জুন ০৭, ২০২১ ২১:২৮ Asia/Dhaka

প্রাচীনকাল থেকেই ইরানের ভৌগোলিক অবস্থান ভূ-রাজনৈতিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহাসিক সিল্ক রোডটিও ইরানের ওপর দিয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে পারস্য উপসাগরের মাধ্যমেও ইরান যুক্ত হয়েছে বহির্বিশ্বের সঙ্গে। ভবিষ্যতের বিশ্ব অর্থনীতিতে ইরানের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ইরানের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হল এর জ্বালানি সম্পদ। ইরানে রয়েছে বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল মজুদ। তেল মজুদের পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে ইরানের অবস্থান চতুর্থ বৃহত্তম। তাছাড়া অনেক দেশের তুলনায় ইরানে তেল ও গ্যাস উত্পাদন ব্যয় কম। পেট

ইরানের বাগ-বাগিচায় উৎপন্ন বিভিন্ন ধরণের পণ্য বিশ্বে অনন্য। বাগ-বাগিচায় উৎপন্ন পণ্য উৎপাদনের দিক থেকে ইরান তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ১৫ টি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যানজাত পণ্য রয়েছে ইরানের। বিশ্বে ২৫ টি প্রধান উদ্যানজাত পণ্যের মধ্যে ১৫ টি পণ্য ইরানে উত্পাদিত হয়। এ ধরণের উদ্যানজাত পণ্যের মধ্যে রয়েছে পেস্তা, খেজুর, ডুমুর, আপেল, জয়তুন, আঙ্গুর, ডালিম এবং চেরি।  উল্লেখ করার মতো একটি বিষয় হলো উচ্চতর ওষুধি গুণ সম্পন্ন কিছু পণ্য যেমন জাফরান, বার্বি এবং জিরা ইত্যাদি মূল্যবান পণ্যগুলির অন্যতম বৃহত্তম উত্পাদনকারী ইরান। খনিজ সম্পদ মজুদের দিক থেকে ইরানের অবস্থান সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম। কারও কারও মতে সমৃদ্ধ খনি এবং উচ্চ খনিজ মজুদের কারণে বিশ্বে খনির স্বর্গরাজ্য হলো ইরান। ইরান লোহা, দস্তা, সিসা, মার্বেল, তামা এবং সোনার বেল্টে অবস্থিত।

সে কারণেই এখানে রয়েছে বিচিত্র খনি যেমন: তামার খনি, লোহার খনি, আকরিক লোহার খনি, কয়লা খনি, সোনার খনি এবং ফিরোজা পাথরের খনিসহ আরও বহু রকমের খনি। ইরানের লাল স্বর্ণ হলো জাফরান। জাফরান চাষ সহজ কাজ নয়। আবহাওয়াগত বৈচিত্র্য, উর্বর মাটি এবং কষ্ট সহিষ্ণু পরিশ্রমী মানুষের কাজ জাফরান চাষ। আর ইরানের পরিশ্রমী কৃষকদের কল্যাণে এ দেশের মাটি হয়ে উঠেছে আল্লাহর নিয়ামতে পরিপূর্ণ। ইরানের মাটি বিশ্বব্যাপী পরিচিত ও খ্যাত বিচিত্র উদ্ভিদের জন্য অনুকূল। খ্রিষ্টপূর্ব কাল থেকেই তাই ইরান ভূখণ্ডে বিচিত্র উদ্ভিদের চাষ হয়ে আসছে। বলা হয়ে থাকে যে ইরানিরাই সর্বপ্রথম জাতি যারা এইসব মূল্যবান উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে এবং এগুলোর চাষবাস করে এসেছে দীর্ঘকাল আগে থেকে।

ইরানের বিখ্যাত একটি পণ্য যা কালোমুক্তা নামে পরিচিত তা হলো ক্যাভিয়ার। ক্যাভিয়ার বা স্টার্জেন মাছ আঁশবিহীন। দেখতে লম্বা,প্রায় ১ থেকে ২ মিটারের মতো। মাথার দিক থেকে লেজের দিকে ক্রমশ চিকন। আঁশ না থাকায় এই মাছ দ্রুত চলতে পারে। তুলনামূলকভাবে জলের বেশ গভীরে বাস করে এই মাছ। এক হাজার কেজি পর্যন্ত ওজন হয় কোনো কোনো ক্যাভিয়ারের। পৃথিবীর সমুদ্র তলদেশের বিস্ময় এই ক্যাভিয়ার মাছ বিশেষ করে যে পাঁচটি বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির কথা বললাম, বিভিন্ন রঙের হয়। ক্যাভিয়ার মাছ এবং এই মাছের ডিম দুটোই সারাবিশ্বে বেশ দামি খাদ্যপণ্য। সুতরাং ক্যাভিয়ার চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের মধ্য দিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য আসতে পারে যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ সুগম করবে।

ইরানি গালিচার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। আগে ছিল হাতে বোণা কার্পেট। এখন হাতে বোণা কার্পেটের পাশাপাশি মেশিনে তৈরি কার্পেটও ব্যাপকভাবে উৎপাদন হচ্ছে। ইরানি কার্পেট কেবল একটি পণ্যই নয় এটি একটি শিল্প, সৃজনশীল শিল্প। ইরানি জাতীয় সংস্কৃতির সমষ্টিগত একটি অভিব্যক্তি ও প্রতীক এই কার্পেট। ইতিহাসের দীর্ঘ কাল পরিক্রমায় এই শিল্পটি ইরানের ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী সমুন্নত রেখেছে। কাঁচ শিল্প, চামড়া শিল্প, খাদ্য শিল্প,লাল ইয়াকুত বা চুনি এবং নীল ইয়াকুত বা নীলচুনি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, সড়ক নির্মাণ, ভবন নির্মাণ শিল্প,'জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনীতি'র ক্ষেত্রে 'সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি টাউন' বা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপশহর নির্মাণ, মৃৎ শিল্প, সামরিক শিল্প, ন্যানো শিল্প, পরমাণু প্রযুক্তি শিল্প ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই ইরান এখন ব্যাপক অগ্রসর। 

আমাদের এই অনুষ্ঠানগুলো আমাদের ওয়েব সাইট পার্সটুডে ডট কম স্ল্যাশ বিএন-এ আপলোড করা আছে। আপনারা যারা বিস্তারিত জানতে আগ্রহী তারা ওয়েব সাইট ভিজিট করতে পারেন। তো বন্ধুরা! হাতে আজ আর সময় নেই। যারা দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের সঙ্গে ছিলেন সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। #

পার্সটুডে/নাসির মাহমুদ/ মো:আবু সাঈদ/০৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ