বাংলাদেশে করোনায় আরো ১৬ জনের মৃত্যু, গবেষণার ফলাফল নিয়ে বিভ্রাট
(last modified Wed, 14 Oct 2020 12:47:44 GMT )
অক্টোবর ১৪, ২০২০ ১৮:৪৭ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশে করোনায় আরো ১৬ জনের মৃত্যু, গবেষণার ফলাফল নিয়ে বিভ্রাট

বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত য়ে ১৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ সংখ্যা গতকালের চেয়ে কম। গতকাল ২২ জন মৃত্যুবরণ করার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।

আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৫৯৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজকের মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ৭ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।

সর্বশেষ এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৭৬ জন। গতকাল জানানো হয়েছিল  ১ হাজার ৪৮২ জন সুস্থ হবার কথা। আজকের সংখ্যা নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৪৯ জন।

সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেশি।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৪১১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৮৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ৮১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৩৭ জন।

দেশে এ পর্যন্ত মোট ২১ লাখ ১২ হাজার ৪৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৫৯ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনা ভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ১৬৯ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ২১ জনের। গতকালের চেয়ে ১৪৮টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ১০৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৪১১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৮১৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৯৬টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

করোনা গবেষণার ফলাফল নিয়ে বিভ্রাট

ওদিকে ঢাকা মহানগরীতে করোনার প্রকোপ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) পরিচালিত যৌথ গবেষণা ফলাফল নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির হয়েছে। গত সোমবার করোনা বিষয়ে আইইডিসিআর ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) যৌথ গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করে জানানো হয় ঢাকা শহরে ৪৫ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আর বস্তির মানুষের মধ্যে এই হার ৭৪ শতাংশ। ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা।  অধ্যাপক মীরজাদী আইইডিসিআরের পরিচালক থাকার সময় এই গবেষণার কাজ শুরু হয়েছিল।

এ খবরটি গুরুত্ব সহকারে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টায় আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানিয়েছেন,  ঢাকা শহরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উল্লেখিত গবেষণায় নমুনার সংখ্যা কম ছিল। এত কমসংখ্যক নমুনা নিয়ে পরিচালিত গবেষণা পুরো ঢাকা শহরের প্রতিনিধিত্ব করে না। উল্লেখ্য, আইইডিসিআর করোনা মহামারি নিয়ে এর আগে আর কোনো গবেষণা তথ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেনি।

আইইডিসিআরের পরিচালকের নামে গণমাধ্যমে প্রেরিত এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো কোনো গণমাধ্যমে গবেষণাটিতে সমগ্র ঢাকা মহানগরীর চিত্র তুলে ধরেছে বলায় এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দুর্বল হয়েছে ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এত কমসংখ্যক নমুনা ঢাকা শহরের প্রতিনিধিত্ব করে না। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ঢাকা মহানগরীর প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হলে ভবিষ্যতে প্রতিনিধিত্বমূলক সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ করে আরও বড় পরিসরে গবেষণা করতে হবে।’ রক্তের নমুনার সংখ্যা কত হলে তা ঢাকা মহানগরীর প্রতিনিধিত্ব করবে এমন প্রশ্নের উত্তরে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন আজ (বুধবার) দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রতিনিধিত্বমূলক হওয়ার জন্য কমপক্ষে তিন হাজার ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা দরকার। কিন্তু  উক্ত গবেষণার মাত্র ৮১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। #

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ