কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দিল্লিতে বিরোধীদের বিক্ষোভ
ভারতের সংসদে তুমুল হট্টগোল, অধিবেশন মুলতুবি
ভারতে বৃহত্তম শিল্প গোষ্ঠী আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আজ দিল্লির সংসদভবন চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে বিরোধীরা ধর্না-অবস্থান ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। একইসঙ্গে ওই ইস্যুতে আজ বিরোধীদলীয় এমপিদের তুমুল হট্টগোলের জেরে সংসদের উভয়কক্ষের কাজকর্ম আগামীকাল (মঙ্গলবার) বেলা ১১ টা পর্যন্ত মুলতুবি ঘোষণা করা হয়েছে।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আজ (সোমবার) বিরোধী এমপিরা গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্না-অবস্থান ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময়ে তারা ‘প্রধানমন্ত্রী জবাব দিন, মোদী সরকার হায় হায়’, ‘মোদী সরকার শেম-শেম’, ‘মোদী সরকার ডাউন-ডাউন’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন এবং এ সংক্রান্ত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। বিরোধীদের পক্ষ থেকে ওই ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) অথবা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, কমপক্ষে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে আজ বিরোধীদল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোটা দেশে জেলাস্তরে এলআইসি এবং এসবিআই কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গের জরিপ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, কারচুপি করে তাদের সংস্থার শেয়ার দর বাড়িয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। ২৪ জানুয়ারি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ দাবি করেছে, এক দশক ধরে শেয়ারের দরে কারচুপি করে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। আর সেই কারণেই নাকি আদানিদের এত রমরমা। আদানিদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগও এনেছে মার্কিন ওই সংস্থা। হিন্ডেনবার্গের সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আদানি গোষ্ঠী। ধস নেমেছে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে। ১০ দিনে মোট ১১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪০১ কোটি টাকা) হারিয়েছে গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠী। সব মিলিয়ে গত একসপ্তাহে আদানিদের ক্ষতির পরিমাণ কার্যত আকাশছোঁয়া।
আজ সমাজবাদী পার্টির এমপি রামগোপাল যাদব বলেন, ‘আমরা চাই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) এবং বৃহত্তম বিমা সংস্থা লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এলআইসি) দ্বারা কেনা আদানির শেয়ারগুলো ‘জেপিসি’র মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। এই টাকা কেন দেওয়া হয়েছে, কী শর্তে দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। তাদের ওপর কার চাপ ছিল? যৌথ সংসদীয় কমিটির (‘জেপিসি’) মাধ্যমে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত জানা যাবে না, সেজন্য তদন্ত হওয়া উচিত।’
‘আরজেডি’ নেতা মনোজ ঝা এমপি বলেছেন, ‘সরকার আদানি ইস্যু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আদানি এটাকে দেশের ওপর হামলা বলে দাবি করছে কিন্তু কীভাবে? আমরা এর ‘জেপিসি’ তদন্ত চাই।’ অন্যদিকে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/৬