সমাবেশে বিপুল উপস্থিতি
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ ২০২৫ চলছে
-
সোহরাওর্য়াদী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ ২০২৫
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে 'বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর' জাতীয় সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়েছে। দলের আমির শফিকুর রহমান সমাবেশের সভাপতিত্ব করছেন। আজ (শনিবার) দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে এই সমাবেশে শুরু হয়।
দলটির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে এই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ করছে জামায়াত। আগামী জাতীয় নির্বাচন ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের পাশাপাশি গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই সমাবেশ হচ্ছে। সমাবেশে বড় ধরনের জমায়েত নিশ্চিত করতে রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে দলটি।
এর আগে, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের সমাবেশ শুরু হয়।সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন সাইফুল্লাহ মনসুর।
জামায়াতে ইসলামি জানিয়েছে, এই সমাবেশে তাদের মূল দাবি হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রভৃতি।
এই সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যা থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা। আজ সকাল থেকেও রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের সমাবেশস্থলের দিকে যেতে দেখা গেছে। সকালেই গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভরে যায়।
জামায়াতের সমাবেশ: রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র যানজট

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে আসতে থাকা নেতাকর্মীদের এত ভীড়ের চাপে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়ক ও কারওয়ানবাজার থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত তীব্র যানজট রয়েছে। এ ছাড়াও, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মহাসড়কের বেশিরভাগ যানবাহনই জামায়াতের সমাবেশে যাওয়া নেতাকর্মীদের বহনকারী বাস। সমাবেশের পথে বিপুল সংখ্যক মাইক্রোবাসও দেখা গেছে। এ ছাড়া, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, চিটাগাং রোড, সোনারগাঁও ও মদনপুরসহ বিভিন্ন রুটে বাসের সংকট দেখা দিয়েছে।
জামায়াতে সমাবেশের নিরাপত্তায় ১২ হাজার পুলিশ, রয়েছে র্যাব-ডিবিও
সাত দফা দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার (১৯ জুলাই) জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশের মূল নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রয়েছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ।

ডিএমপি জানায়, ঢাকায় অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১২ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় যুক্ত রয়েছেন। ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি করছেন ডিবির সদস্যরা। ১২ হাজার পুলিশ ছাড়াও আরও কয়েক হাজার র্যাব সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও জামায়াতের ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ বলছে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল যেন কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে পুলিশের। কন্ট্রোল রুম থেকে সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং চলছে। সব মিলিয়ে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মাঠের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছে একাধিক মনিটরিং সেল। দলে ছয় হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক আটটি বিভাগের আওতায় কাজ করছে। এছাড়াও যাতায়াত ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন জামায়াত নেতারা। ঢাকার বাইরের বাসগুলোর ড্রপিং পয়েন্ট নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।#
পার্সটুডে/জিএআর/১৯