কাওরান বাজারের চিঠি
'বাংলাদেশি ধনীদের স্যালুট! আসুন লন্ডন, দুবাইয়ে বাড়ি কিনি'
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ২২ জানুয়ারি রোববারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- কে হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি সংবিধান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ক্ষমতার প্রশ্ন-প্রথম আলো
- নির্বাচিত কলাম-বাংলাদেশি ধনীদের স্যালুট! আসুন লন্ডন, দুবাইয়ে বাড়ি কিনি-মানবজমিন
- চীনকে টপকে জনসংখ্যায় বিশ্বে প্রথম ভারত, বেকারত্ব বাড়ার শঙ্কা-যুগান্তর
- গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় দ্রব্যমূল্য বাড়বে : বাণিজ্যমন্ত্রী-কালের কণ্ঠজেনেশুনে রাশিয়া নিষিদ্ধ জাহাজে পণ্য পাঠিয়েছে :
- পররাষ্ট্রমন্ত্রী-কালের কণ্ঠ
- পাঠ্যক্রমে ভুলের দায় দায়িত্ব স্বীকার করে সংশোধন করা হচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী- বাংলাদেশ প্রতিদিন
- পরিবর্তন চাইলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে: ওবায়দুল কাদের -ইত্তেফাক
কোলকাতার শিরোনাম:
- খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাড়িতে FBI হানা, ম্যারাথন তল্লাশিতে উদ্ধার বহু গোপন সরকারি নথি-সংবাদ প্রতিদিন
- ভাঙরে অশান্তির পর গ্রেপ্তার আইএসএফ বিধায়ক সহ ৪৩-আজকাল
- আমেরিকায় চিনা নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষে বইল রক্তগঙ্গা–আনন্দবাজার
- চাকরি দুর্নীতিতে অবশেষে গ্রেপ্তার যুব তৃণমূল নেতা-গণশক্তিলালুর বিরুদ্ধে বন্ধ করে দেয়া মামলা ফের শুরু করল সিবিআই-পুবের
- কলম
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি-
কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:
১. বিএনপি নেতৃত্বের পতন চায় দেশের জনগণ- একথা বলেছেন আ. লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কী বলবেন আপনি?
২. বিশ্ব দ্রুত পরমাণু বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই বিপর্যয় এড়ানো যাবে না। একথা বলেছেন মার্কিন রাজনৈতিক ভাষ্যকার, ভাষাবিদ ও দার্শনিক নোয়াম চমস্কি। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর
কে হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি-সংবিধান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ক্ষমতার প্রশ্ন-প্রথম আলো
পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন, সে বিষয়ে এখন দেশে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। এমন আলোচনার কারণ, বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ, ফলে ক্ষমতাসীন দলকে এখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে একজন নতুন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে হবে।
সংবিধানের ধারা অনুসারে, মেয়াদ অবসানের পূর্ববর্তী ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিতে হবে। সে হিসাবে, আগামী ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। অনুমান করা যায়, খুব শিগগির নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। একার্থে রাষ্ট্রপতির পদ পূরণের জন্য নির্বাচন একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কেননা সংসদে যে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, সেই দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তিনিই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। ফলে এখন আসল প্রশ্ন হচ্ছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কাকে মনোনয়ন দিচ্ছে।
দলের ব্যবস্থা অনুযায়ী এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সংবিধানের এই বিধি কৌতূহলোদ্দীপকও বটে। এটি ১৯৭২ সালের প্রণীত সংবিধানে তৈরি করা হয়েছে। তবে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ১৯৯১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেটি বহাল ছিল না, কেননা তখন দেশে রাষ্ট্রপতিশাসিত ব্যবস্থা ছিল।
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি পদে নিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ এই দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর। ১৯৭৫ সাল থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতেন সরাসরি নাগরিকদের ভোটে। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে দেশে সংসদীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তিত হলে সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার বিধান ফিরে আসে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন-আলোচনায় শীর্ষে মসিউর রহমানসহ পাঁচজন
পরিবর্তন চাইলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে: ওবায়দুল কাদের-ইত্তেফাক
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে আসুন, পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসতে হবে বিএনপিকে। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ সরকার সহায়তা করবে। আন্দোলনে সংগ্রামে নির্বাচনে ব্যার্থ তাদের নিজেদেরই পদত্যাগ করা উচিত।
চীনকে টপকে জনসংখ্যায় বিশ্বে প্রথম ভারত, বেকারত্ব বাড়ার শঙ্কা-যুগান্তর
২০২২ সালের শেষনাগাদ ভারতের জনসংখ্যা পৌঁছেছে ১৪১ কোটি ৭০ লাখে। একই সময়ে চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ চীনের চেয়ে ৫০ লাখ জনসখংখ্যা বেশি ভারতের। এসব তথ্য প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠির বয়স ৩০ এর নিচে। বিরাট সংখ্যক এ জনসংখ্যার জন্য বেকারত্ব সংকটে পরতে পারে ভারত। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম হলেও ২০৫০ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যা বাড়তে পারে।
আর এ জনসংখ্যা নিয়মিত বাড়ার কারণেই বেকারত্ব মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেকারত্ম দূর করতে ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রায় ২০ কোটি মানুষ ভারতের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাড়ি জমিয়েছেন। এই সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে। এর বড় একটি কারণ, গ্রামে কাজের সংকট ও নিম্ন মজুরি। ফলে মানুষ কাজের সন্ধানে গ্রাম থেকে শহরে চলে যাচ্ছেন।
নির্বাচিত কলাম-কাওরান বাজারের চিঠি-বাংলাদেশি ধনীদের স্যালুট! আসুন লন্ডন, দুবাইয়ে বাড়ি কিনি-মানবজমিন
একদিকে মানুষের পেট চালাতে নিদারুণ লড়াই। অন্যদিকে, বেগমপাড়ায় বিত্তবৈভবের বেড়ে চলা। এই বিভ্রমের মধ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। বেগমপাড়া তো একটি প্রতীক মাত্র। এরইমধ্যে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, বেশ কয়েকটি দেশেই এমন বেগমপাড়া গড়ে তুলেছেন আমাদের প্রিয় কিছু বাংলাদেশি। তাদের অর্থের কতোটা এ দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে তার তদন্ত অপরিহার্য। দেশের অর্থ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন দেশে। ন্যায়বিচারের আশা কখনোই ত্যাগ করা উচিত নয়
সময়, জীবন কখনো কখনো বিভ্রম তৈরি করে। কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা ঠাওর করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রশ্ন তৈরি হয় নিজের অস্তিত্ব নিয়েও।
ঠিক আছি তো! এমনিতে বাংলাদেশি সমাজ বিভক্ত। কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ বিএনপি। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নানাভাবে মানুষ নিজেকে আলাদা করেছে। যদিও তার বেশির ভাগই মেকি, বানানো। কিন্তু মানিব্যাগ সামলাতে মানুষ যে হিমশিম খাচ্ছে তা বানানো নয়। নিজের, চারপাশের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, কতো কষ্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবন চলছে। এমনিতে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের কঠোর সমালোচনা করে থাকেন অনেকে। তবে মানুষের জীবন যে চলছে না সেটা পত্রিকা খুললেও মাঝে মধ্যে টের পাওয়া যায়। ন্যায্যমূল্যের ট্রাকে দীর্ঘ লাইন। সামান্য কিছু পণ্যের জন্য দিনভর অপেক্ষা। মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে। বাজারের ফর্দ ছোট করেছেন বহু মানুষ। এই যখন অবস্থা তখন সম্প্রতি অন্তত দু’টি খবর আমাদের আশাবাদী না করে পারে না! বড় এ দু’টি সুখবরের পাশাপাশি আরও কিছু সুসংবাদও আছে। যেমন, আমেরিকায় এক বাংলাদেশি এমপি’র একাধিক বাড়ি কেনার খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
তবে বড় দু’টি সুসংবাদে একবার ঘুরে আসা যায়। বণিক বার্তায় প্রকাশিত খবরটির শিরোনাম- ‘লন্ডনের অভিজাত এলাকায় প্রপার্টির শীর্ষ বিদেশি ক্রেতা বাংলাদেশিরাও।’ এতে বলা হয়, ‘লন্ডনের সবচেয়ে অভিজাত এলাকাগুলো স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডন’ হিসেবে। গোটা লন্ডনে এসব এলাকায় প্রপার্টির দাম সবচেয়ে বেশি। বহুমূল্য এসব প্রপার্টির মালিকানাকে দেখা হয় অতি ধনী বৃটিশদের আভিজাত্যের নমুনা হিসেবে। প্রপার্টি মূল্যের ভিত্তিতে প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনের পরিধি ও সংজ্ঞায় বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনভুক্ত এলাকাগুলো হলো- নাইটসব্রিজ, মেফেয়ার, সাউথ কেনসিংটন, ওয়েস্ট ব্রম্পটন ইত্যাদি। শুধু বৃটিশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য স্থানের অতি ধনীরাও এখন প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনে প্রপার্টি ক্রেতাদের অভিজাত তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন। প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনের প্রপার্টি বাজারে বিদেশিদের অবদান এখন ৪০ শতাংশেরও বেশি। ধনাঢ্য এসব ক্রেতার জাতীয়তাভিত্তিক শীর্ষ তালিকায় আছেন বাংলাদেশিরাও। প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনের প্রপার্টি কেনায় জাপানি ধনীদের চেয়েও বেশি ব্যয় করেছেন তারা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনীদের বিনিয়োগ কোটায় অভিবাসনসংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে লন্ডনভিত্তিক অ্যাস্টনস। সংস্থাটি সম্প্রতি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার বিদেশি প্রপার্টি ক্রেতাদের জাতীয়তাভিত্তিক একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। বৃটিশ রিয়েল এস্টেট ও প্রপার্টি ব্যবস্থাপনা সংস্থা নাইট ফ্রাঙ্ক ও যুক্তরাজ্য সরকারের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি করা এ তালিকায় দেখা যায়, ২০২০ সালের প্রথম নয় মাসে প্রাইম সেন্ট্রাল লন্ডনের বিদেশি প্রপার্টি ক্রেতাদের তালিকায় বাংলাদেশিদের অবস্থান ছিল নবম।’
ওদিকে, প্রথম আলো’র এক রিপোর্টের শিরোনাম ছিল- ‘দুবাইয়ে দেড় বছরে ৩৪৬ কোটি টাকার ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনেছেন বাংলাদেশিরা।’ এতে বলা হয়েছে, ‘কানাডার বেগমপাড়ার পর এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতেও বাড়ি কেনায় বিপুল বিনিয়োগ করেছেন বাংলাদেশিরা। দুবাইয়ের সরকারি নথিপত্র ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশিরা দুবাইয়ে ১২ কোটি ২৩ লাখ দিরহাম বা ৩৪৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত যেসব দেশের মানুষ জমি-বাড়ি কিনছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশিরা সবার আগে। দেশের বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রেও এ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দুবাইয়ের আবাসন বাজারে বছরে ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন দিরহাম বা ৪৫ হাজার ৯১৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়। সেই তুলনায় বাংলাদেশিদের ৩৪৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ বড় কিছু নয় আর এই অর্থ দিয়ে দুবাইয়ে বড়জোর ১০০টি ফ্ল্যাট কেনা যাবে, এর বেশি কিছু নয়। বাংলাদেশিরা সেখানে সবচেয়ে বেশি ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনেছেন, এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে এই অর্থ বৈধপথে দেশ থেকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই, তা অবৈধপথেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুবাইয়ে বাড়ি-ফ্ল্যাট কেনার এই তালিকায় আছেন ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও আমলারা। দুবাইয়ের এসব বিনিয়োগের গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। এ ছাড়া দেশটিতে এক কোটি দিরহাম বা ২৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হলে গোল্ডেন ভিসা দেয়া হয়।’
মাঝে ফেসবুকে একটা মজার লেখা পড়ছিলাম। উন্নত সব দেশে বাংলাদেশিদের বিপুল সংখ্যক বাড়ি থাকার খবর উল্লেখ করে বলা হচ্ছিল, এটাই ওইসব দেশ দখলের সবচেয়ে সহজ উপায়। একে একে আমরা সব বাড়ি কিনে ফেলবো। আর দখলে এসে যাবে একেকটি শহর। এমনিতে আসলে সহজে আমরা কোনো কিছুর প্রশংসা করি না। বিদেশে বাংলাদেশিদের এসব অনবদ্য সাফল্যও যেন আমরা উপভোগ করতে পারছি না!
আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লেখ আছে, ‘‘আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল্য লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;’’
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রগতি কম নয়। উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বহুক্ষেত্রেই চমক সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে বহুগুণ। যদিও নানা পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এদেশে বৈষম্যও বেড়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি একবার বলেছিলেন, দেশের সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের দেশগুলোর মতো। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে- এ কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি কখনোই বলিনি যে ১৭ কোটি মানুষের পয়সা বেশি হয়েছে। বাস্তবতা হলো দেশের ২০ ভাগ মানুষ নিম্ন আয়ের। সেটা মাথায় রাখতে হবে।’
এক শ্রেণির মানুষের বিদেশে টাকা পাচার এবং সম্পদের পাহাড় গড়া নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে কম আলোচনা হয়নি। বিশেষকরে বেগমপাড়াতো রীতিমতো টপচার্টে রয়েছে বহুদিন ধরেই। তবে টরেন্টোতে বা কানাডায় সেই অর্থে কি কোনো সুনির্দিষ্ট এলাকা আছে, যেটিকে বেগমপাড়া বলা হয়? সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর এ ব্যাপারে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, এই বেগমপাড়া আসলে কানাডায় পাড়ি জমানো দুর্নীতিগ্রস্তদের স্ত্রীদের দ্বিতীয় নিবাস অর্থে ব্যবহৃত হয়। বাস্তবে এমন কোনো সুনির্দিষ্ট এলাকা নেই, যেটিকে ‘বেগমপাড়া’ বলা হয়। তবে প্রায় বছর তিনেক আগে বিবিসি বাংলার ওই রিপোর্টে সাজ্জাদ আলি নামে টরেন্টোর একজন রিয়েল এস্টেট এজেন্টের বক্তব্য প্রকাশ করে। তার ভাষ্য ছিল, ‘‘বেগমপাড়া যে শুধু কথার কথা, লোকমুখে শোনা ব্যাপার, তা নয়। আমরা দেখি এখানে বাংলাদেশিরা অনেক সংখ্যায়, এমন সব জায়গায় বাড়িঘর কিনেছেন, যেটা একটু অভিজাত এলাকা। কিন্তু তাদের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে তাদের এই সম্পদ সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তারা এখানে তেমন কিছু করেন বলে তো আমরা দেখি না। কীভাবে তারা এক বা দুই মিলিয়ন ডলারের একটি বাড়ি কেনার ক্ষমতা রাখেন!’’
শেষ কথা: একদিকে মানুষের পেট চালাতে নিদারুণ লড়াই। অন্যদিকে, বেগমপাড়ায় বিত্তবৈভবের বেড়ে চলা। এই বিভ্রমের মধ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। বেগমপাড়া তো একটি প্রতীক মাত্র। এরইমধ্যে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, বেশ কয়েকটি দেশেই এমন বেগমপাড়া গড়ে তুলেছেন আমাদের প্রিয় কিছু বাংলাদেশি। তাদের অর্থের কতোটা এ দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে তার তদন্ত অপরিহার্য। দেশের অর্থ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন দেশে। ন্যায়বিচারের আশা কখনোই ত্যাগ করা উচিত নয়।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
‘সংবিধানের মূল কাঠামো আমাদের কাছে ধ্রুবতারার মতো’, ধনকড়কে নিঃশব্দ বার্তা প্রধান বিচারপতির-সংবাদ প্রতিদিন
কলেজিয়াম এবং বিচারপতি নিয়োগ বিতর্কের মধ্যেই সংবিধানের মূল কাঠামোর পক্ষে জোরাল সওয়াল করলেন, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় । শনিবার মুম্বইয়ে আইনজীবী ‘ননী পালকিওয়ালা স্মারক বক্তৃতা’য় প্রধান বিচারপতি বললেন সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার বা মূল কাঠামো আসলে আমাদের কাছে ধ্রুবতারার মতো। যখনই আমরা দিশাহীন হয়ে পড়ি, তখন এটাই আমাদের পথ দেখায়।কলেজিয়াম বিতর্কের আবহে প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ কিছুদিন আগেই দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রবল সমালোচনা করেছিলেন।
আমেরিকায় চিনা নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষে বইল রক্তগঙ্গা-আনন্দবাজার পত্রিকা
চিনা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বইল রক্তগঙ্গা। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেরে পার্ক শহরে বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে এমনই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। স্থানীয় সংবাদপত্র ‘লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস’ জানাচ্ছে, ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছেছে।শনিবার ছিল চিনা নববর্ষ। সেই উপলক্ষে মন্টেরে পার্কে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। অনুষ্ঠান শেষ হতেই বন্দুকবাজের তাণ্ডব শুরু হয়। শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার পরে হামলা শুরু হয়। তবে এখনও পর্যন্ত বন্দুকবাজকে গ্রেফতার করা গিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা-ও পরিষ্কার করে জানা যায়নি।
খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাড়িতে FBI হানা, ম্যারাথন তল্লাশিতে উদ্ধার বহু গোপন সরকারি নথি-সংবাদ প্রতিদিন
ট্রাম্পের পর এবার জো বাইডেনের (Joe Biden) বাড়িতে এফবিআই হানা। শনিবার ১৩ ঘণ্টা ধরে চলে ম্যারাথন তল্লাশি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের (USA President) উইলমিংটনের বাসভবন থেকে আধ ডজন গোপনীয় নথি উদ্ধার হয়েছে। তা ইতিমধ্যে আমেরিকায় বিচারবিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে এই তল্লাশি নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের কড়া আক্রমণের মুখে পড়তে হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে বাইডেনের আইনজীবীর সাফাই, গোপনীয় নথিগুলি অনেক পুরনো। সেগুলি খুঁজে পাওয়ার জন্যই মার্কিন প্রেসিডেন্টই এফবিআইকে তল্লাশি চালাতে বলেছিলেন। সবমিলিয়ে এফবিআইয়ের নজিরবিহীন তল্লাশি ঘিরে তোলপাড় মার্কিন মুলুক।
আবার রাম রহিমের প্যারোল মঞ্জুর হওয়ার বিষয়ে সরব হয়েছেন দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘আবার ধর্ষক, খুনি রাম রহিমের ৪০ দিনের জন্য প্যারোল মঞ্জুর হয়েছে। নির্লজ্জতার সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। দেশবাসীদের নিজেদের মেয়েদের সুরক্ষার কথা ভাবা উচিত, কারণ খোলা রাস্তায় ধর্ষকরা ঘুরে বেড়াবে।’’ রহিমের বার বার প্যারোলে বেরিয়ে আসার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন।গত বছর ১৪ অক্টোবর গুরমিতকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। হরিয়ানার রোহতক জেলার সুনারিয়া জেলে ফেরত পাঠানো হয় ২৫ নভেম্বর। তবে জেল থেকে বেরিয়েই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন রাম রহিম।
বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ হলে বিয়ের ধারণাটাই নষ্ট হয়ে যাবে, সুপ্রিম কোর্টে মামলা NGO’র-সংবাদ প্রতিদিন
• বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে পুরনো বিতর্কে নয়া মাত্রার সংযোজন।
• এবার আসরে নামল একটি পুরুষ অধিকার সংগঠন।
• তাঁদের দাবি, বৈবাহিক ধর্ষণকে যদি ধর্ষণ হিসাবে গণ্য করা হয়, এবং সেটা অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয়, তাহলে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটির উপর বিশ্বাস হারাবেন মানুষ।
বৈবাহিক ধর্ষণ (Marrital Rape) নিয়ে পুরনো বিতর্কে নয়া মাত্রার সংযোজন। এবার আসরে নামল একটি পুরুষ অধিকার সংগঠন। তাঁদের দাবি, বৈবাহিক ধর্ষণকে যদি ধর্ষণ হিসাবে গণ্য করা হয়, এবং সেটা অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয়, তাহলে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটির উপর বিশ্বাস হারাবেন মানুষ।বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের প্রসঙ্গ টানা যায় কিনা তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে দেশে। অনেকের মতে বিষয়টি পশ্চিমী সংস্কৃতি থেকে আমদানি করা হয়েছে। এ নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক চলছে। বহু মামলাও হয়েছে। কিন্তু এখনও আমাদের দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে সুস্পষ্ট কোনও আইন নেই। এই মুহূর্তে এই সংক্রান্ত মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টেও (Supreme Court)। তবে কিছুদিন আগে একটি গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, বিবাহিত মহিলারাও ‘ধর্ষণে’র শিকার হতে পারেন। স্বামীর আচরণে অবাঞ্ছিত ভাবে গর্ভবতী হতে পারেন মহিলারা।
তারপরই আসরে নামল পুরুষ আয়োগ ট্রাস্ট নামের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন দাখিল করেছে তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, ভারতীয় আইন অনুযায়ী স্ত্রী প্রাপ্তবয়স্ক হলে জোর করে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে স্বামীকে শাস্তি দেওয়া যায় না। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির দাবি, বৈবাহিক ধর্ষণ স্বীকৃত হলে অনেক বিয়ে উপযুক্ত বিচার ছাড়াই ভেঙে যেতে পারে। কারণ জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে স্ত্রীর জবানবন্দি ছাড়া আর কোনও বিকল্প থাকে না। পুরুষের কাছে নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করার কোনও উপায় থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই বিয়ে নামক সংস্থার প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যেতে পারে।
পুরুষ অধিকার সংগঠনটির যুক্তি, প্রতি বছর মহিলাদের ভুয়ো নারী নির্যাতন এবং গার্হস্থ্য হিংসার (Domestic Violence) অভিযোগে বহু পুরুষ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। এবার যদি বৈবাহিক ধর্ষণ বৈধতা পায়, তাহলে তার অপব্যবহার হবে এবং বহু নিরপরাধ পুরুষ শাস্তি পেয়ে যাবে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২২