সংলাপ নাকচ করলেও বিএনপির জন্য অপেক্ষা করবে নির্বাচন কমিশন: সিইসি
(last modified Wed, 20 Jul 2022 14:04:23 GMT )
জুলাই ২০, ২০২২ ২০:০৪ Asia/Dhaka
  • সংলাপ নাকচ করলেও বিএনপির জন্য অপেক্ষা করবে নির্বাচন কমিশন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল  জানিয়েছেন, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন কমিশনের ডাকা চলমান সংলাপ প্রত্যাখ্যান করলেও তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবে।

আজ  বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে  সিইসি  এমন মন্তব্য করেন। 
তবে বিএনপিকে সংলাপে আনার জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ নিবেন কিনা জানতে চাইলে এর কোনো উত্তর দেননি সিইসি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো পার্টি সংলাপে অংশ নিয়েছে, তাদের সকলের মনোভাব ইতিবাচক। তারা ভালো নির্বাচন যাতে হয়, ভোটাররা যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন। আমরাও বলেছি সত্যিকার অর্থে এটিই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব। প্রত্যেকটা ভোটার যেন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এটাই গণন্ত্রের ভিত্তি। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রতিটি দলই বলেছে তারা ঐক্যমত্যে বিশ্বাস করে। ঐক্যমত তো হতেও পারে, নাও হতে পারে।

কিন্তু আমরা বলেছি আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখবো। এই বিষয়ে কেউ না করেনি। প্রয়াসটি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন,  আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বলেছি আপনারা ঐক্যের চেষ্টা করুন এবং ঐক্য হলে আমরা আনন্দিত হবো। আর আমরা যে দায়িত্ব নিয়েছি, আইন কানুন এবং সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করার, সেই দায়িত্বটা পালন করে যাবো।

এই সংলাপের মধ্য দিয়ে ইসির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর অনাস্থা দূর হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসির প্রতি অনাস্থা সবসময় আছে বা নাই দুটোই বাস্তব।  একটা দলের হয়তো অনাস্থা আছে। আবার  যারা  আমাদের সাথে বসেছে তাদের প্রত্যেকের আমাদের প্রতি আস্থা আছে।

বারবার ডাকলেও  সংলাপে যাবেনা  বিএনপিঃ মির্জা আব্বাস 

 বিএনপি’র  স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস  বলেছেন,  বারবার ডাকলেও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপে যাবে না তার  দল।  আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন কমিশন বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে চেয়েছিল। আমরা সেখানে যাইনি কারণ আমরা নির্বাচন কমিশন বুঝি না, নির্বাচন কমিশন চিনি না, মানি না। আমরা চাই এই সরকার থাকবে না। সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা যাব।

সিইসি বলেছেন, বিএনপিকে বারবার ডাকবো। আপনাকে সাধুবাদ জানাই। বারবার ডাকবেন এই কারণে যে, বিএনপিকে ছাড়া আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। বাংলাদেশে কারো সাধ্য নেই বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করা। এই ব্যর্থ, দুর্বৃত্ত সরকারকে আমরা কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেবো না।

মির্জা আব্বাস  সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ক্ষমতা ছাড়েন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন। তারপর যদি ক্ষমতায় আসেন আপনাদের আমরা মাথায় তুলে নাচবো। বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকবেন এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনো মানবে না। 

তিনি বলেন, কাদের সাহেব বলেন বিএনপি নির্বাচনে না এলে কিছু আসে যায় না। সিইসি বলেন বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না। বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না; দেশের মানুষ বোঝে, আওয়ামী লীগ বোঝে, সিইসি বোঝে কিন্তু এই সরকার বোঝে না। কারণ সরকার জানে নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই, নির্বাচন ছাড়াই তারা আবারও ক্ষমতায় আসবে।

শীর্ষ নেতাদের মতামত নিচ্ছে  বিএনপি

 দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের করণীয় ঠিক করতে শীর্ষ নেতাদের মতামত নেওয়া শুরু করেছে বিএনপি। গত দুই দিনে ভার্চুয়ালি আলাদা আলাদাভাবে চেয়ারপার্সনের চারজন উপদেষ্টার মতামত শোনেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এভাবে ধারাবাহিকভাবে দলের সিনিয়র নেতাদের মতামত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

প্রথম দিন গত রবিবার অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন (ভিপি) ও এসএকে একরামুজ্জামান এবং দ্বিতীয় দিন সোমবার সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ও আতাউর রহমান ঢালী তাদের মতামত তুলে ধরেন। এসব নেতার মধ্যে দুজনের সঙ্গে এবং অন্য দুজনের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের টেলিফোনে কথা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই নেতা বলেন, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্কাইপির মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তাদের ওয়ান টু ওয়ান কথা হয়েছে। সেখানে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নিরপেক্ষ সরকার আন্দোলন, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গঠন বিষয়ে তারা তাদের মতামত দিয়েছেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনসহ দেশের সার্বিক রাজনৈতিক চিত্র বিশ্লেষণ করেন এই নেতারা। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে জোরালো মত দেন তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না- এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। বরং কিভাবে এই সরকারকে বিদায় করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে। একটা কথা স্পষ্ট, আগামী নির্বাচন হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে। কারণ, বিএনপিবিহীন আরেকটি নির্বাচন করার এই সরকারের ক্ষমতা নেই। এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির পর দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পুরোদমে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি। গত সোমবার তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। #

এআরকে/২০

ট্যাগ