শেষ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
(last modified Sat, 03 Aug 2024 12:23:53 GMT )
আগস্ট ০৩, ২০২৪ ১৮:২৩ Asia/Dhaka
  • কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত
    কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত

বাংলাদেশের রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগ দাবিতে আগামীকাল (রোববার) সারাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ শুরু হবে বলে সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ (শনিবার) বিকালে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, "আমরা আর তাদের কাছে কী বিচার চাইব? তারাই তো খুনি। আমাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আপনাদের আন্দোলনের কারণে আমরা ছাড়া পেয়েছি। আজকেও গুলি চলেছে। এই পরিস্থিতিতে এক দফা ঘোষণা করছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। তিনি আগেই বুঝেছেন, দরজা রাখার সময় হয়েছে। আমরা আসছি। এই যে খুন-হত্যা হয়েছে, এজন্য তাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নন, সব মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।"

শহীদ মিনার লোকে লোকারণ্য

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, "আমাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং এই সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির বিচার। আমরা জেলের তালা ভেঙে আমাদের ভাইদের আনব। যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে এতে সব জনতা যোগ দিন। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সম্মিলিত মোর্চা গঠন করব। আমরা আমাদের দেশের রূপরেখা ঘোষণা করব। আগামীকাল থেকে সর্বত্র অসহযোগ আন্দোলন হবে।"

এই সমন্বয়ক বলেন, "যদি ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ জারি হয় আমরা মেনে নেব না। এখন ছাত্র-জনতার এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ আন্দোলন পালন করবেন। সরকার যদি জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এটা জনগণ মানবে না। আপনারা যদি অস্ত্র চালান তাহলে প্রতিরোধ হবে। আমরা সব গণহত্যার বিচার করব বাংলার মাটিতে।"

বাংলাদেশের জনগণ অসহযোগের নেতৃত্ব দেবে জানিয়ে তিনি দেশের সর্বস্তরের মানুষকে ছাত্রদের ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা ঘোষণাপত্রে বলা হয়, "যেহেতু বর্তমান সরকারের নির্দেশে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। নারী-শিশু-ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কেউ এই গণহত্যা থেকে রেহাই পাননি। যেহেতু সরকার এই হত্যাযজ্ঞের বিচার করার পরিবর্তে নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে। যেহেতু সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মরণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ সংঘটন করেছে। যেহেতু ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-মজুরসহ আপামর জনগণ মনে করছে, এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ বিচার এবং তদন্ত সম্ভব নয়। সেহেতু, আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করছি। একই সাথে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছি।"

এর আগে দুপুর দেড়টার থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন। ক্ষণে ক্ষণে বাড়তে থাকে সেই জনস্রোত। এক পর্যায়ে শহীদ মিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সমাবেশে যোগ দেওয়া জনমানুষের ভিড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণ থেকে ছড়িয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জগন্নাথ হলসহ অন্যান্য রাস্তায়।#

পার্সটুডে/এমএআর/৩

ট্যাগ