সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩ ২০:০৮ Asia/Dhaka
  • ভারত-কানাডা দ্বন্দ্বের মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠক

খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা নিয়ে ভারত-কানাডা বিবাদের মধ্যে ওয়াশিংটনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে বৈঠক করেছেন।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) ওই বৈঠক হয়। কিন্তু ভারত-কানাডা বিবাদ প্রসঙ্গে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়েছে কী না সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি। দু’দেশের শীর্ষ মন্ত্রীদের এই বৈঠক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বর্তমানে পাঁচ দিনের সফরে আমেরিকায় রয়েছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে বৈঠকের পর  ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে জুনে প্রধানমন্ত্রী মোদির আমেরিকা সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈশ্বিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। খুব শিগগিরি আমরা একটি ২+২ বৈঠক করব।

অন্যদিকে, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এক বার্তায় বলেন, তিনি এস জয়শঙ্করকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে স্বাগত জানাতে পেরে খুশি হয়েছেন। গত সপ্তাহে আমরা খুব ভালো  আলোচনা করেছি। অবশ্যই জি ২০সহ অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জয়শঙ্কর ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন টাইয়ের সাথেও আলোচনা করেছেন। তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়েও গভীরভাবে আলোচনা করেছেন।   

এর আগে,  গত (মঙ্গলবার) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি  অশ্রদ্ধা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয়। কানাডার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কিছু দেশ এজেন্ডা ভিত্তিক প্রচার করার চেষ্টা করে যা প্রত্যাশিত নয়।

জয়শঙ্কর বলেন, রাজনৈতিক সুবিধা, সন্ত্রাস, চরমপন্থা এবং সহিংসতার বিষয়ে আমাদের সুবিধাজনক অবস্থান নেওয়া উচিত নয়। তার বিবৃতিতে, রাজনৈতিক সুবিধা অনুযায়ী অবস্থানের অর্থ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বক্তব্যের সাথে সম্পর্কিত ছিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কানাডায় বসবাসকারী খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে অভিযুক্ত করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে ওই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে তীব্র কূটনৈতিক টানপোড়েন চলছে।

ভারতের বিরুদ্ধে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্তব্যের পরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন, তা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’ এই পরিস্থিতিতে ট্রুডো বিতর্ক নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

জয়শঙ্কর-ব্লিঙ্কেন বৈঠকের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন,  ‘একটি বিষয় ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করেছি, (হরদীপ সিং) নিজ্জরের হত্যায়   কানাডার তদন্তে সহায়তা করতে আমেরিকা ভারতকে উৎসাহিত করেছে।’ 

অন্যদিকে, ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন,  ‘কেউ যদি কোনও প্রাসঙ্গিক নথি বা তথ্য দেয়, তা হলে সব সময়েই তা তদন্ত করে দেখতে রাজি।’  এর পাশাপাশি নিজ্জর হত্যা নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন’  বলে মন্তব্য করেছেন এস জয়শঙ্কর।   

এবার অবশ্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তার অবস্থান পরিবর্তন করে  নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘বিশ্বের  অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারত আত্মপ্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত এখন উদীয়মান শক্তি। কানাডা চায় তাদের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে গত বছর আমাদের বৈঠকও হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রুডো।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ