জুন ০৩, ২০২৪ ১৯:০৫ Asia/Dhaka
  • ইরান বিরোধী প্রস্তাব: ইউরোপের তিনটি দেশকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা

ভিয়েনা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি মিরতাহের মিখাইল উলিয়ানভ রবিবার এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে এক বার্তায়, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ'র নির্বাহী বোর্ডের সোমবারের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন যে 'জুনে অনুষ্ঠেয় বৈঠক শান্তিপূর্ণ হবে না'।

এই রাশিয়ান কূটনীতিক আশা প্রকাশ করেছিলেন যে ইউরোপীয় তিনটি দেশের ইরানবিরোধী প্রস্তাব উত্থাপিত হবে না কারণ এই ধরণের প্রস্তাব ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনতে পারে না বরং পরিস্থিতিকে আরো জটিল করবে।

আইএইএ'র নির্বাহী বোর্ডের নির্ধারিত বৈঠকটি আজ সোমবার 'ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার' ভবনে শুরু হবে। এখানে পূর্ববর্তী বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইরানের ইস্যুটি আলোচ্যসূচিতে থাকবে।

ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করে ইরানের বিরুদ্ধে চাপ তীব্র করার জন্য পশ্চিমারা বিশেষ করে ইউরোপীয় তিনটি দেশ জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের নতুন প্রচেষ্টার পরিণতির ব্যাপারে রাশিয়া সতর্ক করে দিয়েছে। আইএইএর নির্বাহী বোর্ডে বৈঠক অনুষ্ঠানের আগে গত সপ্তাহে  ইউরোপের এই তিনটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে একটি খসড়া প্রস্তাব পরিষদের সদস্যদের কাছে বিতরণ করেছিল এবং এই পরিষদের মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিল। তারা গ্রোসিকে ইরানের পরমাণু তৎপরতার ব্যাপারে ত্রৈমাসিক পূর্ণ প্রতিবেদন  তুলে ধরার দাবি জানিয়েছিল।

আইএইএর প্রধান সাধারণত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং কার্যকলাপের উপর একটি ত্রৈমাসিক রিপোর্ট এই সংস্থার নির্বাহী বার্ডের কাছে পেশ করে থাকেন। পাঁচ যোগ এক গ্রুপের সাথে ইরানের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী  ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সে অনুযায়ী এবারও নতুন প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা আছে।

সম্প্রতি, আইএইএর নির্বাহী বোর্ডের ৩৫ সদস্যের মধ্যে ইউরোপের এই তিনটি দেশের উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাব ইরানবিরোধী হলেও বার্তাসংস্থা রয়টার্স দাবি করেছে, এই প্রস্তাব ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাঠাতে এবং বাস্তবায়নের জন্য হুমকি নয়। এর আগে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল,ইরানের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় তিনটি দেশের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তখন ইউরোপীয় কূটনীতিকরা দাবি করেছিলেন, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্প্রসারণের বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ না নিলে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার কর্তৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়বে। তারা আরো বলছেন, এমনকি এতে ইরানের ওপর পশ্চিমা চাপের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। একজন সিনিয়র ইউরোপীয় কর্মকর্তা বলেছেন, "আমরা আমেরিকার কর্মকর্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছি, কিন্তু তারা এখনও মনে করে যে ইরানের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এমন কিছু করা উচিত নয়। কিন্তু আমেরিকার এই নীতি এখন পর্যন্ত কিছুই অর্জন করতে পারেনি এবং আমরা বিশ্বাস করি যে এখন আমাদের ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেয়া উচিত'।

তাই এখন মনে হচ্ছে ইউরোপের এই তিনটি দেশ ইরানের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য তাদের উত্থাপিত প্রস্তাব পাস করার চেষ্টা করছে। বাইরের কোনো কোনো মিডিয়া বলছে যে ইউরোপের  এই প্রচেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্র আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নতুন করে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায়না। এ অবস্থায় ইউরোপের এই দেশগুলো ইরান বিরোধী নতুন প্রস্তাব পাশের মাধ্যমে ইরানকে নতুন বার্তা দিতে চায়। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ