লাখ লাখ ওলামার রক্তের বিনিময়ে ভারত স্বাধীন হয়েছে: জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের উদ্যোগে ভরতপুর ব্লক জমিয়তের ব্যবস্থাপনায় এক প্রকাশ্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (শনিবার) দেশের চলমান পরিস্থিতি ও হিজাব ইস্যুতে ভরতপুর বাস স্ট্যান্ডে ওই সমাবেশ হয়।
আজকের ওই সমাবেশে জেলা ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য মাষ্টার মুহাম্মাদ আশরাফ তার বক্তব্যে বলেন, ‘একসময়ে ব্রিটিশরা এ দেশ শাসনের সময়ে তারা শরীয়ার উপরে হস্তক্ষেপ করেছিল। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ সেসময়ে এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে হাজার হাজার নয়, লাখ লাখ ওলামায়ে কেরামের রক্তের বিনিময়ে, মুসলিমদের রক্তের বিনিময়ে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের পরে দেশের সংবিধান রচনা কমিটির সদস্য ছিলেন তৎকালীন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সম্পাদক মাওলানা হিফজুর রহমান। ভারত হল গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, এটা সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু এখন সংবিধানকে অমর্যাদা ও অসম্মান করছে এক শ্রেণির মানুষ। ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। বর্তমান শাসক গোষ্ঠী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পরে এখন সংবিধানকে অসম্মান করছে। সংবিধানের অবমাননা কখনই হতে দেবো না।’
ওই সমাবেশে জেলা জমিয়তের সভাপতি মাওলানা বদরুল আলম সাম্প্রতিক হিজাব বিতর্ক প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা দাড়ি, টুপি, হিজাব নিয়ে বাঁচব। আমরা পর্দা করব কারণ, এটা কোরআনের আইন, আমরা হিজাব পরব এটা কোরআনের আইন। একশ্রেণির মানুষ মনে করছে তারা এ দেশকে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র তৈরি করবে। কিন্তু এখানে জাতিধর্ম, দলমত নির্বিশেষে হিন্দু-মুসলিম শিক্ষিত মানুষজন সকলেই আছেন। আমাদের শরীরে একফোঁটা রক্ত থাকতে আমরা কোনোদিন এ দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র হতে দেবো না।’
তিনি বিজেপিশাসিত কর্ণাটকে হিজাব ইস্যুতে কলেজ ছাত্রী মুসকান খানের নিগৃহীত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন।
অন্যদিকে, গতকাল (শুক্রবার) হিজাবের সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গের চন্দ্রকোনা-২ ব্লক জমিয়তে উলামা হিন্দের আহ্বানে পশ্চিম মেদিনীপুরের মুড়াকাটা থেকে মহেশপুর ফুটবল ময়দান পর্যন্ত বিশাল পদযাত্রা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মসূচিতে বিভিন্ন এলাকার বহু মানুষ শামিল হন এবং হিজাবের সমর্থনে সোচ্চার হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সম্প্রতি রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘সংবিধানে এরকম কোনও আইন নেই যে, কেউ যদি হিজাব পরিধান করতে চায়, বা মাথায় ওড়না পরে সেটা অন্যায়। হিজাব বা ওড়না স্কুলে পরতে পারবে না বলেও সংবিধানে কোথাও লেখা নেই। পাগড়ি পরে শিখরা যেতে পারে, এটা যদি বৈধ হয় তাহলে মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরলে সমস্যা কীসের?’ তিনি এ ব্যাপারে আইন মেনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি হাতে নেয়ার কথা বলেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/মো.আবুসাঈদ/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।