ইরানে রাসায়নিক হামলায় জড়িতরা রেহাই পাবে না: আলী বাকেরি
পার্স টুডে- ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাকেরি কানি জোর দিয়ে বলেছেন, ইরানে রাসায়নিক হামলার হোতা, সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে, সময় গড়ালেও কেউ রেহাই পাবে না।
ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সারদাশত শহরে রাসায়নিক বোমা হামলার ৩৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বার্তায় তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
পার্স টুডে জানিয়েছে, ১৯৮৭ সালের ২৮ জুনে সাদ্দামের নেতৃত্বাধীন ইরাকের বাথ সরকার ইরানের পশ্চিম আজারবাইজানের সারদাশত শহরের চারটি জনাকীর্ণ স্থানে রাসায়নিক বোমা হামলা চালায়। ওই হামলায় ১১৯ বেসামরিক ইরানি শহীদ হয় এবং ৮ হাজারের বেশি রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। আক্রান্তদের অনেকেই পরে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করে মৃত্যুবরণ করেন।
![](https://media.parstoday.ir/image/4c6e0c4d25b17e2idz8_800C450.jpg)
ইরানের পররাষ্ট্র ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাকেরি কানি তাঁর বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস সরকারের রাজনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি কিছু কোম্পানির আর্থিক, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তার কারণে ইরাকের সাদ্দাম সরকার ইরানের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পেরেছিল। রাসায়নিক হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষায় ইরান আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার চেষ্টা করলেও এই দেশগুলো তাতে বাধা দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতের উচিত অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং রাসায়নিক হামলার শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। যাতে এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
তিনি তার বিবৃতিতে আর বলেন, "যে দেশগুলো সারদাশতের নির্যাতিত নারী ও শিশুসহ ইরানিদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহারে সাদ্দামকে সম্পূর্ণভাবে সহায়তা ও সমর্থন করেছিল, তারাই আজ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদি ইসরাইলের গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সম্পূর্ণ সমর্থক এবং সরাসরি অংশীদার। ওই দেশগুলোই রাসায়নিক অস্ত্রের শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ওষুধ আনতে ইরানকে বাধা দেয়। শুধু তাই নয়, গাজার জনগণকে খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহে বাধাদানকারী এবং অনাহারকে যুদ্ধের একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহারকারী ইসরাইলকে তারাই প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।"
![](https://media.parstoday.ir/image/4c6ec3a5740b742idza_800C450.jpg)
আলী বাকেরি কানি জোর দিয়ে বলেন, ইরান সবসময় রাসায়নিক অস্ত্রের বিরোধী কারণ দেশটি সমসাময়িক ইতিহাসে এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারের সবচেয়ে বড় শিকার।
তিনি বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের লক্ষ্য অর্জনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার দিকে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
২০০৪ সালের এপ্রিল তেহরানের একটি আদালত রায় দেয় যে, মার্কিন সরকার সাদ্দামকে সহযোগিতা করার কারণে তারাও রাসায়নিক হামলার জন্য দায়ী। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের ৬০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে মার্কিন সরকারের প্রতি নির্দেশ দেয় আদালতটি।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩০