দোহা শীর্ষ সম্মেলনের খসড়া বিবৃতি; গতানুগতিক নিন্দা
-
দোহা শীর্ষ সম্মেলন
পার্সটুডে-দোহায় আরব-ইসলামিক জরুরি শীর্ষ সম্মেলনের খসড়া থেকে প্রমাণ হচ্ছে কেবল ইহুদিবাদী ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করারই চেষ্টা করা হয়েছে।
গত সপ্তায় দোহায় ইসরাইলি হামলার ঘটনায় আজ (সোমবার) কাতারের রাজধানী দোহায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা এবং আরব লীগের একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশা করা হচ্ছিলো যে মুসলিম দেশগুলো এবার একটু ভিন্নরকম অবস্থান নেবে।
কিন্তু আল-মায়াদিন নেটওয়ার্ক ওই বৈঠকের চূড়ান্ত খসড়ার মূল অংশের খানিকটা প্রকাশ করার পর প্রমাণ হয়ে গেছে ওই বৈঠক থেকে নিন্দা-বিবৃতি ছাড়া আর কিছুই আশা করা ভুল।
প্রকাশিত বিবৃতিতে, কাতারের ওপর সাম্প্রতিক হামলাগুলোকে এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসাথে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার প্রচেষ্টায় ওই হামলাকে একটি গুরুতর বাধা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযানের মতো ভয়াবহ অপরাধ এবং পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণ অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে এইসব পদক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়েছে। সেইসাথে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে ইহুদিবাদী আগ্রাসন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে সকল অর্জনকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।
বিবৃতিতে গাজায় আগ্রাসন বন্ধ এবং শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য কাতার, মিশর ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার উদ্যোগের প্রতি সমর্থনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে এ অঞ্চলের ওপর নতুন কোনো বাস্তবতা চাপিয়ে দেওয়ার যে-কোনো প্রচেষ্টা এবং ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের কিছু অংশ দখলের সম্ভাব্য সিদ্ধান্তের পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে।
সভার চূড়ান্ত বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি তখনই অর্জিত হবে যখন ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করা হবে এবং এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরব শান্তি পরিকল্পনাকে প্রধান কাঠামো হিসেবে বাস্তবায়ন করা হবে।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো যৌথ চুক্তি সক্রিয়করণ, তেল অস্ত্র ব্যবহার, ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যাপক আরব নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং এই দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে অবিলম্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশেষ করে হামাস আন্দোলন দোহার শীর্ষ সম্মেলনে আরব ও ইসলামী নেতাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। হামাস ইসরাইলকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বয়কট করা, তাদের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করা, আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলি অপরাধের বিচার করা এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটি জোর দিয়ে বলেছে, এই শীর্ষ সম্মেলন ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইসলামী ঐক্যের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।
শনিবার, মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি আল জাজিরার সাথে এক সাক্ষাৎকারে মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে একটি সামরিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে মার্কিন প্রতিনিধির উপস্থিতি
এই শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং সিরিয়ায় ট্রাম্পের প্রতিনিধি টম বারাকও কাতারের রাজধানীতে উপস্থিত হন এবং আরব কর্মকর্তাদের সাথে তারা যৌথ বৈঠক করেন।
তিনি দোহায় জোলানি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি এবং জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আস-সাফাদির সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নিতে তিনি সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাতার ভ্রমণ করেছেন।#
পার্সটুডে/এনএম/১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।