স্যোশাল নেটওয়ার্ক এক্স ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া
জাহেদান হত্যাকাণ্ড ইসরাইল ও আমেরিকার নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ
-
ইরানে শহীদদের জানাজার ছবি
পার্সটুডে-ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের কিছুদিন পরেই, দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের জাহেদান শহরে আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সকালে, একটি সশস্ত্র গোষ্ঠি জাহেদান আদালত ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। সতর্ক প্রহরায় থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের ভবনে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এরপর, সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ব্যবহার করে এবং গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু করে। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য "জেইশুজ জুলম" গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছে। সংঘর্ষে ৬ জন শহীদ এবং ১৩ জন আহত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের মধ্য থেকেও ৩ জন নিহত হয়েছে। শহীদদের মধ্যে একটি নবজাতক শিশুও রয়েছে। "এক্স" সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা এই সন্ত্রাসী হামলাকে এমন এক অঞ্চলে সন্ত্রাসী অভিযান বলে মনে করেছেন যেখানে শিয়া এবং সুন্নিরা পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধভাবে বসবাস করে। ইরানিদের এই পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সহাবস্থানের বিষয়টি ইরানের শত্রুদের দুর্বলতার আরেকটি কারণ। পার্সটুডে-র এই নিবন্ধে এ বিষয়ে আমরা কিছু বিশ্লেষণ তুলে ধরবো।
“এক্স” ব্যবহারকারী “মোহাম্মদ বালুচ” লিখেছেন: “শিয়া ও সুন্নিদের রক্ত একসাথে মাটিতে ঝরেছে, মতপার্থক্যের জন্য নয় বরং আমাদের মাঝে যারা বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে চায় সেইসব শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্য। জাহেদানে হত্যাকাণ্ড কেবল ন্যায়বিচারেরই নয় বরং “মানবতার” বিরুদ্ধেও হত্যাকাণ্ড ছিল। কিন্তু আমরা এ দেশের মানুষেরা প্রতিটি শহীদের রক্তের সাথে এক ধাপ বেশি শক্তিশালী হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে শিখেছি।”
“মাহসা সারজুয়ি” আরও লিখেছেন: “ইতিহাসে এটি লিপিবদ্ধ থাকবে যে জেইশ আজ-জুলমের সন্ত্রাসীরা, ন্যায়বিচার চাওয়ার মিথ্যা অজুহাতে, তাদের ইহুদিবাদী প্রভুদের মতো মায়ের কোলে থাকা একটি ৭ মাস বয়সী শিশুকে জীবন্ত গুলি করে হত্যা করেছে।”
“ফাতেমা” বলেছেন: “আমেরিকা জাহেদানের খুনিদের মানবাধিকার কর্মী বলে, অথচ আমরা সত্যটা জানি: সন্ত্রাসী, তারা সন্ত্রাসী।”
তেহরানের এভিন কারাগারে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার কথা উল্লেখ করে এবং তাদের চাপিয়ে দেওয়া ১২ দিনের যুদ্ধের সময়ের কথা উল্লেখ করে আলী মোজতাহিদজাদেহ বলেন: "সন্ত্রাসী অপরাধীদের কাছে একটি মাত্র জিনিসের কোন মূল্য নেই তা হল নিরীহ নাগরিকদের জীবন। সে কারণে তারা একদিন এভিন কারাগারে হত্যাকাণ্ড চালাবে এবং পরের দিন তারা জাহেদান বিচার বিভাগে হামলা করবে। যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের পরিস্থিতিতে সংকট কাটিয়ে ওঠার রহস্য ও উপায় হলো ইরানিদের জাতীয় ঐক্য ও সংহতি।
অপর এক ইউজার "বিতা আরমান" জাহেদান বিচার বিভাগের ওপর সন্ত্রাসী হামলাকে ইরানের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে মার্কিন এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলিদের ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও মনে করেন। তিনি লিখেছেন: "তাদের হাতিয়ার হল জেইশ আজ-জুলমের মতো গোষ্ঠী যারা সাধারণ মানুষ, এমনকি শিশুদের কাছ থেকেও নিরাপত্তা কেড়ে নেয়। ইরানি জনগণের ঐক্য মানে এই পরিকল্পনার পরাজয়।"
"সারা নাজাফি" জাহেদানের সন্ত্রাসী ঘটনাকে গাজার ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলেও মনে করেন। তিনি লিখেছেন: " জাহেদানে আজ যে ঘটনা ঘটেছে তা গাজায় প্রতিদিনই ঘটছে, একই শত্রু সবখানে।"
আরেকজন এক্স ব্যবহারকারী সাগার আলিজাদেও এই লেখাটি পোস্ট করেছেন: “সন্ত্রাসীদের, তাদের ইহুদিবাদী প্রভুর মতো, কোনও লাল রেখা নেই, তারা নারী ও শিশুদের লক্ষ্য করে।”
“মোহাম্মদ মিরানি মুয়াদ্দাব,” আরেকজন এক্স নেটওয়ার্ক কর্মী, জাহেদানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে গাজায় শত্রুর পরাজয়ের ফলাফল বলে অভিহিত করে লিখেছেন: “যখন শত্রুরা গাজায় পরাজিত হয়ে জাহেদানে রক্তপাত ঘটিয়েছে। সীমান্তে অন্ধ হত্যাকাণ্ড ইসরাইল ও আমেরিকার নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ। তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী কারা? জেইশ আজ-জুলম।”
“নাজনিন”ও এক্স-এ দেওয়া পোস্টে গুরুত্বের সঙ্গে লিখেছেন: “জেইশ আজ-জুলম” জাহেদানে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বুঝিয়ে দিলো: ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে তাদের কোনো পার্থক্য নেই। উভয়েরই শত্রু নিরীহ নারী এবং শিশু। কিন্তু ১২ দিনের যুদ্ধে আমরা যেভাবে শিশুহত্যাকারী ইসরাইলকে কঠিন শিক্ষা দিয়েছি, তেমনি তোমাদেরকেও কালো মাটির সাথে মিশিয়ে দেব।”#
পার্সটুডে/এনএম/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।