জুন ০৮, ২০২৩ ১৭:১৪ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ৮ জুন বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • মতামত ২ হাজার টাকা ও আয়করের রিটার্ন কেন অযৌক্তিক -প্রথম আলো
  • বিষক্রিয়ায় দুই ভাইয়ের মৃত্যু: বালাইনাশক কোম্পানির এমডি-চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার -মানবজমিন
  • আন্দোলন ভিন্নখাতে নিতে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে: ফখরুল-ইত্তেফাক
  • সংলাপ নিয়ে ৪ আ.লীগ নেতার ‘পাল্টাপাল্টি’ বক্তব্য –যুগান্তর
  • দৈনিকটির অন্য একটি খবরে এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে- ফের আলোচনায় ‘সংলাপ’: আওয়ামী লীগে মতানৈক্য
  • ডেঙ্গুতে আজও দুজনের মৃত্যু -কালের কণ্ঠ
  • জিডিপির ৩ শতাংশ পেলে উন্নত দেশের চেয়ে ভালো সেবা দিতাম : স্বাস্থ্যমন্ত্রী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • গভীর রাতেও লোডশেডিংতে হাঁসফাঁস বিভিন্ন এলাকার মানুষের -গণশক্তি
  • জেলায় প্রথম হওয়া ছাত্রী অর্থাভাবে দিনমজুর! আত্মবিশ্বাসী কার্মা বলছেন, আমলা হবই-আনন্দবাজার-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • মুম্বইয়ে লিভ ইন সঙ্গী খুনের ঘটনায় সরব বিরোধীরা, এতদিন মুখ খোলেননি কেন, তোপ BJPর -সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. অর্পিত সম্পত্তি লিজ দিতে পারবেন জেলা প্রশাসকরা: হাইকোর্ট। এই শিরোনাম করেছে দৈনিক মানবজমিন। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

২. ন্যাটো জোটের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে যদি ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না দেয়া হয় তাহলে জোটের কোনো কোনো দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে পারে। একথা বলেছেন ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব আন্দ্রেস রাসমুসেন। এমন পদক্ষেপ নেয়া হলে তার ফল কী হতে পারে?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

আন্দোলন ভিন্নখাতে নিতে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে: ফখরুল-ইত্তেফাক

বিভিন্ন দাবিতে চলা বিএনপির আন্দোলন ভিন্নখাতে নিতে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমির হোসেন আমু ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্দেশ্য হলো বিএনপিকে মূল দাবি থেকে মনোযোগ ভিন্নখাতে নেওয়া। লোডশেডিংয়ে বর্তমানে যে জনদুর্ভোগ, তা ধামাচাপা দিতে তারা এসব বক্তব্য দিচ্ছেন।নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদক্ষেপ নেন তত্ত্বাবধায়ক দিন, পরে দেখা যাবে কি করতে হবে।

মতামত ২ হাজার টাকা ও আয়করের রিটার্ন কেন অযৌক্তিক-প্রথম আলো

বহুল নন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় গরিব চাষি ফজল মিয়ার মুখ দিয়ে তাঁর দর্শকদের শুনিয়েছিলেন, ‘ভরপেট না–ও খাই/ রাজকর দেওয়া চাই’। চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখানো কল্পকাহিনিতে এ কথাগুলোর আগে-পিছে আরও যেসব কথা আছে, সেগুলোর বর্তমানের বাস্তব জীবনে উচ্চারণে রাষ্ট্রদ্রোহের ঝুঁকি আছে।

আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে যে আইনের অপব্যবহারের কথা ওই আইন রচনাকারী আইনমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন, সংসদে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আইনটি হওয়ার পর থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত যেহেতু গড়ে প্রতিদিন সাড়ে চারটি করে মামলা হয়েছে, সেহেতু সব কথা বলা কি সম্ভব?

সংলাপ নিয়ে ৪ আ.লীগ নেতার ‘পাল্টাপাল্টি’ বক্তব্য-যুগান্তর

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার ১৪ দলের সমাবেশে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন দলটির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। ক্ষমতাসীন দল ও জোটের বর্ষীয়ান এই নেতার বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার নতুন মাত্রা যোগ করে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংলাপের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে এমন আশা করতে থাকেন অনেকে।

তবে ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। এ ইস্যুতে ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে দেখা দেয় মতানৈক্য। প্রভাবশালী দুই নেতা ও মন্ত্রী আমুর বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রভাবশালী আরও একজন মন্ত্রী সংলাপের পক্ষে মত দেন। এদিকে আমির হোসেন আমু তার অবস্থান থেকে সরে আসেন। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু বলেছিলেন, বিগত সময়ে জাতিসংঘ যেভাবে তারানকো সাহেবকে পাঠিয়েছিলেন। আমাদের দুই দলকে নিয়ে একসঙ্গে বসে মিটিং করেছিলেন। আজকেও প্রয়োজনে এ ধরনের দলাদলি না করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসুক। আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই। কোথায় ফারাক? সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে বাধা কোথায়? কীভাবে সেটি নিরসন করা যায়। এটি আলোচনার মধ্য দিয়েই সুরাহা হতে পারে। অন্য কোনো পথে নয়।

তিনি বলেন, আসুন, গণতন্ত্রকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমরা আপনাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দ্বার খোলা। তিনি বলেছেন, যে কোনোভাবে তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে তিনি প্রস্তুত। আমির হোসেন আমুর মঙ্গলবারের বক্তব্যের পরদিন বুধবার সকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আলোচনার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের নিজেদের সমস্যা আমরা আলোচনা করব, প্রয়োজন হলে নিজেরাই সমাধান করব। জাতিসংঘের মধ্যস্থতার কথাও উড়িয়ে দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এখন বাইরের বিষয়টা কেন বারবার আসে? জাতিসংঘ কেন মধ্যস্থতা করবে? জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করবে এমন কোনো রাজনৈতিক সংকট এই স্বাধীন বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত হয়নি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আমাদের নেত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাদের সঙ্গে আমরা কী আলোচনা করব? তারা আজকে নালিশের রাজনীতি করছে। কী পেয়েছে আমরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে নালিশ করে? পেয়েছে ঘোড়ার ডিম। কিছুই পাইনি, এখন তারা আবার জাতিসংঘের মধ্যেস্থতা চায়, যা বাস্তবতা বিবর্জিত কথা।

আমুর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি দলের কথা নয়, তার ব্যক্তিগত কথা। এর বাইরে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। 

এদিকে সচিবালয়ে সাংবাদিকরা আমির হোসেন আমুর বক্তব্য নিয়ে অবস্থান জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। তার এ বক্তব্য নিয়ে আমাদের দলের মধ্যে, সরকারের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি ১৪ দলের মধ্যেও কোনো আলোচনা হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। তবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তিনি বলেছেন আসলে গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তিনি ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত, দল, সরকার কিংবা ১৪ দলের কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।

ওই বক্তব্যের পর আমুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, কাগজে বা গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তিনি (আমু) ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক, এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত। এটি দল, সরকার— এমনকি ১৪ দল কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় কী লাভ হবে, সেই প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে অতীতে আলোচনার অভিজ্ঞতায় বলা যায়, এই সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চায়, যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কী হবে, সেটি হচ্ছে বড় প্রশ্ন। আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলেন, সেটিও মনে করিয়ে দেন ড. হাছান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাড়ির দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও দরজা খোলেনি। সেই দলের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসেছেন এবং আলোচনায় বসার ইচ্ছা ব্যক্তও করেছিলেন। কিন্তু কী লাভ হয়েছিল?

বিষক্রিয়ায় দুই ভাইয়ের মৃত্যু: বালাইনাশক কোম্পানির এমডি-চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার-মানবজমিন

রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় তেলাপোকা মারার স্প্রের বিষক্রিয়ায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় বালাইনাশক পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাগ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল আমিন। গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম জানান, মোবারক হোসেন তার বাসায় তেলাপোকা-ছারপোকা মারার জন্য ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডকে ভাড়া করেন। শুক্রবার ডিসিএসের কর্মীরা মোবারক হোসেনের বাড়িতে কীটনাশক প্রয়োগ করে এবং ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে বলেন। তবে পরিবারের সদস্যরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে প্রায় ১০ ঘণ্টা পরে বাড়িতে ফেরেন। পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লেও শিশুদের দ্রুত নিকটস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল রোববার সকালে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শাহিল মোবারত জায়ান (৯) ও রাতে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শায়েন মোবারত জাহিনের (১৫) মৃত্যু হয়। কীটনাশক থেকে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যুর কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার (৫ জুন) রাতে বালাইনাশক কোম্পানির কর্মকর্তা টিটু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই বাসায় তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেছিলেন। তাকে বিশদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইতোমধ্যে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহত শিশুদের বাবা মোবারক হোসেন তুষার সোমবার তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন। সেটির তদন্ত চলছে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

মুম্বইয়ে লিভ ইন সঙ্গী খুনের ঘটনায় সরব বিরোধীরা, এতদিন মুখ খোলেননি কেন, তোপ BJPর-সংবাদ প্রতিদিন

লিভ ইন সঙ্গীকে খুনের পর প্রেশার কুকারে মৃতদেহের টুকরো সেদ্ধ করেন এক ব্যক্তি। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) এই ঘৃণ্য ঘটনায় এবার শুরু হল রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে রাজ্য সরকারকে বার্তা দেন এনসিপি নেতা সুপ্রিয়া সুলে (Supriya Sule)। তার পালটা দিয়ে বিজেপি (BJP) নেত্রী চিত্রা ওয়াঘ বলেন, সরকার খুব ভাল করেই তার কাজ জানে। কিন্তু আগের মহা বিকাশ আগাড়ি সরকার তার কাজ ঠিক মতো করেনি বলেই শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন হতে হয়েছে। মনোজ সাহানির হাতে খুন হয়েছেন প্রেমিকা এবং দীর্ঘদিনের লিভ ইন সঙ্গী ৩৬ বছরের সরস্বতী বৈদ্য। মুম্বইয়ের মীরা রোডের গীতা নগর ফেস ৭-এর একটি ফ্ল্যাটে থাকছিলেন যুগল। বোরিবালিতে মনোজের একটি ছোট দোকান রয়েছে। সম্প্রতি কোনও একটি বিষয়ে উভয়ের মধ্যে অশান্তি হয়। এরপর মেজাজ হারিয়ে সরস্বতীকে হত্যা করেন মনোজ। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে প্রেমিকার দেহ গাছকাটা করাত দিয়ে টুকরো করেন। এমনকী প্রমাণ লোপাটে কুকারে দেহাংশ সিদ্ধ করেন বলেও অভিযোগ।

বিরোধীদের আক্রমণের পালটা টুইট করেন বিজেপি নেত্রী চিত্রা ওয়াঘ। তিনি বলেন, “মীরা রোডের এই ঘটনায় কী করতে হবে ফড়নবিস তা ভাল করেই জানেন। কিন্তু পুণের এক নাবালিকাকে যখন মুসলিম যুবক অপহরণ করেছিল, তখন আপনার কিছু বলতে ইচ্ছা করেনি? তখন যদি মহা বিকাশ আগাড়ি সঠিক পদক্ষেপ করত, তাহলে শ্রদ্ধা ওয়াকারের মতো মেয়েদের মৃত্যু হত না।” প্রসঙ্গত, দিল্লিতে মুসলিম লিভ ইন পার্টনারের হাতে খুন হন শ্রদ্ধা। 

রাহুলের ছেড়ে আসা ওয়ানড়ে উপনির্বাচনের তোড়জোড় শুরু কমিশনের, ধন্দে রাজনৈতিক মহল-সংবাদ প্রতিদিন

রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) ছেড়ে আসা ওয়ানড় লোকসভা কেন্দ্রে হঠাতই উপনির্বাচনের তোড়জোড় শুরু করে দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। বুধবার কোঝিকড়ে সব রাজনৈতিক দলকে ডেকে মক-পোলের আয়োজন করেছিলেন জেলাশাসক। যা লোকসভা উপনির্বাচনের প্রাথমিক পর্যায়ের প্রস্তুতি হিসাবে দেখা হচ্ছে। তাতেই ধন্দে রাজনৈতিক মহল।

নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কেন্দ্র জনপ্রতিনিধিহীন হয়ে গেলে ৬ মাসের মধ্যে সেই কেন্দ্রে উপনির্বাচন করতে হয়। সেই হিসাবে গেলে নির্বাচন কমিশনের হাতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় আছে উপনির্বাচন করানোর। তাছাড়া রাহুল গান্ধীর মামলা এখনও বিচারাধীন। তিনি যদি গুজরাটের নিম্ন আদালতের রায়ে কোনওরকম স্থগিতাদেশ আনতে পারেন, তাহলে নির্বাচন হবেও না। তা সত্ত্বেও কেন এত তাড়াহুড়ো কমিশনের? বুঝে উঠতে পারছেন না কেরলের বাম ও কংগ্রেস নেতারা।

সূত্রের খবর, রাহুল যদি দ্রুত উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ আনতে না পারেন, তাহলে ওয়ানড়ে উপনির্বাচন হবে। সেটারই প্রস্তুতি কমিশন শুরু করেছে। রাহুলের সান্সদ পদ খারিজ হওয়ার পরই ওয়ানড়ে উপনির্বাচন হলে প্রিয়াঙ্কার (Priyanka Gandhi) প্রার্থী হওয়ার একটা জল্পনা ছিলই। সেটা এবার আরও খানিকটা উসকে গেল।

উপনির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হতেই প্রস্তুতি শুরু করেছে কেরল কংগ্রেস। দিনকয়েক আগেই রাহুল ওয়ানড় ঘুরে এসেছেন। ফের তাঁকে সেখানে যাওয়ার আবেদন জানানো হবে। সঙ্গে বোন প্রিয়াঙ্কাকেও যাওয়ার আবেদন জানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস (Congress)। শোনা যাচ্ছে, উপনির্বাচন হলে রাহুলের জায়গায় কি প্রিয়াঙ্কাকে সাংসদ হিসাবে চাইছে কেরল কংগ্রেস। কোনও কোনও মহল থেকে কানহাইয়া কুমারের (Kanhaiya Kumar) নামও ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

গভীর রাতেও লোডশেডিংতে হাঁসফাঁস বিভিন্ন এলাকার মানুষের-গণশক্তি

ঝড়- বৃষ্টি হোক বা না হোক, লোডশেডিং এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। বর্তমানে তীব্র গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং-এর তীব্রতা। দিন নেই রাত নেই যখন তখন লোডশেডিং। একদিকে তীব্র গরমে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। তার উপর ঘন ঘন লোডশেডিং মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। এমন কোনোদিন নেই যেদিন লোডশেডিং হয়নি। বুধবার গভীর রাতেও লোডশেডিংতে দুর্ভোগ হাওড়া গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষের।

জেলায় প্রথম হওয়া ছাত্রী অর্থাভাবে দিনমজুর! আত্মবিশ্বাসী কার্মা বলছেন, আমলা হবই-আনন্দবাজার

কার্মার চোখে স্বপ্ন সে আমলা হবেই

‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় র‌্যাঞ্চো বলেছিল, ‘‘বাচ্চে, কাবিল বনো! কামইয়াবি ঝক মারকে তুমহারে পিছে আয়েগি!’’ এক প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামের জনজাতি কন্যা কার্মা মুদুলিও র‌্যাঞ্চোর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। তিনি ‘কাবিল’ অর্থাৎ যোগ্য হওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দু’চোখে আইএএস বা আইএফএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন। আর দৃঢ় বিশ্বাস, ‘কামইয়াবি’ অর্থাৎ সাফল্য তাঁর থেকে কিছুতেই দূরে থাকতে পারবে না।

ওড়িশার মালকানগিরি জেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে বাড়ি কার্মার। শহর থেকে বহু দূরে এই গ্রামে মূলত জনজাতিরাই থাকেন। চাষবাসই মূল পেশা। কেউ কেউ দিনমজুরের কাজও করেন। তবে পড়াশোনায় তেমন আগ্রহ নেই। সারা বছর অনটনে ভোগা মানুষগুলো দু’মুঠো অন্নের ব্যবস্থাকেই বেশি গুরুত্ব দেন। বছর কয়েক আগের সুমারি বলছে এখানে শিক্ষার হার ৬ শতাংশ। মেয়েদের পড়াশোনার হার আরও কম। কার্মা সেই গুটি কয়েকের একজন। যিনি শুধু শিক্ষিতই নন, মেধাবীও।

কার্মা খাতার কাগজ কিনতে পারে না, কষ্ট করে যেটুকু কেনে সেখানে পেন্সিল দিয়ে লেখে যাতে মুছে আবার লেখা যায়

দ্বাদশের পরীক্ষায় গত অগস্টে জেলার মধ্যে শীর্ষ স্থান অধিকার করেছিলেন কার্মা। যেখানে তাঁর নিজের বাড়িতেই কেউ অষ্টম শ্রেণি পেরিয়ে নবমেও পা রাখেননি। পরিবার তো বটেই গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে কৃতী তিনিই। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে মালকানগিরির মেধাবী জনজাতি কন্যা কার্মার নাম। যিনি বাণিজ্য নিয়ে দ্বাদশের পরীক্ষায় ৮৮.৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।সেই কৃতিত্ব অর্জনের পর প্রায় এক বছর কেটে গিয়েছে, কার্মার কথা প্রায় ভুলতেই বসেছিলেন দেশবাসী। কিন্তু কার্মা ভুলতে দিলেন না। কার্মা তাঁর কর্মগুণে আবার চলে এলেন খবরের শিরোনামে। নতুন কোনও পরীক্ষায় সাফল্য নয়। কার্মা খবর হয়েছেন সম্পূর্ণ অন্য কারণে।

পরিবারের সাথে কার্মা

সম্প্রতি তাঁর গ্রামে দিনমজুরের কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।তাঁর গ্রামেরই অন্য মহিলারা এই কাজ করে উপার্জন করেন। কেউ কয়লা ভাঙেন, কেউ বা মাথায় করে নিয়ে যান ইট-বালি-সুরকি। পুরোটাই কায়িক শ্রমের কাজ। কলেজের গরমের ছুটিতে কার্মাও সেই কাজই নিয়েছিলেন। আশা ছিল কিছু অর্থ উপার্জন করে পড়াশোনার খরচ জোগাতে সাহায্য করবেন বাবা-মাকে।গত বছর তাঁর সাফল্য দেখে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। উচ্চশিক্ষার জন্য কার্মাকে সাহায্য করেছিল তারা। তাদের সাহায্যেই এখন ভুবনেশ্বরের রমাদেবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়েছেন তিনি। কিন্তু উচ্চশিক্ষার খরচ চালানো তো মুখের কথা নয়!একটি সাক্ষাৎকারে কার্মা জানিয়েছেন, পড়াশোনা চালানোর জন্য খাতা কেনারও ক্ষমতা নেই তাঁর। তাই তিনি পেনের বদলে খাতায় লেখার জন্য পেনসিল ব্যবহার করেন। যাতে লেখা মুছে প্রয়োজন মতো খাতার পাতা আবার সাদা করে ফেলতে পারেন। এবং আবার সেই পাতায় লিখতে পারেন।কার্মা জানেন, এ ভাবে কালি মুছে আবার লেখার সুযোগ জীবন দেয় না। তাই বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করতে চান না তিনি। মাথায় বালির গামলা নিয়ে চড়া রোদে কাজ করতে করতেই তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি, টাকা না থাকলে স্বপ্নপূরণ করতে পারব না। আমার পরিবার হতদরিদ্র। তাই দিনমজুর হিসাবেই কাজ করছি। যাতে আমার পড়াশোনার খরচ আমি নিজেই জোগাতে পারি।’’#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৮

ট্যাগ