নভেম্বর ২৯, ২০২২ ১৯:১৫ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে গেল কয়েকটি বছরের স্কুল সমাপনী বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের পরিসংখ্যান বাদ দিলে এর আগের বছরগুলোর তুলনায় পাসের হারে এবার বড় ধরনের হেরফের নেই। বরং ২০১৯ বা ২০২০ সালের তুলনায় এবার পাসের হার খানিকটা বেশি। চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেনি ২ লাখ ৫০ হাজার ৫১৮ জন। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের এই সংখ্যা গত বছরের চেয়ে এক লাখেরও বেশি।

প্রশ্ন উঠেছে, আগের বছরের তুলনায় এবার পাসের হারে কেন এত অবনতি? এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, গতবার কম বিষয়ের কারণে পাসের হারও বেশি ছিল। শর্ট সিলেবাসে তারা বেশি সুযোগ পেয়েছে। 

ফলাফলের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছরের চেয়ে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার কমলেও জিপিএ ফাইভ বেড়েছে প্রায় ১ লাখ। চলতি বছর জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থী। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর শেখ একরামুল কবির রেডিও তেহরানকে বলেন, এই পাস ফেলের হার কম বেশিতে তেমন কিছু আসে যায় না। কারণ সংখ্যাতাত্ত্বিক পরীক্ষা পাসের চেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রজন্ম দরকার দেশের প্রয়োজনে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলো তার বড় অভাব বলেই মন্তব্য করেন নায়েমের এই সাবেক মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা সংযুক্ত তারা দায় এড়াতে পারেন না। কারণ অনেক অভিভাবক পরীক্ষার ফলাফলকেন্দ্রীক শিক্ষাপদ্ধতিতে সন্তুষ্ট থাকলেও শিক্ষিত প্রজন্ম তৈরি করতে মূল কাজটি করতে হবে শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টদেরই। 

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক রেডিও তেহরানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, করোনা পরবর্তী শিক্ষাবর্ষগুলোতে পরীক্ষার ফলাফলে অনেকটা গড় মিল দেখা গেছে। কারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা সেভাবে হয়নি। তবে এসব ফলাফলের চেয়ে শিক্ষার্থী জ্ঞান উপার্জন খুব জরুরি। কারণ জিপিএ ফাইভ প্রাপ্তিতে সন্তুষ্টির ঢেকুর তোলা অনেক শিক্ষার্থীকে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তিপরীক্ষায় আটকে যাওয়ার ঘটনাও দেখা যায়। এইসএসসি পরীক্ষার পর ডাবল জিপিএ ফাইভ কিংবা গোল্ডেন ফাইভ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী মেধাক্রমে চান্স না পাওয়ার ঘটনাও আছে। তাই জ্ঞানার্জনভিত্তিক শিক্ষা খুব জরুরি বলে মনে করেন এ শিক্ষাবিদ। নইলে আগামীতে ভয়াবহ পরিণতির জন্য অপেক্ষার শঙ্কা ঢাবির এই সাবেক ভিসির।#

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ