চোখ রাঙাচ্ছে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু
দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা ও ভাঙ্গনের আশঙ্কা, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে পানি বাড়ছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে। তিস্তার উজানে ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা অংশে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে পানি ছেড়ে দিয়েছে দেশটির সরকার।
ফলে বাংলাদেশের তিস্তায় হঠাৎ দেখা দিয়েছে বন্যা। কোন কোন এলাকায় পানি নামতে শুরু করলেও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। নষ্ট হয়েছে ফসল,এখনো নিম্নাঞ্চলের অনেক রাস্তা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। বন্যার আতঙ্ক কমলেও এবার ভাঙন আতঙ্কে পড়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। এ ছাড়া হঠাৎ পানি বাড়ায় রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আবাদি জমি ও আমন ক্ষেত জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। শুধু আবাদি জমিই নয়, তিস্তার দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চল পানিতে ডুবে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দেখা দিয়েছে শুকনো খাবারের সংকট।
তবে,বন্যাকালীন মানুষের জন্য জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। এছাড়াও,নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষকে সতর্ক করতে মাইকিং করার পাশাপাশি, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানালেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
আর কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান,ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং হ্রদে পানির পরিমাণ বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায়,সেখানকার বাঁধটি খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে,ভারতীয় অংশে তিস্তার পানি দ্রুত বাড়ছে এবং কুড়িগ্রাম জেলায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে,বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
গতরাতে একটানা বৃষ্টিতে রাজশাহী শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। কখনো হালকা থেকে মাঝারি, কখনো ভারী বৃষ্টিপাতে নগরীর নিচু এলাকাগুলো রাত থেকেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়িতেই ঢুকে পড়েছে পানি।
অনেকটা একই অবস্থা রাজধানীর ঢাকার চিত্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি। সন্ধ্যা নামতেই রাজধানী-জুড়ে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়,যা আজ শুক্রবারেও চলমান। ছুটির দিনে বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে জলজট।
ঢাকা আবহাওয়া অফিসের মেট্রোলজিস্ট হাফিজুর রহমান জানান,আজ শুক্রবার থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টা দেশের সব বিভাগেই বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।এ সময় সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
একই সাথে,দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।ফলে,দেশের সমুদ্র ও নদী বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানোর নির্দেশ দেয়া হয়। আবহাওয়া অফিস বলছে,বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে অবস্থান করছে।এছাড়া,মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। #
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/০৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।