দুর্নীতি করে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল
'দুর্নীতি করে সরকার দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। যদি ভালোয় ভালোয় বিদায় নিতে চান তবে দুর্নীতি বন্ধ করেন। তা না হলে আপনাদের পিঠের চামড়া এদেশে থাকবে না'। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার মিথ্যা কথা বলে, মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজেদের দুর্নীতি ও চুরি করে বাংলাদেশকে ফোকলা বানিয়ে দেওয়ার তথ্য ঢাকতে চায়। তারা মিথ্যাচারের কৌশল নিয়েছে। যত কিছু্ই করেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে তাদেরকে আটকিয়ে রাখা যাবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এভাবে টিকে থাকা যাবে না। মিথ্যা কথা বলে, জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, প্রতারণা করে টিকে থাকা যাবে না।’
এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে এই সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেটাই তাদের (আওয়ামী লীগ) একমাত্র রক্ষা পাওয়ার উপায়। এছাড়া তাদের রক্ষার কোন উপায় নেই।
নেতা কর্মীদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কথা খুব পরিস্কার- দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে এবং মজনুসহ সমস্ত রাজনৈতিক নেতা কর্মীদেরকে মুক্ত করতে হবে। সেই মুক্তি করতে হলে আমাদের আন্দোলন ছাড়া কোন বিকল্প নাই। আর আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে হবে। তাদেরকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
‘নেতাকর্মীদেরকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বিএনপিকে আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শুধু বিএনপি নয়, সমস্ত দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে এবং সমস্ত নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
‘বিএনপির নেতাদের কান কাটা’ ক্ষমতাসীন নেতাদের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের যদি কান কাটা হয় তাহলে আপনাদের তো দুই কান কাটা। দুই কান কাটার কি হয়? দুই কান কাটা বলতে, লজ্জা-শরম বলতে কিছু থাকে না। এভাবে টিকে থাকা যায় না। মিথ্যা কথা বলে, জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, প্রতারণা করে টিকে থাকা যাবে না।
আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিলো উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার সম্পূর্ণভাবে একটা প্রতারক সরকার এবং জনগণের বিরুদ্ধের সরকার। এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার, যারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। যারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, গায়ের জোরে বন্দুক- পিস্তল দেখিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে- তাদেরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। তিনি বলেন, ‘কারণ এরা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। আজকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণের কোন সম্পর্ক নাই। একটাই মাত্র কারণ, আওয়ামী লীগ আসলেই সম্পূর্ণভাবেই একটা মিথ্যাবাদী প্রতারক দল।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল ৯ থেকে ব্যানার ও ফেসন্টুনসহ খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মীরা প্রেসক্লাবে সমাবেত হতে শুরু করেন। মিছিল থেকে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তুলেন।
এদিকে দক্ষিণ বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে প্রেসক্লাবসহ এর আশপাশের এলাকার কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীসহ অতিরিক্তি পুলিশ সদসদেরও মোতায়েন করা হয়।
নগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।#
পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/রেজওয়ান হোসেন/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।