২৮ তারিখে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না- তা নিয়ে দুরকম বক্তব্য
'বাংলাদেশের এবারের নির্বাচন কঠিন হবে'
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৩ অক্টোবর সোমবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- ইলিশ ধরছে ভারতীয় জেলেরা, নিষেধাজ্ঞায় লাভ কী-প্রথম আলো
- মহাসমাবেশ নিয়ে কৌশলী বিএনপি, মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ-ইত্তেফাক
- এবার নির্বাচন কঠিন হবে: প্রধানমন্ত্রী-যুগান্তর
- ইমামকে চাকরিচ্যুত করা ইউএনওকে বদলি-ডেইলি স্টার বাংলা
- এসডোর গবেষণা দেশে শিশুদের খেলনার মধ্যে উচ্চমাত্রায় বিষাক্ত সীসা–মানবজমিন
কোলকাতার শিরোনাম:
- হুয়াকে নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার মন্তব্যে ‘দুই সুর’ কেন?-আনন্দবাজার পত্রিকা
- মুনাফার দাপটে দুর্ভিক্ষের ভ্রুকুটি আজও-গণশক্তি
- অ্যাকাউন্টে হঠাৎই ২২১ কোটি টাকা! আয়করের নোটিস পেয়ে হতভম্ব শ্রমিক
শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-২৮ অক্টোবর রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, জানতে চেয়েছেন পিটার হাস-প্রথম আলো পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ সময় তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচির কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস পূজা নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরপর কথা হয়েছে ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে বিরাট কর্মসূচি (মহাসমাবেশ) দিয়েছে, সেখানে অনেক লোক নিয়ে আসবে, রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না কিংবা অন্য কিছু করা হবে কি না। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের ওই ধরনের কোনো কর্মসূচি নেই। আমরা মনে করি, তারা (বিএনপি) যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে করে যাবে। শান্তিপূর্ণভাবে যদি করে, তাহলে কিছু বলার নেই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, রাষ্ট্রদূত বলছিলেন তোমরা আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেবে কি না। আমি বলেছি, আসা-যাওয়া বন্ধ কেন করব? ঢাকায় তো সবারই প্রয়োজন, রোগীর ঢাকা আসা প্রয়োজন, বিদেশে যেতে হলে ঢাকায় আসা প্রয়োজন—সব কিছু তো ঢাকাকেন্দ্রিক। কাজেই আসা-যাওয়া বন্ধ করার কোনো প্রশ্নই আসে না।’ তবে এ সম্পর্কে দৈনিক মানবজমিনের খবরের শিরোনাম-ভিন্নরকম। সেখানে লেখা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পিটার হাসের বৈঠকে রাস্তা বন্ধ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়নি-মার্কিন দূতাবাস। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পিটার হাস শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বাধাহীনভাবে জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্ব ব্যক্ত করেছেন।
প্রথম আলোর রাজনীতি বিষয়ক অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, মহাসমাবেশের নামে বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বসে পড়তে পারে—সরকার ও আওয়ামী লীগ এমনটাই সন্দেহ করছে। আর একবার বসে গেলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকা অচল করে দিয়ে সরকারি স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ঘেরাও করতে পারেন। তাই বিএনপিকে সর্বাত্মকভাবে ঠেকানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্ষমতাসীনেরা। বিএনপিকে ঠেকানোর এই কাজ যৌথভাবে করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এবার নির্বাচন কঠিন হবে। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে চলেছে। তাই জোর প্রস্তুতি নিতে হবে। নৌকা যাকে দেওয়া হবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে জয়ী করতে হবে। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিম আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
আর প্রথম আলোতে প্রকাশিত মঞ্জুরুল ইসলামের মতামত কলামে লেখা হয়েছে, সংবিধান অনুসারে আগামী তিন-সাড়ে তিন মাসের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন থাকলেও, নির্বাচন কমিশনের নানারকম প্রস্তুতির খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মতবিনিময় সভা ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।গত ৪ অক্টোবর নির্বাচন ভবনে ‘অবাধ ভোটাধিকার, প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্য দেন সিইসি। সেখানে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের লিগ্যালিটি (আইনগত দিক) দেখবে, নির্বাচনের লেজিটিমেসি (বৈধতা/ন্যায্যতা) নিয়ে মাথা ঘামাবে না।নির্বাচন নিয়ে সিইসির এ বক্তব্যকে হালকাভাবে নেওয়া বা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাঁর বক্তব্য থেকে এমনটা মনে হওয়া স্বাভাবিক, দেশে আরেকটি ‘একতরফা’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এ কারণেই তিনি নির্বাচনের লেজিটিমেসি নিয়ে মাথা ঘামাতে চাচ্ছেন না, শুধু লিগ্যালিটি দেখবেন।
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে লেখা হয়েছে, মহুয়া-বিতর্কে তৃণমূলের অবস্থান কী? টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে অভিযুক্ত কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে কী কোনও পদক্ষেপের কথা ভাবছে তৃণমূল? এখনও তা স্পষ্ট নয়। তবে মহুয়া-বিতর্কে দু’রকম সুর শোনা গেল তৃণমূলের অন্দরে। এক জন ডেরেক ও’ব্রায়েন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। অন্য জন, ফিরহাদ হাকিম। রাজ্যের মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র। ডেরেক জানাচ্ছেন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। কিন্তু ফিরহাদ আগেই বলে দিচ্ছেন, মহুয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তা হলে মহুয়াকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান ঠিক কী? তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলছেন, ‘‘কোনও মন্তব্য নয়।’’
মুনাফার দাপটে দুর্ভিক্ষের ভ্রুকুটি আজও-গণশক্তি পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, স্মারকলিপিতে সিপিআই সদস্যরা তুলে ধরেন যে ’৪৩ সালের কায়দায় মজুতদারি শুরু হয়েছে। হক মন্ত্রীসভার মতোই লিগ সরকারও কালোবাজারিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। ঘাটতি অঞ্চলে চালের দাম সরকার নির্ধারিত মণ পিছু ১৫ টাকা ছাড়িয়ে ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।স্মারকলিপিতে সিপিআই’র জন প্রতিনিধিরা আবার ৪৩ সাল ফিরে আসা ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্যনীতি গ্রহণের দাবি জানান।সিপিআই’র তরফে বলা হয়, মজুতদারের মজুতের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বলবৎ করতে হবে। তাদের ধান, চাল কেনার লাইসেন্স বাতিল করতে হবে অবিলম্বে। মজুতদারি বিরোধী সমস্ত আইন কঠোর ভাবে কার্যকরী করতে হবে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২৩