কোটা সংস্কার আন্দোলন
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত নিহত ৫, আহত দেড় শতাধিক: বিজিবি মোতায়েন
বাংলাদেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিহত ও দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুর রোডে ঢাকা কলেজের সামনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে পুলিশ। তার পরিচয় এখনও পাওয়া যায় নি।
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন, ফারুক ও ওয়াসিম আকরাম। ফারুকের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ফার্নিচারের দোকানে চাকরি করতেন। ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বাকি একজনের নাম ফিরোজ, তার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তিনজনের মরদেহ চমেক মর্গে রয়েছে।
এদিকে, রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকা থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যায়। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে ইংরেজি বিভাগের আবু সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকালে এ তথ্য জানান।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক অবরোধ
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার ১৬ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বগুড়া ও রাজশাহী দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা।
ছাত্রলীগের সমাবেশ শুরু, বহিরাগতদের চলে যেতে অনুরোধ প্রক্টরের
এদিকে, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ। বিকেল চারটার দিকে এ সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে যোগ দেওয়া বেশির ভাগের হাতেই লাঠিসোঁটা, অনেকেরই মাথায় আছে হেলমেট৷ তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ শাখাসহ বাইরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মী৷
ছাত্রলীগ আজকের কর্মসূচিকে বলছে, ‘বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতা-কর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ।’
এদিকে সমাবেশ শুরুর আগে বেলা আড়াইটা থেকে টিএসসি এলাকায় কাঠ, বাঁশ, লাঠিসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছাত্রলীগের এই নেতা-কর্মীরা মহড়া দেন৷ এমন পরিস্থিতিতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে টিএসসি এলাকায় এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. আবদুল মুহিত৷ তখন তিনি সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন৷#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৬