জাতিসংঘে ইরানের অভিযোগ
'ট্রাম্পের স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে- ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত'
-
আমির সাঈদ ইরাভানি
ইরান বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য 'অপরাধ স্বীকারোক্তি' প্রমাণ করে যে, জুন মাসে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, তাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। ইরান এখন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং পরমাণু স্থাপনায় হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল উভয়কে সম্পূর্ণ দায়ী করছে।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “ইসরায়েল প্রথমে আক্রমণ চালায়। আক্রমণটি ছিল খুবই শক্তিশালী। আমি ওই অভিযানের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিলাম।”
এই বক্তব্যের পর, জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্যই যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও নির্দেশনার স্পষ্ট ও অকাট্ট প্রমাণ। এই হামলায় ইরানের বহু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
ইরাভানি এই আগ্রাসনকে জাতিসংঘ সনদের ২(৪) অনুচ্ছেদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর ও প্রকাশ্য লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, হামলার ফলে বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং ইরানের নিরাপদ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরাভানি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য ১৩ জুন ২০২৫ তারিখে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর দেওয়া আগের বিবৃতিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণ করেছে— যেখানে রুবিও দাবি করেছিলেন যে, “আমরা ইরানের ওপর কোনো হামলায় জড়িত নই; আমাদের প্রধান লক্ষ্য কেবল অঞ্চলে মার্কিন সেনাদের সুরক্ষা।”
ইরান জাতিসংঘে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয়ই এই হামলার জন্য সম্পূর্ণ ও যৌথভাবে দায়ী। কারণ এর ফলে নিরীহ প্রাণহানি, বেসামরিক সম্পত্তি ও অবকাঠামো ধ্বংস, এবং ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা হয়েছে।
ইরাভানি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং দেশটির মানুষ ও সম্পত্তির ক্ষতির জন্য পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দাবি করার অধিকার ইরানের রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৩ জুন ইসরায়েল বিনা উসকানিতে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এতে ইরানের অনেক সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ নিহত হন।
এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রও যুদ্ধে যোগ দেয় এবং ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়— যা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন ও পরমাণু অস্ত্র-নিষিদ্ধ চুক্তি (এনপিটি) এর গুরুতর লঙ্ঘন বলে ইরান অভিযোগ করেছে।
২৪ জুন, ইরান সফল পাল্টা হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে সক্ষম হয়।#
পার্সটুডে/এমএআর/৯