ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ: সংঘাত ও জটিল রাজনৈতকি পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা
(last modified Tue, 26 Nov 2024 07:48:42 GMT )
নভেম্বর ২৬, ২০২৪ ১৩:৪৮ Asia/Dhaka
  • ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ: সংঘাত ও জটিল রাজনৈতকি পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা

পাকিস্তানে সরকার এবং বিরোধী দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা ইসলামাবাদে একটি বড় মিছিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্যদিকে রাজধানীতে সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলা করতে এবং যে কোনও মিছিল সমাবেশ বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷

বলা হচ্ছে, রাজধানী ইসলামাবাদ শহর গত তিনদিন ধরে নিশ্ছদ্র সামরিক দুর্গে পরিণত হয়েছে এবং যে কোনো অবৈধ আন্দোলন ও মিছিল প্রতিরোধ করতে হাজার হাজার, দাঙ্গা বিরোধী বিশেষ ইউনিট এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে শহরের ভিতরে ও বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির নেতা ইমরান খান এবং তার দল এখনও বিশ্বাস করে যে তাদের সরকারকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এবং আমেরিকার সহযোগিতায় ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছিল এবং ইমরান খানকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।

যদিও ইমরান খানকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করার পর কয়েক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং এখন তিনি নিজের এবং তার দলের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন। যাইহোক, পাকিস্তান রাজনৈতিক সংকটের একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। কারণ পাকিস্তানে বিশেষ করে সম্প্রতি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলা তীব্র হয়েছে। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে পাকিস্তান, যে উন্নয়নের পথে হাঁটা শুরু করেছে এবং বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে, সেই পাকিস্তান বর্তমানে গভীর রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংকটের সম্মুখীন।

এদিকে, যেকোনো অস্থিরতা মোকাবেলার জন্য ইসলামাবাদ শহর ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। ইসলামাবাদ শহরের দিকে যাওয়া সমস্ত রাস্তা এবং শহরের মধ্যে যোগাযোগের সব পথ বন্ধ রয়েছে। রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদ সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।  গতকাল সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। আশঙ্কার কথা হচ্ছে, ইমরান খানের সমর্থকদের মিছিল ও আন্দোলন কর্মসূচি যদি ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত না হয় তবে সন্দেহ নেই যে, সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি তৈরি এবং তাদের অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে।

পাকিস্তানে যে কোনো রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হলে তা পারাচেনারে সংঘটিত সাম্প্রতিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত কাজকেও প্রভাবিত করতে পারে। যদিও সবসময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার পাকিস্তানের শিয়ারা আশা করে যে, পাকিস্তান সরকার তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কার্যক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

যদিও পাকিস্তানের সংবিধান অনুসারে, বিরোধী দলগুলো বড় যে কোনো মিছিল সমাবেশের আয়োজন করতে পারে, কিন্তু পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিভাগ মনে করে পারাচেনারে উগ্র সন্ত্রাসীরা কয়েক ডজন শিয়া মুসলমানকে হত্যার পর এখন রাজনৈতকি সমাবেশ করার উপযুক্ত সময় নয়। এ কারণে জানা গেছে, সমাবেশ ঠেকাতে  ইসলামাবাদসহ বিভিন্ন শহরে ইমরান খানের প্রায় এক হাজার সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে জাস্টিস মুভমেন্ট পার্টির প্রাদেশিক ও জাতীয় সংসদের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, অনেক বড় পরিসরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে পারে। ইমরান খানের স্ত্রী এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার মন্ত্রী আলি আমিন গন্ডাপুরের নেতৃত্বে সরকার বিরোধীদের বড় কাফেলা যেকোনো মূল্যে ইসলামাবাদে প্রবেশের পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, ইমরান খানের সমর্থকদের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায়, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে সরকার, বিরোধীদের মুখোমুখি হতে দ্বিধা করবে না এবং কঠোরভাবে তাদের দমন করা হবে। এ অবস্থায়, পকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আগামতে আরো জটিল হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।#

পার্সটুডে/রেজওয়ানে হোসেন/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।