বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন বৃদ্ধি: করণীয় সম্পর্কে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ
বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সংসদীয় কমিটির সর্বশেষ সভায় বেশ কিছু সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়ে এখন গণমাধ্যম বিশেষ সহায়তা দিচ্ছে। এজন্য মানুষ আগের চেয়ে বেশি নির্যাতনের কথা জানতে পারছে।
কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেন, নারীদের সচলতা বৃদ্ধি, কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি, আধুনিকতার ছোঁয়া, তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ইত্যাদি কারণে কিছু সমস্যা ও সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে হবে। তাছাড়া, শিশুদের সুরক্ষার ব্যাপারে অবশ্যই অভিভাবকদের অধিকতর মনোযোগী হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বিপ্লবী নারী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক আমেনা বেগম রেডিও তেহরানকে বলেন, নারী ও শিশু সুরকক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে পরিবার থেকেই সতর্কতা থাকতে হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ব্যাপারে সতর্কতামূলক পরামর্শ বা শিক্ষা প্রদান করতে হবে এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর রাষ্ট্রকে অবশ্যই এ ব্যাপারে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে সংসদীয় কমিটির সভায় কমিটির সদস্য বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি লুৎফুন নেসা খান বলেন, দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়েই চলছে, যা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দুই বছরের শিশুও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। প্রতি মহল্লায় কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। তারা চুরি, খুনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বড় বড় মাস্তান এবং সন্ত্রাসী এদের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যৌন উত্তেজক ভায়াগ্রা ও মাদক সেবনকারীদের নিজেদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নানা অপরাধ ঘটিয়ে চলছে।
লুৎফুন নেসা খান আরো উল্লেখ করেন, সামাজিক আনাচার প্রতিকারে এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের অনেক কর্মসূচি রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন কমিটি রয়েছে। কিন্তু তারপরও নারী ও শিশুতের প্রতি সহিংসতা বন্ধ নেই। তিনি এর প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তীব্র সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে কমিটিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব করেন।
এ প্রসঙ্গে সংসদীয় কমিটির সর্বশেষ সভায় বেশ কিছু সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- জনপ্রতিনিধিরা নিজ নিজ এলাকায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের করণীয় নির্ধারণ করে নাগরিক ও স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তাছাড়া, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কার্যকর সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৯
খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন