নভেম্বর ২৬, ২০২১ ১৮:২০ Asia/Dhaka

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দিতে আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে আবারো জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক -সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সরকারের এ মুখপাত্র বলেছেন, বেগম জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সত্ত্বেও যে ধরনের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন, তা প্রধানমন্ত্রীর উদারতার জন্য সম্ভব হচ্ছে। তার ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসকই তার চিকিৎসা করছেন। স্লো পয়জনিং করলে বিএনপির লোকেরাই করছেন। এখানে আওয়ামী লীগকে জড়াচ্ছেন কেন? 

ওদিকে, সরকারর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওামীলীগের যুগ্ম সাধারণ্ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ  বলেছেন, বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে একটি অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চায়। বিদেশ গিয়ে বেগম জিয়া রাজনীতি করতে পারেন। যেটি এখন করছেন তারেক রহমান।

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে গতকাল যে ভাষায় কথা বলেছেন, তাতে মনে হয়েছে বেগম জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন তা তিনি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। 

তবে, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আজ দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, একটি দানবীয় সরকারের কাছ থেকে মানবিক আচরণ চেয়ে কোন লাভ নেই। বেগম জিয়া নাগরিক হিসেবেই সুচিকিৎসা পাবার অধিকারী।

বিদেশে সুচিকিৎসা দেওয়ার দাবি  মওলানা ভাসানীর পরিবার

এদিকে, গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়াকে বিদেশে সুচিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর  পরিবার। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভাসানীর পরিবারের ৫ সদস্য খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। ৩০ মিনিট তারা হাসপাতালে অবস্থান করেন।

হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ভাসানী পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট মেয়ে মাহমুদা খানম ভাসানী। তিনি বলেন, বেগম জিয়া কথা বলতে পারছেন, তবে খুব ধীরে ধীরে। তিনি খুবই দুর্বল। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাকে বিদেশে পাঠিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

ভাসানীর নাতি হাবিব হাসান মনার বলেন, আমরা খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম। তার ডাক্তাররা বলেছেন, বেগম জিয়ার অবস্থা খারাপ। তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানাই ভাসানী পরিবারের পক্ষ থেকে। খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়া ভাসানীর পরিবারের অন্য সদসরা হলেন- ভাসানীর বড় মেয়ে রিজিয়া ভাসানী, নাতনি সুরাইয়া সুলতানা।

রোগমুক্তি কামনায় দোয়া  মাহফিল অনুষ্ঠিত

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনায় বাদ জুমা সারাদেশের মসজিদে দোয়ার আয়োজন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে দলের পক্ষ থেকে জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়েছে।

দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক। দোয়ায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মহানগর বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, প্রমুখ।

এর আগে বেলা ১১টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে অবস্থান নিতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। পরে কয়েক হাজার নেতাকর্মী বায়তুল মোকাররমে আসেন। নামাজ শেষে  নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে বায়তুল মোকাররম ত্যাগ করেন।

জুম্মার নামাজের আগে থেকেই বায়তুল মোকাররম ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।#

 

পার্সটুডে/আব্দুুর রহমান খান/বাবুল আখতার/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ