৬ ডিসেম্বরের স্মরণে কোলকাতায় তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সংহতি দিবস পালন
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের পক্ষ থেকে আজ কোলকাতায় ৬ ডিসেম্বরের স্মরণে সংহতি দিবস কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবক নামধারী উগ্রহিন্দুত্ববাদীরা প্রকাশ্য দিবালোকে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েকশো বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। সেই দিনটিকে মনে রেখে আজ (বুধবার) তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেল কোলকাতার মেয়ো রোডে সংহতি সমাবেশ করেছে। উত্তরবঙ্গ সফরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সশরীরে ওই সভায় আসেননি। তার মোবাইল ফোনে দেওয়া বক্তব্য উপস্থিত সবাইকে তা শোনানো হয়।
সংখ্যালঘু মুসলিমদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘অনেক কুৎসা হচ্ছে। তাতে কান দেবেন না। আপনারা বিভক্ত হলে বিজেপির লাভ। আজকে শপথ নেওয়ার দিন। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন।’
অন্যদিকে, আজ কার্শিয়াং যাওয়ার পথে দমদম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিজেপিকে টার্গেট করে তাদের বড় পকেটমার বলে কটাক্ষ করেন। মমতা এসময়ে বিজেপির দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিকে ভাঁওতা বলে মন্তব্য করেন। মমতা বলেন, ‘যারা পকেটমার তারা সবচেয়ে বেশি পকেটমার-পকেটমার বলে চিৎকার করে। ওরা সবচেয়ে বড় পকেটমার! আজেকে দেশের মানুষের পকেট সবচেয়ে বেশি কেটেছে ওরা। তিনি এ সময়ে নোট বাতিল প্রসঙ্গ এবং সবার অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন। ওরা নির্বাচন আসলে কিছু কথা বলে তারপর ভাঁওতা দেয় বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ বাবরি মসজিদের শাহাদাত বার্ষিকীতে পশ্চিমবঙ্গের আইএসএফ বিধায়ক ও ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন, ‘স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায় বাবরি মসজিদের শাহাদাত।’
পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম এক বার্তায় বলেছেন, ‘ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে, অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।’ ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২, কালা দিবস। তিনি এই দিনটিকে ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, আজ তৃণমূলের মুখপত্রে বলা হয়েছে, ‘৬ ডিসেম্বর ভারতের ইতিহাসে, ভারতীয়দের জীবনে এক কালো দিন। ১৯৯২ সালে এক শ্রেণির হিংস্র মানুষের শাবল, গাঁইতির আঘাতে ভেঙে পড়েছিল চারশো বছরের পুরোনো বাবরি মসজিদ। কারা যেন বিশ্বাস করেছে সেখানে মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছে। এই বিশ্বাসের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। ভারতের মতো একটা গণতান্ত্রিক, বহুত্ববাদী দেশে এমন জোরজবরদস্তি অসহনীয় অপরাধ।’
‘সেদিন ভারতের গণতান্ত্রিক, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সমস্ত মানুষের হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। ভারতের বহু সযত্নে গড়ে তোলা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সৌধগুলো মড়মড় করে ভেঙে পড়েছিল। সারা পৃথিবীর কাছে ভারতের মাথা অবনত হয়ে গিয়েছিল। সারা পৃথিবী দেখেছিল ভারতে এখনও পঞ্চদশ শতাব্দীর পৈশাচিক ঘটনাগুলো কেমন ভাবে ঘটে চলেছে। এত বড় আঘাত আমাদের সংবিধানের উপর কোনওদিন আসেনি’ বলেও তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় মন্তব্য করা হয়েছে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।