ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২ ১৩:১৮ Asia/Dhaka

ভারতে বিজেপিশাসিত কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ককে কেন্দ্র করে সাতশো’র বেশি আইনজীবী, আইনের শিক্ষার্থী ও আইন বিশেষজ্ঞ একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরার জন্য স্কুল-কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এটাকে ‘সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন’ বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।

হিন্দি গণমাধ্যম ‘দৈনিক ভাস্কর’ সূত্রে প্রকাশ, খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে যে, মুসলিম মেয়ে ও নারীদের প্রতি এই অবহেলা জনসাধারণের দৃষ্টিতে অমানবিক, এটি সংবিধান এবং সমগ্র সম্প্রদায়ের অবমাননা। মর্যাদা সহকারে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট গেছে।  

হিন্দি গণমাধ্যম ‘অপইন্ডিয়া’ সূত্রে প্রকাশ, হিজাব পরার নিষেধাজ্ঞাকে মুসলিমদের সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করে ৭৬৫ জন আইনজীবী, আইনের ছাত্র, শিক্ষাবিদ এবং সমাজকর্মী একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে যে, স্কুল-কলেজে ঢোকার আগে তাদের হিজাব খুলে ফেলতে বাধ্য করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে মুসলিম ছাত্রী ও কর্মীদের প্রকাশ্যে অপমান করার জন্য নিজেদের মাথা হেঁট হয়ে গেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় পোশাক পরিধানে নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত হাইকোর্টের আদেশটি সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিশ্বাসের স্বাধীনতার অধিকার সম্পর্কিত। খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম প্রয়োগ নতুন কিছু নয়। মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরত, শিখ ছেলেরা পাগড়ি পরত, অন্যরা তাদের শরীরে তাদের ধর্মের বিভিন্ন প্রতীকসহ ইউনিফর্ম পরত, কিন্তু মুসলিম ছাত্রীদের উপরে বর্তমান আক্রমণ 'ইসলামোফোবিয়ার' লক্ষণ।

তারা বলেন, হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছাত্ররা প্রতিদিন তাদের বিশ্বাসের বিভিন্ন প্রতীক যেমন বিন্দি, তিলক, বিভূতি নিয়ে স্কুলে আসে। কিন্তু, হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীদের ক্ষেত্রে আজ যে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, ওই প্রতীকগুলোর বিরুদ্ধে এমন প্রতিক্রিয়া কখনও দেখা যায়নি।

এটিকে মুসলিমদের অবমাননা বলে উল্লেখ করে তারা চিঠিতে বলেন, আমরা কর্ণাটক হাইকোর্টকে মুসলিম শিক্ষার্থী ও কর্মীদের সার্বজনিক অপমানকে বিচার বিভাগীয় আমলে নিতে এবং এ ধরণের অবমাননাকর পদক্ষেপ বন্ধ করার জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

প্রসঙ্গত, হিজাব বিতর্ককে কেন্দ্র করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশে আপাতত কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ধর্মীয় পোশাক পরে যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে। মুসলিম শিক্ষার্থীরা অবশ্য হিজাব পরে স্কুল-কলেজে যেতে দেওয়ার দাবিতে অনড় রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশের দোহাই দিয়ে শিক্ষার্থীদের হিজাব খুলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।# 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ