এজেন্ট ব্লু: ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন গোপন আপরাধযজ্ঞের জঘন্য দৃষ্টান্ত
https://parstoday.ir/bn/news/world-i143130-এজেন্ট_ব্লু_ভিয়েতনাম_যুদ্ধে_মার্কিন_গোপন_আপরাধযজ্ঞের_জঘন্য_দৃষ্টান্ত
পার্সটুডে- ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রবীণ সেনারা, ইতিহাসবিদ এবং গবেষকরা মার্কিন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও সিআইএ-এর মাধ্যমে ভিয়েতনামের কৃষিজমি ও বনাঞ্চলে ভয়াবহ বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য 'এজেন্ট অরেঞ্জ' ও 'এজেন্ট ব্লু' ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
অক্টোবর ২৮, ২০২৪ ১৯:০৯ Asia/Dhaka
  • এজেন্ট ব্লু: ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন আপরাধযজ্ঞের আরেকটি জঘন্য দৃষ্টান্ত
    এজেন্ট ব্লু: ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন আপরাধযজ্ঞের আরেকটি জঘন্য দৃষ্টান্ত

পার্সটুডে- ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রবীণ সেনারা, ইতিহাসবিদ এবং গবেষকরা মার্কিন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও সিআইএ-এর মাধ্যমে ভিয়েতনামের কৃষিজমি ও বনাঞ্চলে ভয়াবহ বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য 'এজেন্ট অরেঞ্জ' ও 'এজেন্ট ব্লু' ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

পার্সটুডের মতে, কিন ওলসন - ব্রায়ান আর হিগিন্সের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে ভিয়েতনামে আমেরিকার এ ধরণের অস্ত্র ব্যবহারের বিস্তাতির তথ্য উঠে এসেছে- যা এখানে তুলে ধরা হলো:

প্রায় ৫০ বছর আগে ভিয়েতনাম যুদ্ধে সফলতা পাওয়ার জন্য এবং এন.এল.এফ গেরিলাদের গোপন আস্তানা ধ্বংস করার জন্য মার্কিন বাহিনী এজেন্ট অরেঞ্জ এবং এজেন্ট ব্লু নামক কুখ্যাত রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে প্রায় দশ লক্ষ হেক্টর বনভূমি এবং প্রায় ছয়শো আশি লক্ষ একর কৃষি জমি বিনষ্ট করেছিল। এ সম্পর্কে বিশ্বের মানুষ খুব কমই জানতো।

প্রকৃতপক্ষে, এই রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার বিষয়ে প্রথম তথ্যসমৃদ্ধ লেখা ১৯৭১ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদক আর্থার এইচ. ওয়েস্টিংকে পাঠানো হয়েছিল। "ভিয়েতনাম এজেন্ট ব্লু" শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল।

এরপর প্রায় ৪৪ বছর পর্যন্ত এজেন্ট ব্লু নিয়ে আর কোনো কথাবার্তা হয়নি। ২০১৪ সালে লুয়ানা হুয়েলম্যান আমেরিকার ভেটেরান্স ম্যাগাজিনে "ব্লু আর্সেনিক ইন দ্য এনভায়রনমেন্ট টুডে"  শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন।

এরপর ২০২০ সালে, সায়েন্স জার্নালে "ভিয়েতনাম যুদ্ধে ব্যবহৃত রাসায়নিক অস্ত্রের পরিণতি" শিরোনামে একটি প্রথম নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে,  ভিয়েতনামের কৃষিজমি ও ফসল ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত এসব বিষাক্ত রাসায়নিক পানি ব্যবহারের ঘটনা  ৫০ বছর ধরে আমেরিকান সংবাদ সংস্থাগুলো কীভাবে উপেক্ষা করতে পেরেছে? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আসুন এই গোপন রাসায়নিক পানির ব্যবহার এবং বর্তমানেও এর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে পর্যালোচনা করি।

ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রবীন মার্কিন সেনারা, ইতিহাসবিদ এবং গবেষকরা মার্কিন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও সিআইএ-এর মাধ্যমে ভিয়েতনামের কৃষিজমি ও বনাঞ্চলে ভয়াবহ বিষাক্ত 'এজেন্ট অরেঞ্জ' এবং এজেন্ট ব্লু নামক কুখ্যাত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

ইনস্টিটিউট অফ মেডিসিন অনুমান করছে যে ভিয়েতনামকে খাদ্যশূন্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৪৬৮০০০ কেজি পরিমাণ বিষাক্ত তরল রাসায়নিক দ্রব্য স্প্রে করা হয়েছিল।

মার্কিন বিমান  বাহিনীর সি-123 বিমান থেকে এজেন্ট ব্লু রাসায়িক দ্রব্য স্প্রে করা হয়েছিল।

এই বিশাল পরিমাণ বিষাক্ত রাসায়নিক পানিয় কৃষিজমি ও খেতখামারে প্রায় ১০ বছর ধরে ছিটানো হয়েছিল। তাই গত ৬০ বছরে এই ভয়াবহ অন্যায় অপকর্মের সাথে জড়িত মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

এই বিষাক্ত পানি ভিয়েতনামের বহু মানুষের শরীরে প্রবেশ করায় তারা মারাত্মক রকমের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে, তাদের খাদ্যের উৎসভূমি নষ্ট হয়ে যায় যার প্রভাব এখনো ওই দেশটিতে বিদ্যমান। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।