তৃণমূলের সর্বভারতীয় তকমা চলে গেছে
তারা সংবিধান মানে না, দলটিকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত: দিলীপ ঘোষ
বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ এমপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেছেন, ‘ওরা সংবিধান, নিয়মকানুন কিছুই মানে না। সেজন্য এই দলটাকে সম্পূর্ণভাবে ব্যান করা উচিত। প্রতীক একেবারে বাতিল করে দেওয়া উচিত।’
আজ (মঙ্গলবার) তিনি এ ধরণের মন্তব্য করেন। গতকাল (সোমবার) জাতীয় নির্বাচন কমিশন তৃণমূলের জাতীয় দলের মর্যাদা খারিজ করেছে। ওই ইস্যুতে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৃণমূলকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সারা ভারতে তৃণমূলের আসল রূপ জেনে গেছে। কোথাও ভোট দিচ্ছে না। প্রচুর টাকা খরচা করেছেন ওনারা। হাজার হাজাড় টাকা একটা ভোটের জন্য খরচ করেছেন, গোয়াতে, ত্রিপুরায় বা মণিপুর, অসমে। কোথাও ভোট পাননি। স্বাভাবিকভাবে তাদের ভোটের হার কমে গেছে। সেজন্য সর্বভারতীয় তকমা চলে গেছে। আর এখন পশ্চিমবঙ্গেই তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন, সর্বভারতীয় পার্টি হওয়ার স্বপ্ন, দিল্লি জেতার স্বপ্ন আপাতত মুলতুবি রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোন বিশেষ কারণে যদি কোনও পার্টি তৈরি হয়, যার কোনও আদর্শ নেই, নীতি নেই, উন্নয়ন নেই। ভারতবর্ষের রাজনীতি পাল্টাচ্ছে। আগের মতো কেউ আর জাতপাত নিয়ে কেউ অন্য কোনও ইস্যুতে রাজনীতি চালানো যাবে না।’
অন্যদিকে, জাতীয় দলের মর্যাদা খারিজ প্রসঙ্গে তৃণমূলের সিনিয়র নেতা অধ্যাপক সৌগত রায় বলেছেন, ‘আমরা আইনগতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জবাব দেবো। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। এর আগেও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনেক মন্তব্য বেরিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করেছে এমন হয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে আইনের যে রাস্তা সেটা গ্রহণ করব বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূলের সিনিয়র নেতা অধ্যাপক সৌগত রায়।
নির্বাচনি আইন অনুযায়ী জাতীয় দল হতে গেলে তিনটি শর্তের কমপক্ষে একটি পূরণ করতে হয়। প্রথমত, লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। দ্বিতীয়ত, সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ৩টি রাজ্য থেকে কমপক্ষে ১১টি আসন (মোট আসনের ২ শতাংশ) জিততে হবে এবং আগের জেতা আসনের মধ্যে অন্তত চারটি পুনরায় জিততে হবে। তৃতীয়ত, অন্তত চারটি রাজ্যে ‘রাজ্য দলের’ মর্যাদা পেতে হবে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল ও মনিপুরে রাজ্য পর্যায়ের দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় তৃণমূলকে জাতীয় দলের মর্যাদা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সে সময় লোকসভা ভোটে ৪টি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘রাজ্য দল’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল তৃণমূল। মাত্র ৭ বছরের মাথাতেই দলটি সেই মর্যাদা হারাল।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/১১