সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে জনগণকে বোকা বানানোর জন্য: মির্জা ফখরুল
বাংলাশেশে নতুন একটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করতে আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে বৈঠকে বসছে সরকার গঠিত সার্চ কমিটি।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ইতোমধ্যে ৩২২ জনের নামের প্রস্তাব পেয়েছে সার্চ কমিটি। কমিটি গত রবিবারের বৈঠকে দীর্ঘ তালিকা কাটছাট করে ১২-১৩ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেছে। এদের মধ্য থেকে আজ ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হবে।
এর পর ২৪ তারিখ এ তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া হবে। অতঃপর রাষ্ট্রপতি একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচজনের নাম ঘোষণা করবেন। সংবিধানের বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন।
এদিকে, সার্চ কমিটির একটি সূত্র জানায়, সংক্ষিপ্ত তালিকায় সামরিক ও বেসামরিক সাবেক আমলা, সাবেক বিচারক ও শিক্ষকের নাম রয়েছে। চূড়ান্ত তালিকাতেও এর প্রতিফলন থাকতে পারে।
তবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আগে থেকেই আশংকা প্রকাশ করে আসছে যে, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতাসীন হওয়ার জন্যে তাদের পছন্দ মতো করেই একটি তাঁবেদার কমিশন গঠন করবে।
আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কৃষক দলের এক প্রতিবাদসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নতুন আইন প্রণয়ন করে একটা সার্চ কমিটি গঠন– এসব করা হয়েছে জনগণকে বোকা বানানোর জন্য। বিদায়ী সিইসির মতো ব্যক্তিদের নামের তালিকাই সার্চ কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। চূড়ান্তভাবে যাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে দেখা যাবে যে সেই নুরুল হুদা মতোই লোক হবে।
বিদায়ী সিইসির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, বাংলাদেশের মানুষের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করে দেওয়া এজন্য তো তার বিচার হতে হবে। তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, অবশ্যই দাঁড়াতে হবে।
এর আগে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ১০ জনের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর তিন দিন আগে তা জনগণের অবগতির জন্য প্রকাশ করার হোক।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘অনুসন্ধান কমিটি যে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছে তা জনগণের কাছে প্রতীয়মান হতে হবে। এছাড়া, কী মানদণ্ডের ভিত্তিতে এবং কী পদ্ধতিতে কমিটি তার বিবেচনাধীন ব্যক্তিদের সুনাম যাচাই করবে, তাও জনগণকে জানানো জরুরি। কমিটি যা প্রকাশ করেছে তাতে পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়নি। কারণ, কাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তা প্রকাশ করলেও কারা প্রস্তাব করেছে, তা কমিটি প্রকাশ করেনি। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অসম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করলে বা তথ্য গোপন করলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয় না।’
সংগঠনটির সভাপতি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান বলেছেন, ‘বিবেচনাধীন ব্যক্তিদের পরিচয়, প্রস্তাবক ইত্যাদি জানাতে হবে। তাহলে স্বচ্ছতার পথে অগ্রগতি হয়েছে বলা যাবে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আগে সে বিষয়ে কিছু হবে কি না সন্দেহ আছে। তবে একটা ভালো নির্বাচন কমিশন অন্তত হোক।’#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২২