এপ্রিল ০২, ২০২২ ১৯:০৩ Asia/Dhaka
  • জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন, বিজেপি এমপি

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়া সংসদে ‘আরএসএস’ ঘনিষ্ঠ বিজেপি এমপি রাকেশ সিনহার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্থাপিত বিল অস্বীকার করেছেন। তার হস্তক্ষেপের পর গতকাল (শুক্রবার) রাকেশ সিনহাকে তার বিল প্রত্যাহার করতে হয়েছে।

এরফলে ওই ইস্যুতে ‘আরএসএস’-এর সঙ্গে ‘বিজেপি’র মতপার্থক্য প্রকাশ্যে  চলে এল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, দেশে দীর্ঘ দিন ধরে দুই সন্তান নীতি চালু করার পক্ষে আরএসএস বা সঙ্ঘ পরিবার। তাদের আশঙ্কা, অবিলম্বে ওই নীতি না গ্রহণ করলে আগামীদিনে দেশে হিন্দুরাই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন। আরএসএসের নেতারা মনে করেন,  জনসংখ্যার বিস্ফোরণের মাধ্যমে আগামী দিনে এ দেশে সংখ্যাগুরু হয়ে দাঁড়াবে মুসলিম সমাজ। সেজন্য একমাত্র আইন করেই মুসলিম সমাজের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানো সম্ভব।   

আজ (শনিবার) হিন্দি গণমাধ্যম ‘জনসত্তা’য় প্রকাশ, বিজেপি এমপি রাকেশ সিনহা ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বেসরকারী সদস্য বিল উত্থাপন করেছিলেন। বিলে দুই সন্তানের নিয়ম চালু করার কথা বলা হয়েছিল, এর পাশাপাশি এটি লঙ্ঘনের জন্য শাস্তিমূলক বিধানেরও কথা বলা হয়েছিল।

প্রাইভেট বিলের আলোচনায় হস্তক্ষেপ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়া বলেন,  ‘দেশে আজ উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। দেশ পরিবর্তন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি নতুন ভারত গঠিত হচ্ছে।’

বিলের ওপর আলোচনার জবাবে তিনি বলেন, এটা সত্য যে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা অনেক সমস্যার কারণ। তবে শিক্ষা ও সচেতনতা ছড়িয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি আস্থাশীল।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়ার মতে, দেশে প্রজনন হার দুই শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশটি এটি আরও কমানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও ধারাবাহিকভাবে কমছে। ১৯৭১ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২.২০ শতাংশ, যা ২০১১ সালে ১.৬৪ শতাংশে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি দুর্দান্ত সাফল্য। যে গতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে, তাতে স্পষ্ট যে তা যথেষ্ট কমেছে।’ 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ১৯৫২ সাল থেকে জনসংখ্যা নীতি চালু রয়েছে এবং এ পর্যন্ত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে যে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে তাতে ইতিবাচক ফল এসেছে। উন্নত জীবনযাত্রার জন্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য। মন্ত্রী বলেন,  ‘জনগণ যাতে নিজেরাই পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করে সেজন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এ জন্য আইনের প্রয়োজন নেই।’ 

তিনি বলেন,  আগে যখন বেশি শিশু ছিল, তখন শিশুমৃত্যুর হারও বেশি ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা পাল্টে গেছে। এ জন্য জনগণের উন্নত স্বাস্থ্য সুবিধা পর্যন্ত পৌঁছানোর প্রয়োজন ছিল এবং তা করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন,  দেশের উন্নতির জন্য পরিবারকে ছোট হতে হবে। জনসংখ্যা স্থিতিশীল হতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতা ছড়িয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জিত হবে বলেও আস্থা প্রকাশ করেন তিনি।

সরকার জোর করার পরিবর্তে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতনতা এবং স্বাস্থ্য অভিযানগুলো সফলভাবে ব্যবহার করেছে বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়া।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/০২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ