জাপান কি চীনের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে?
(last modified Sun, 28 Jul 2024 12:42:07 GMT )
জুলাই ২৮, ২০২৪ ১৮:৪২ Asia/Dhaka
  • ভিয়েনতিয়েনে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়ার সঙ্গে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সাক্ষাৎ
    ভিয়েনতিয়েনে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়ার সঙ্গে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সাক্ষাৎ

পার্সটুডে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ, চাপ ও প্রভাবের কারণে চীনের সঙ্গে যেকরম সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত জাপান সেরকম সম্পর্ক স্থাপন করতে পারছে না বলে বিভিন্ন খবর থেকে জানা যাচ্ছে।

দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় চীন ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ক যখন একটি নতুন মাত্রায় প্রবেশ করেছে তখন এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই দু’টি দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে নানা গুঞ্জন উঠতে শুরু করেছে। পার্সটুডে ফার্সি জানাচ্ছে, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া সম্প্রতি লাওসের ভিয়েনতিয়েনে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে চীনে জাপানি নাগরিকদের আটক, দেশটিতে চীনা খাদ্যপণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও জাপানি সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও জাপানের সম্পর্কের ওপর সীমান্ত মতবিরোধ, বাণিজ্যিক উত্তেজনা এবং ফুকুশিমা পরমাণু চুল্লি থেকে পরিশোধিত পানি অপসারণের মতো বিষয়গুলোর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত কয়েক মাসে চীন ও জাপানের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন পর দু’দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাক্ষাতে ওয়াং ই বলেন, “চীন ও জাপানের সম্পর্ক একটি সংকটকালীন অবস্থায় রয়েছে। আমাদেরকে হয় সামনের দিকে অগ্রসর হতে আর না হয় পেছনে সরে আসতে হবে।”

তিনি চীনের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি সংশোধন করে ইতিবাচক নীতি গ্রহণ করার জন্য জাপানের প্রতি আহ্বান জানান।

এ সময় ইয়োকো কামিকাওয়া চীনে জাপানি নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর জন্য ভীতিহীন ও নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য বেইজিং এর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চীনে জাপানি খাদ্যপণ্য আমদানির ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে দিতে এবং আটক জাপানি নাগরিকদের ছেড়ে দিতে হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে চীন সরকার নানা অভিযোগে কয়েকজন জাপানি নাগরিককে আটক করেছে। এদের মধ্যে জাপানের ওষুধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাসটেলাস ফার্মার একজন পরিচালককে আটকের ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জাপান বলছে, এর ফলে চীনে জাপানের পুঁজি বিনিয়োগের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

অন্যদিকে, জিসেভেনভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র জাপান চীনের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা কমানোর নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কামিকাওয়া বলেন, জাপানি সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির ওপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট কোনো দেশকে লক্ষ্য করে নয় বরং টোকিও এ ব্যাপারে বেইজিং এর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে চীন ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এহেন আগ্রহ ও ইতিবাচক মনোভাব সত্ত্বেও আমেরিকার হস্তক্ষেপ এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা নীতি বেইজিং ও টোকিওর মধ্যকার সম্পর্কের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। চীন ও জাপান যতই নিজেদের সম্পর্কের উন্নতি চাক না কেন, এখানে যে প্রশ্নটি সামনে আসছে তা হলো, জাপানি কি নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখার পাশাপাশি আমেরিকার সঙ্গে দহরম মহরত অব্যাহত থাকা অঅবস্থায় চীনের সঙ্গে টেকসই সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে?

টোকিও নিজের জাতীয় স্বার্থ এবং আমেরিকার অব্যাহত চাপের মধ্যে কোনটিকে প্রাধান্য দেবে- এ প্রশ্নের উত্তর অনেকাংশে তার ওপর নির্ভর করছে।#

পার্সটুডে/এমএমআই/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ