বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি; নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ
মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির অন্তত ৩০ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপে রাতভর যুদ্ধের পর মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ফাঁড়ি দখলে নেয় আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।
এ অবস্থায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের ৩০ সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের তুমব্রু ফাঁড়িতে। আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার সীমান্ত সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় এসেছেন।
এদিকে, মিয়ানমারে গোলাগুলির বিকট শব্দে আতঙ্ক বিরাজ করছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে। উদ্বিগ্ন অবস্থায় রয়েছেন সেখানের বাসিন্দারা। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে চলছে নানা আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ ও ব্যাপক গোলাগুলির মুখে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্যই বাংলাদেশে এসে অস্ত্র জমা দিয়ে বিজিবির কাছে আশ্রয় নিয়েছে। রবিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, জীবন রক্ষার্থে পালিয়ে এসে অস্ত্র জমা দিয়ে বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার পুলিশ-বিজিপি সদস্যদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
আর মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনার নিরসনে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমারে আভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের কারণে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীদের মাঝে উৎকণ্ঠা বেড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি রাখাইনে আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লড়াই দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং রাখাইনে যদি একটা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়, তখন রাখাইনে বসবাসকারী প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার জোর চেষ্টা করবে। যা এই মূহূর্তে বাংলাদেশের জন্য খুব সুখকর কিছু হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই।#
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/আশরাফুর রহমান/৪