দেশজুড়ে ভ্যাপসা গরম: পানি বাড়ছে দক্ষিণের নদীতে
দেশজুড়ে ভ্যাপসা গরম ছড়িয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের ২৭ জেলার ওপর দিয়ে। আগামী তিন দিনের মাথায় বৃষ্টি হতে পারে। এরপর গরমের তীব্রতা কমে আসবে। আজ শুক্রবার এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীতে দুই মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ সকালে এবং দুপুরেও দু’পশলা বৃষ্টি হলেও গরম কমেনি।
আবহাওয়া অফিস বর্তমানে ঢাকা, টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, চুয়াডাঙ্গা এবং রংপুর বিভাগের আট জেলা, রাজশাহী বিভাগের আট জেলা ও সিলেট বিভাগের চার জেলাসহ মোট ২৭টি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাছে, যা আরো তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর তৃতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সৈয়দপুরে ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া রংপুরে ৩৭.৯ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৩৭.১ ডিগ্রি, ঈশ্বরদী ও শ্রীমঙ্গলে ৩৭.০ ডিগ্রি, তেঁতুলিয়ায় ৩৬.৮ ডিগ্রি, বগুড়ায় ৩৬.৭ ডিগ্রি, ডিমলায় ৩৬.৬ ডিগ্রি, টাঙ্গাইল, চুয়াডাঙ্গা, ফেনী ও তাড়াশে ৩৬.৫ ডিগ্রি, ঢাকা, কুমিল্লা ও রাজারহাটে ৩৬.৩ ডিগ্রি, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর ও বদলগাছীতে ৩৬.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণও হতে পারে।
এ সময় গরম বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ সম্পর্কে আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, দেশের ওপর দিয়ে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় এবং বাতাসে আর্দ্রতা রয়েছে। । এ ছাড়া বৃষ্টির পরিমাণও কমে রয়েছে । তবে আগামী সপ্তাহের শুরুতে এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার আশা করছেন তাঁরা।
দক্ষিণের নদীতে পানি বাড়ছে
এদিকে, ভরা পূর্নিমার প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর তীরের জনপদ, চরাঞ্চল দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অধিকাংশ স্থানের গ্রামবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। হাজার হাজার একর ফসলী জমিও পানির নিচে রয়েছে। জোয়ারের পানির স্রোতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লালুয়া, চম্পাপুর ও মহিপুর ইউনিয়নের ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জানিয়েছে, বর্ষা মৌসুমে বিভাগের মোট ২৩টি নদীর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ নদীর পানিই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ দশটি নদী হচ্ছে: বরিশাল বিভাগীয় শহর সংলগ্ন কীর্তনখোলা, ভোলার সংলগ্ন তেতুলিয়া ও মেঘনা, ঝালকাঠীর বিষখালী, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পায়রা ও বুড়িশ্বর নদী এবং পিরোজপুরের বলেশ্বর নদী।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/১৫