মে ২৪, ২০২৩ ১০:২৯ Asia/Dhaka
  • ভারতে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করবে তৃণমূলসহ অন্য বিরোধী দল

ভারতে নয়া সংসদ নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করবে আম আদমি পার্টি (আপ), তৃণমূলসহ অন্য বিরোধী দল।

নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ২৮ মে সংসদের নয়া ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিরোধীদের দাবি, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে দিয়ে নতুন ভবনের উদ্বোধন করাতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতিকে অপমান করার অভিযোগ তুলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করার কথা বলেছে বিরোধী বিভিন্ন দল।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ অভিযোগ করেছেন সরকার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে অনুষ্ঠান থেকে দূরে রেখে সমগ্র ‘আদিবাসী সম্প্রদায়’কে অপমান করেছে। তিনি বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, যিনি সাধারণ প্রেক্ষাপট থেকে উঠে এসে এখানে পৌঁছেছেন, তাকে কেন অপমান করা হচ্ছে? অপমান কী ঘটছে কারণ তিনি আদিবাসী সমাজ থেকে এসেছেন সেজন্য, নাকি তার রাজ্যে (উড়িষ্যা) কোনো নির্বাচন নেই? কংগ্রেস এই অনুষ্ঠান বয়কট করবে কী না জানতে চাইলে বল্লভ বলেন, সঠিক সময়ে একটি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।   

ভারতের নতুন সংসদ ভবন

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি জানিয়েছে, তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না। তৃণমূলের রাজ্যসভার এমপি ডেরেক ও'ব্রায়েন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেছেন, সংসদ কেবল একটি নতুন ভবন নয়। এটি প্রাচীন ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, নজির এবং নিয়মের সাথে একটি স্থাপনা। এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি। প্রধানমন্ত্রী মোদী এটা বোঝেন না। তার জন্য রোববার নতুন ভবনের উদ্বোধন শুধু আমি এবং আমার নিজের সম্পর্কে। তাই আমাদেরকে এসব থেকে দূরে রাখুন। 

সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা জানিয়েছেন যে তার দল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না।

সিপিআই-এম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআই-এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এবং এখন এর উদ্বোধনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে উপেক্ষা করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন৷ 

তৃণমূল নেতা সৌগত রায় এমপি বলেছেন, আমি তথ্য পেয়েছি যে আমাদের রাজ্যসভার এমপি ডেরেক ও'ব্রায়েন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেছেন, তৃণমূল নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী নয়, রাষ্ট্রপতির সংসদ উদ্বোধন করা উচিত। এটা সংবিধান পরিপন্থী।

শিবসেনা’র একাংশের নেতা সঞ্জয় রাউত

শিবসেনা’র একাংশের নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন,  ‘প্রথমত, একটি নতুন সংসদ ভবনের প্রয়োজন ছিল না, কারণ বিদ্যমান সংসদ ভবনে আরও ১০০ বছর কাজ  করা যেত। রাজনৈতিক লোভ নয়াদিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উচ্চাভিলাষী সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পকে চালিত করেছে৷ রাষ্ট্রপতি সংসদের প্রধান এবং গণতন্ত্রের অভিভাবক। রাষ্ট্রপতির উচিত নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধন করা। প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার প্রটোকলে পরে হলেও নির্বাচনের জন্য এটা করা হচ্ছে।’

বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি বলেছেন,  ‘আমাদের ইতিহাসে এমন কিছু ঘটনা আছে যখন আমাদের সকলের একত্রিত হয়ে কিছু উদযাপন করা উচিত। একইভাবে সংসদও উদযাপনের উপলক্ষ। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের আগস্টে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সংসদ অ্যানেক্সি উদ্বোধন করেছিলেন এবং ১৯৮৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সংসদ লাইব্রেরি উদ্বোধন করেছিলেন। আপনার (কংগ্রেস) সরকারের প্রধান যদি সংসদের উদ্বোধন করতে পারেন, আমাদের সরকার প্রধান কেন তা করতে পারবেন না?

কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি

পাল্টা জবাবে কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিভ্রান্ত করার এবং অজুহাত দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি এক বার্তায় বলেন,  সংসদ অ্যানেক্সি, লাইব্রেরি এবং নয়া সংসদ ভবনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।  

কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ এমপি বলেছেন, অবশ্যই, একটি অ্যানেক্সি  এবং একটি ভবন উদ্বোধনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া এ ভাবে সামনে আসায় সব মিলিয়ে কার্যত তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/২৪

ট্যাগ