জুন ২৮, ২০২৪ ১৬:৪৯ Asia/Dhaka
  • বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
    বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে একে অপরকে বাক্যবাণে জর্জরিত করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার রাতে সিএনএন টেলিভিশন চ্যানেলে মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেন তারা। বিতর্কে উপস্থাপকের ভূমিকা পালন করেন সিএনএন-এর সাংবাদিক ডেভিড কিং। বিতর্কের পুরো সময়জুড়ে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, ফিলিস্তিন ও ইউক্রেন, যুদ্ধ সীমান্ত সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলার সময় তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনেন এবং পরস্পরকে তীব্র বাক্যবাণে জর্জরিত করার চেষ্টা করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসীর বিষয়ে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন। অন্যদিকে, আদালতে সম্প্রতি ট্রাম্পের সাজার প্রসঙ্গ তুলে তাকে ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।

অভিবাসন ইস্যুতে পরস্পরের সমালোচনা করেন ট্রাম্প ও বাইডেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের দাবি, আমেরিকাকে নরক বানিয়েছেন বাইডেন। আর বাইডেনের পাল্টা যুক্তি, ট্রাম্পের আমলের চেয়ে এখন সীমান্ত পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো অবস্থানে রয়েছে।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

অনেক বিষয়ে মতানৈক্য থাকা সত্ত্বেও বাইডেন এবং ট্রাম্প গাজা যুদ্ধের বিষয়ে একমত হয়েছেন। উভয়ই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চলে ইসরাইলি আগ্রাসনের অব্যাহত সমর্থন এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার জন্য হামাসকে দায়ী করেছেন।

বাইডেনের দাবি, হামাসের কারণেই দীর্ঘ হচ্ছে যুদ্ধ। নিজেদের ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সমর্থক দাবিও করেন তিনি। এদিকে, ইসরাইলে হামাসের হামলার জন্য বাইডেনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন ট্রাম্প।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন বলেন, "ইরান যখন ইসরাইলে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তখন বিশ্বকে ইরানের বিরুদ্ধে আমি সুসংগঠিত করেছি। সে হামলায় ইসরাইলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আমরা ইসরাইলকে রক্ষা করেছি। আমরাই তাদের সবচেয়ে বড় সমর্থক।"

অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প বলেন, "আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে হামাস ইসরাইলে হামলা চালাতে পারত না। নেতানিয়াহুর উচিত তার কাজ শেষ করা এবং তাকে সেটি করতে দেয়া উচিত। কিন্তু বাইডেন ফিলিস্তিনিদের মতো আচরণ করছেন।" এ সময় ট্রাম্প অভিযোগ করেন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরা্ইকে বাইডেন পর্যাপ্ত সহায়তা দিচ্ছেন না। 

এসময় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, "বাইডেনের আমলে গোটা বিশ্ব যুদ্ধের মুখোমুখি। বিশ্ব যদি একজন ভালো নেতা পেত, তাহলে আজ এই যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতো না।” উত্তরে বাইডেন বলেন, “এত মিথ্যে, এত ভুল তথ্য আমি জীবনে কখনো শুনিনি।”

টেলিভিশন বিতর্কে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতেও বাইডেনকে তুলোধুনো করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, "আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খুবই কাছাকাছি রয়েছি। কিম জং উন, শি জিনপিং, পুতিন কেউই তাকে সম্মান করে না, ভয় পায় না। এই ভদ্রলোকই বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।"

অন্যদিকে বাইডেন বলেন, "পুতিন একজন যুদ্ধাপরাধী। যিনি হাজার হাজার মানুষকে মেরেছেন। তিনি আবারও সোভিয়েত সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে চান। তিনি শান্তি চান না। আর তার (ট্রাম্পের) ধারণা, তিনি চাইলেই পুতিনকে থামিয়ে দিতে পারবেন?"

বিতর্ক শেষে প্রকাশিত বিভিন্ন জনমত জরিপ বলছে, বেশিরভাগ মার্কিনি মনে করেন, বিতর্কে জিতেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজনের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ