ্ছেন জেনে ভালো লাগল। আশা করি নিয়মিত মতামত জানাবেন। তো চিঠি লিখার জন্য কবির আল চপল ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আসরের পরের মেইলটি এসেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর থেকে। আর পাঠিয়েছেন কুমার শংকর অধিকারী।

ফার্সি নববর্ষ নওরোজের শুভেচ্ছা জানানোর পর তিনি লিখেছেন, "আমি রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান প্রতিদিনই শুনি। তবে চিঠিপত্র খুব একটা লেখা হয় না। রেডিও তেহরানের সকল অনুষ্ঠান আমার খুব ভালো লাগে। ৯ এপ্রিল 'রমজান আত্মশুদ্ধির মহোৎসব' শীর্ষক অনুষ্ঠানের সপ্তম পর্ব শুনলাম। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনেক কিছু জ্ঞাত হলাম যা মনকে স্নিগ্ধ করল। আপনাদের স্বাস্থ্যকথা, রংধনু আসর, চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন এগুলোও আমার খুব পছন্দের অনুষ্ঠান।"

আকতার জাহান: ভাই কুমার শংকর অধিকারী, বহুদিন পর আপনার লেখা চিঠি পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগছে। আশা করি নিয়মিত লিখবেন।

কিশোরগঞ্জের কুতকাইল গ্রাম থেকে মোঃ রমজান আলী রবিন পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব কিশোরগঞ্জের সাংস্কৃতিক সম্পাদক। 

ছোট্ট এ চিঠিতে তিনি ঢাকা অথবা কিশোরগঞ্জে এফএম অথবা মিডিয়াম ওয়েভে অনুষ্ঠান প্রচার করার দাবি জানিয়েছেন।     

নাসির মাহমুদ: ভাই রমজান আলী রবিন, বাংলাদেশের সব বিভাগীয় শহরে এফএমে অনুষ্ঠান প্রচারের বিষয়ে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের উদ্যোগ সফল হলে শ্রোতাবন্ধুরা আরও সহজেই অনুষ্ঠান শুনতে পাবেন। চিঠি লিখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থেকে বিধান চন্দ্র সান্যাল পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, "ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনা জাতিসংঘের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মানব অধিকারকে সংকীর্ণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করা উচিত নয়। বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যুদ্ধবাজ রাষ্ট্র, মানবতা ও মানবাধিকারের শত্রু, বিশ্বের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী দেশ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সামরিক আগ্রাসনে বিশ্ব বহুদিন থেকেই বিপর্যস্ত। মানবতা ও মানবাধিকার আজ কেঁদে মরছে। কিন্তু জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তাই স্বাভাবিকভাবেই মানবাধিকার প্রশ্নে রাশিয়াকে বরখাস্তের ঘটনাটি জাতিসংঘকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।"

আশরাফুর রহমান: অত্যন্ত যৌক্তিক একটি বিষয়ে মতামত জানালেন বিধান দা। আশা করি এভাবেই সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে লিখবেন।

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি গাজী মোমিন উদ্দীন পাঠিয়েছেন এই মেইলটি। তিনি লিখেছেন, "পছন্দ ও শখ নাকি একটা সময়ে আর ভালো লাগে না। ভালো লাগা ক্রমশ কমতে থাকে। অথচ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে রেডিও শুনছি। এক মিনিটের জন্য কোনোদিন এমন মনে হয়নি। ভ্যারিয়েশন চেয়েছি, উপস্থাপক কিংবা ঘোষক পরিবর্তন চেয়েছি, অনুষ্ঠানের ধরন পরিবর্তন করতে বলেছি কিন্তু কোনদিন অপছন্দের কারণে কিংবা একঘেয়েমির কারণে শোনা বন্ধ করিনি। এর নাম ভালোবাসা। এই ভালোবাসা নিয়ে জীবনের আখেরি দিন পর্যন্ত থাকতে চাই।"

আকতার জাহান: ভাই গাজী মোমিন উদ্দীন, আপনার এই ছোট্ট লেখাটি আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। আশা করি মাঝেমধ্যে লিখবেন।

শ্রোতাবন্ধুরা, এ পর্যায়ে আমরা একটি ভয়েজ ফাইল বাজিয়ে শোনাব। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বারুই পাড়া থেকে এটি পাঠিয়েছেন এস এম নাজিম উদ্দিন। 

নাসির মাহমুদ: বিশ্বসংবাদসহ রেডিও তেহরানের সাপ্তাহিক ও ধারাবাহিক অনুষ্ঠানগুলো সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়ন করার জন্য নাজিমউদ্দিন ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল রেডিও ক্লাব থেকে  কানন রানী টিকাদার পাঠিয়েছেন এই মেইলটি। তিনি লিখেছেন, "আমি এখন প্রায় নিয়মিত রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান শুনি। যেহেতু বাংলাদেশ সময় রাতে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান প্রচার হয় তাই শুনতে কোনও সমস্যা হয় না। বাংলাদেশ ও ভারতের শ্রোতাদের জন্য রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠান সময়সূচি খুবই উপযুক্ত সময়সূচি।

আশরাফুর রহমান: আমাদের কোন্‌ কোন্‌ অনুষ্ঠান এ শ্রোতাবোনের ভালো লাগছে সে সম্পর্কে তিনি কি কিছু লিখেছেন?

নাসির মাহমুদ: হ্যাঁ, তিনি জানিয়েছেন, রেডিও তেহরানের খবরের পাশাপাশি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানগুলো তার খুব ভালো লাগে। তবে ইরান ভ্রমণ, আসমাউল হুসনা, স্বাস্থ্যকথা, রংধনু, প্রিয়জন, সুখের নীড় এবং গল্প ও প্রবাদের গল্প তার বেশি ভালো লাগে।  

আকতার জাহান: আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি জানিয়ে মতামত জানানোর জন্য কানন রানী টিকাদার আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।  

বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সান্তাহার থানার সাহাপুর কে পাড়া থেকে খোন্দকার রফিকুল ইসলাম পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। তিনি জানিয়েছেন নতুন ফ্রিকুয়েন্সিতে অনুষ্ঠান ভালো ও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।

এরপর লিখেছেন, "সত্যি বলতে কী, রেডিও তেহরান আছে বলেই আজও আমি এই পুরোনো জীবন্ত বিনোদনের সহচরী হয়ে বেঁচে আছি। ইসলামী দুনিয়ায় রেডিও তেহরানের সমকক্ষ কোনো বেতার আমি কখনো খুঁজে পাই না। আমি একজন শিক্ষক। আমি আমার মাদরাসায় ছাত্র/ছাত্রীদের প্রায়ই আপনাদের বাংলা অনুষ্ঠান শুনতে উৎসাহ জোগাই। আমার প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, আত্নীয়-স্বজন, সহকর্মী সবাইকে আপনাদের অনুষ্ঠান শুনতে অনুরোধ করি। তাছাড়া আপনাদের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ দেখতে বলি। এতে তারা দিন দিন রেডিও তেহরানের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।"      

আশরাফুর রহমান: রেডিও তেহরানের শ্রোতাবৃদ্ধিতে চেষ্টা চালানোয় খোন্দকার রফিকুল ইসলাম মিয়া আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

নাসির মাহমুদ: ভারতের আসামের বড়পেটা জেলার কান্দুলিয়া থেকে আব্দুস সালাম সিদ্দিক পাঠিয়েছেন  আসরের শেষ  মেইলটি।

তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান, তোমাকে আমি বড় ভালোবাসি। আমার প্রাণের চেয়েও তুমি অতি প্রিয়। তোমার সাথে আমার সম্পর্ক জন্ম-জন্মান্তরের। তোমাকে ভালোবাসার জন্যই বেঁচে আছি আজও। সাহারা মরুভূমিসদৃশ পৃথিবীতে মরুতৃষ্ণা যখন আমাকে নিস্তেজ করে তখন ওমর খৈয়ামের সাকী হয়ে আমার প্রাণে ঢেলে দাও তুমি অপরূপ শব্দের নির্মল সঞ্জীবনী সুধা।

রেডিও তেহরান, তোমার প্রেমের সুধা পান করে বার বার জেগে উঠি আমি। প্রশান্ত সাগরসম দুঃখের সমুদ্রে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়েও হিমালয়সম বাঁধার প্রাচীর ভেদ করার পাই সাহস। তোমায় ভালোবাসি বলেই শিখতে পেরেছি কালা অক্ষরের সুন্দর শব্দের সাথে খেলা।"

আকতার জাহান: বাহঃ খুব চমৎকার ভাষায় রেডিও তেহরানের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলেন আপনি। সুন্দর সুন্দর উপমা দিয়ে চিঠিটি লিখার জন্য আব্দুস সালাম সিদ্দিক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে কয়েকজন শ্রোতার চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করছি।

  • গোপালগঞ্জের ঘোড়াদাইড় থেকে ফয়সাল আহমেদ সিপন
  • পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের মল্লিকাদহ বালাপাড়া থেকে হরিদাস রায়
  • কিশোরগঞ্জের খড়ম পট্টি থেকে শরিফা আক্তার পান্না
  • রাজবাড়ীর খোশবাড়ীর রংধনু বেতার শ্রোতা সংঘ থেকে শাওন হোসাইন
  • কুমিল্লার খাদিমপুর বাজার থেকে মোখলেছুর রহমান।
  • এবং ভারতের ছত্তিশগড়ের ভিলাই থেকে আনন্দমোহন বাইন

আশরাফুর রহমান: চিঠি লিখার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তো বন্ধুরা, অনুষ্ঠান থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আজও আপনাদের জন্য রয়েছে একটি গান। 'তোমায় দমে দমে দমে জপি আল্লাহু আল্লাহ' শিরোনামের গানটি গেয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ শিল্পী রাজিব।

নাসির মাহমুদ: আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৪

ট্যাগ